সুরটা কেটে গেছে হুট করেই। (আম্মাআআ)
ব্লগে এখন অনেকটাই অনিয়মিত। যাই আসি, যাই আসি। আগের মত সারাদিন পড়ে থাকা হয় না। লিখতে খুব একটা ইচ্ছে করে না। কিন্তু অন্যদের লেখা পড়তে খুব ভাল লাগে।
মাঝে মাঝে দু একটা অলস দিনে সারাদিন বসে থাকি কম্পিউটারের সামনে। গান শুনতে শুনতে চোখ বু লিয়ে নেই প্রিয় ব্লগারদের লেখায়।
তেমনি এক শুক্রবারে হুট করে পড়তে শুরু করলাম জেবতিক আরিফের আমার মোবাইল বেলা। আমার ধারণা ছিল, উনি শুধু রাজনীতি বিষয়ে লেখেন।
রাজনীতি আমি ভাল বুঝি না, যেটুকু বুঝি সেটুকু প্রকাশ করতে পারি না। যাও প্রকাশ করি, সেটা হয় - যা প্রকাশ করতে চেয়েছি তার উল্টো প্রকাশ। ফলে অনেকের সাথেই ভুল বোঝাবুঝি হয়। তাই ভদ্রলোকের লেখা সযতনে এড়িয়ে যেতাম।
আমার মোবাইল বেলা পড়তে গিয়ে অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাচ্ছে ।
সারাদিন বসে ওনার রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, রম্য সব লেখা পড়ে ফেললাম।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের কিছু লেখা আছে। আমি মাঝে মাঝে পড়ি আর গদ্যের জাদুতে এমনি এমনি হাসি। জেবতিক আরিফের রম্যের ধরণে এমন একটা সহজিয়া সুর আছে।
মানুষ তার থেকে জ্ঞানী বা বড় কোনো মানুষের নির্বুদ্ধিতায় কখনও মজা পায় না। দুজন মানুষ - দুজনেই একই ধরণের বোকামী করল। দুজন মানুষের মধ্যে একজন জ্ঞান গরীমায় আমাদের থেকে উঁচুতে। আমরা কিন্তু তার বোকামিতে আদৌ মজা পাব না। জেবতিক আরিফ খেলেন হিউমান সাইকোলজির এই সূক্ষ্ম বিষয়টাতে। প্রথমেই তিনি পাঠকের কাছে ছোট হতে চেষ্টা করেন। কম্পিউটার বিষয়ক লেখা হলে প্রথমেই নিজেকে কম্পুকানা মানুষ হিসেবে ঘোষণা দেন। পাঠকও মনে মনে কানা মানুষটিকে নিয়ে হাসির প্রস্তুতি নিয়ে ফেলে।
আলাদা করে রম্য শিরোনাম দেয়া বা না দেয়ায় তার লেখার রম্যভাবের ঊনিশ বিশ হয় না। রম্যটা তার মজ্জাগত।
তার একটি সিরিয়াস লেখা -দণ্ড। এই মুহূর্তে মনে করতে পারছি না, বোধহয় ইয়াজুদ্দিনের আত্মসমর্পণ ভাষণের পর পর লিখেছিলেন। লেখাটির সূক্ষ্ম স্যাটায়ার আমাকে মুগ্ধ করেছিল।
আর ইউনিকোড নিয়ে তার লেখাগুলো যত পড়ছি, তত হাসছি। ইউনিকোড নিয়ে এত সহজ সাদামাটাভাবে এত মজার মজার সব বিষয় তিনি আনলেন!
কলেজে যখন পড়ি, তখন থেকেই আমার একটা অভ্যাস (অভ্যাস না বলে বদভ্যাস বলাই বোধ হয় ভাল), কেউ বিন্দুমাত্র রসিকতা করার চেষ্টা করলে আমার দাঁতমুখ শক্ত হয়ে যায়। আমি দাঁতমুখ শক্ত করে অপক্ষা করি কখন রসিকতাটা শেষ হবে। শেষ হবার সাথে সাথেই ফ্লপ দেবার চেষ্টা। অধিকাংশ সময়ই মূল রসিকতার চেয়ে ফ্লপটাই বেশি হিট করে । জেবতিক আরিফের বেলায় তেমনটি করার চেষ্টা করাটা বড় ধরণের গাধামী হবে। তার সূক্ষ্ম হিউমার লা জবাব!
জেবতিক আরিফকে সালাম!
[ প্রিয় লেখকদের নিয়ে মুগ্ধ পাঠক সিরিজটি দীর্ঘায়িত করার ইচ্ছা রইল। এজন্য শিরোনামে মুগ্ধ পাঠক - ১ দিলাম।]
[বানান ভুলের জন্য লেখকের ইউনিকোডে অনভ্যস্ততা দায়ী]