somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

____ছেঁড়া খাম______

১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ৩:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ইরা শহরের পথ খুব একটা ভাল চিনে না।

নতুন শহরের বুকে ক্ষুদ্র ইরা এখনো একটা চাকুরী খুঁজে বেড়াচ্ছে। পরিবারের বড় সন্তান ইরা। ছোট বোন আর ভাইয়ের দায়িত্ব এখন তাকে নিতে হয়েছে। এখনো অনার্স শেষ হয়নি। বাবার খুব আদরের মেয়ে ছিলো ইরা। এতো বড় মেয়ে তবুও মাঝে মাঝে বাবার সাথে ঘাড়ে চেপে ঘুরে বেড়াতো। যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে। ইরার বাবা ছিলো একজন ব্যবসায়ী। একটু রাজনীতি করতো। কিন্ত সেটাও মেয়েদের জন্য। কারন বখাটেরা যেন ইরা এবং তার বোন কে বিরক্ত করার সাহস না পায়। কিন্ত,,মাস দুই আগে কারা যেন ইরার প্রিয় বাবার দেহ টা রক্তাক্ত করে বাসার সামনে ফেলে রেখে যায়।

তারপরে কি জানি কি হলো,একদল লোক এসে পাওনাদার দাবি করে ব্যবসা টা হাতিয়ে নিয়েছে। বাবার কথা ভাবতেই ইরার চোখ ভিজে যায়। গাইবান্ধা জেলার মেয়ে ঢাকায় এসে খুব একটা পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারলো না। দুই মাস হয়েছে চাকুরী পেয়েছে। রমযান মাস চলে আসলো। ইরা কে সাফায়েত নামে একটা ছেলে পছন্দ করতো। কিন্ত ইরা সুমন নামে একজনকে ভালবাসতো বলে কখনো সাফায়েত কে পাত্তা দেয়নি। ইরা ঢাকায় আসার প্রধান কারন সুমন। সুমন এখানে ইরা কে একটা চাকুরী দিয়েছে। আর তারা একে অপরকে খুব ভালবাসে। এই সুবিধায় স্বামী স্ত্রীর পরিচয়ে তারা দুজনেই একসাথে থাকতে আরম্ভ করেছিলো। প্রতিবছর ঈদের বাবা অনেক কিছু কিনে দিতো। যেহেতু এবার বাবা নেই,তাই নিজের চাহিদা দুরে রেখে ছোট ভাই বোনের জন্য অনেক কিছু নেওয়ার ইচ্ছা পোষন করেছিলো সুমনের সাথে। কিছু টাকা চেয়েছিলো, কিন্ত সুমন অন্য খরচের কথা বলে আর দেয়নি। সুমন এক সময়ে ইরার বাবার সাথেই রাজনীতি করতো। ইরার বাবার মৃত্যুর পর, সুমন নিজের রক্ষায় ঢাকায় আসে।
'
ঈদের আর তিনদিন বাকি। ইরা বাসায় মায়ের কাছে ফিরে যাবে। ঈদের কেনাকাটা শেষ। রাতে রওনা দিলো,অফিস শেষ করে। ট্রেনে একাই যাচ্ছিলো ইরা। ইরা হঠাৎ একটু ফ্রেশ হওয়ার প্রয়োজন বোধ করলো। পাশের বগি টা ছিলে কেভিন বগি। ইরা যখন টয়লেটে প্রবেশ করবে কিছু ছেলে ট্রেনের দরজা খুলে সিগারেট সেবন করতে ব্যস্ত ছিলো আর খুব হাসাহাসি করছিলো। কিন্ত ইরা কে দেখার পর তারা চুপ হয়ে গেলো। ইরা ফ্রেশ হয়ে বের হতেই তারা ইরা কে ঘিরে ধরলো। তাদের ভিতরে একজন ইরা কে পিছন থেকে জড়িয়ে পাশের বগিতে টেনে নিয়ে গেলো। ইরা বাসায় ফিরে গেলো। রাতের কথা কাউকে বললো না। ঈদের খুশি শেষ। ইরা এখনো সেই স্মৃতি ঘিরে আছে। ঈদের দিন বিকেলবেলা ইরা সুমন কে ফোন দিয়েছিলো। সেদিনের দুর্ঘটনা সব বলেছিলো। কিন্ত সুমনের পরিবার এমন মেয়ের সাথে কখনো তাকে মেনে নিবে না। সুমন যোগাযোগ করতে বারন করে দিয়ে ছিলো। ইরা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলো,কিন্ত পরিবার টা ধ্বংস হয়ে যাবে একারনে সে মুখ বুজে সয়ে নিলো সব।

সত্যিকারের ভালবাসা যখন ইরার সামনে প্রমাণিত তখন আর কিছুই করার নেই তার। ভালবাসার নামে শরীর ভোগে এই সমাজে কিছুই হয় না। ভালবাসায় শরীর ভোগ এর মানে আধুনিক সভ্যতা। যে মেয়ে যত আধুনিক তার মর্যাদা সমাজে তত বেশি। কিন্ত যে মেয়ে কিছু পিচাশ দ্বারা সব হারায়,তখন সে সমাজের চক্ষে নষ্টা মেয়ে বা পতিতা হয়ে যায়। ইরা গ্রামের পুকুরপাড়ে বসে কথা গুলো কে ভাবতেই কেঁদে দিলো। নিজের ভুল বুঝতে পারলো। আস্তে আস্তে গ্রামের সবাই এখন ইরার সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনা জেনে গেছে। ধিক্কার জানাচ্ছে আর ঘৃণার চোখে দেখে ইরাদের। ইরা পুকুরপাড়ে বসে কাঁদছিলো। অনুমতি নিয়ে সাফায়েত পাশে বসলো। হাত দিয়ে চোখ মুছে দিলো ইরার। আর সে ইরার ব্যাপারে সব জেনে এখানে এসেছে,শুধু মাত্র তার ভালবাসার মানুষের বিপদে তার পাশে থাকতে। সাফায়েত ইরা কে আবারো এগিয়ে যাবার উৎসাহ দিলো। সব ভুলে এগিয়ে যেতে আগ্রহী করলো। আর সাফায়েত ইরার হাত ধরে ইরা কে অচেনা পথ পাড়ি দেওয়ার শপথ করলো।

সাফায়েতঃ তুমি চাইলে তোমার মাথা,আমার কাধে রাখতে পারো।
গল্প :-Nezam U Khan

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:১২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১০





যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×