ভালোবাসাতে ও ব্যাক্তিগত স্বার্থ থাকে। স্বার্থ শেষ হলেই যে যার মতো কেটে পড়ে।
ব্রেক আপ ট্রেকাপ জাস্ট সময়ের খেলা মাত্র!!
.
সোজা কথায় :- খেল খতম পইছা হজম (খাওয়া শেষ বেঈমানি শুরু)
_________________________________________________________
কিছুদিন আগে ব্রেকআপ হয়েছে এমন ছেলেটি কিংবা মেয়েটি মাঝরাতের আগে যে ঘুমায় না তা আমার ভালোই জানা!
আপনি যদি এমন কাউকে জিজ্ঞেস করে বসেন,কেমন আছো??
তাদের উত্তর বেশিরভাগই হবে;আছি বেশ!
.
নর্থ সাউথে চার বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে যে মেয়েটি প্রত্যেকটা দিন বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে সেই ফুর্তিতে কাটিয়েছে,দেড়টায় বাড়িতে ফিরেই মা’য়ের সাথে কৈফিয়তে লেগে যেত!
যে কখনো মনের ব্যাথা কি বুঝতো না,না বুজতো ফিল্মের ভেতর কান্নায় ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া চোখের ভাষা!
.
?
সে মেয়েটি এমনিই এমনিই বুকশেলফ হুমায়ূন স্যারের উপন্যাসে ভর্তি করে রাখে নি;মোবাইলে অঞ্জন দত্তের ওল্ড গানের কালেকশন এমনি এমনিই রাখে নি।
উপন্যাসের কথা,গানের এক একটা শব্দ মেয়েটিকে হইতবা শান্তনা দেয় বলেই এতো ভক্তি দেখায় সে এগুলোর প্রতি।
স্যারের বই বুকে জড়িয়ে রেখে ঘুমায়;দরকার হলে একদিনের আহার বাদ দিবে তবুও দিনের শুরুতে হুমায়ূনের নতুন বই একটা চাইই চাই।
অঞ্জন দত্তের গানের সাথে এমনিতেই সুর তুলছে না;উনার গান নিশ্চয় তার ব্যাথা ভেজা মনের ভেতর একটুখানি হলেও প্রশান্তি দিচ্ছে।
প্রিমিয়ারে অর্ধেক কোর্স শেষ না হতেই ছেলেটি খামাখা সিগারেট হাতে নেয় নি!
জ্বলে পুড়ে শেষ করে দিচ্ছে ভেতরটা;তবু বলছে না যে আমার এই অবস্থার জন্য দায়ী-“অমুক কেউ”।
কতটা দারুণ না মানুষগুলো??
নিজে শেষ হয়ে যাবে তবু কোনোমতেও স্বীকার করবে না যে-সে নষ্ট হওয়ার পেছনে সম্পূর্ণ দায়ী কারো অবহেলা,কারো চরম প্রতরণা।
.
যাকে নিয়ে সে ওয়াসার রোডে প্রায় দাড়িয়ে থাকতো ক্লাস বাদ দিয়ে!
একদিন এমনও হয়েছিল যে ছেলেটার হাতে টাকা ছিল না আর ওই মানুষটি আবদার করে বসলো-আমি এতো কথা বুঝি না,তুমি আমাকে ভি.আই.পি থেকে মার্কেটিং করে দিবা!
ছেলে কোনো চিন্তা ছাড়াই শর্টকার্টে বলে দিলো;অবশ্যই করে দিবো!
অথচ সে একবারও ভাবলো না টাকা কই পাবে?? তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হল ওই মানুষটার হাস্যজ্বল চোখের জ্বলজ্বল হাসি আর তার জন্য অবাধপূর্ণ ভালোবাসা।
কয়েক বছরের রিলেশনে মানুষটা অন্যের হয়ে যায়;অথচ একদিন যার জন্য মার্কেটিংয়ের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে একটা অশুদ্ধ কাজ করে ফেলেছিলো।
.
বার বার লাগাতার ধোঁকা খাওয়ার পরেও ওই মানুষগুলো ওই অযোগ্য মানুষদেরই ভালোবাসবে;গণিতের সুত্র পাল্টে যাক কিংবা সূর্য উদয় হওয়ার দিক পাল্টে যাক আর যা না হবার তা হওয়ার সলিট সত্ত্বেও।
.
ভদ্র পরিবারের অনেক ছেলেই এমনি এমনিই বদ্ধ ঘরের এক কোণায় সিগারেট জমিয়ে রাখে না;হটাৎ রাতে যখন ওই মানুষটার কথা মনে পড়ে যায় বুকটা কাঁপে ব্যাথায় তখন কয়েকটা টান দিলে ব্যাথা কমে সে জন্যেই জমিয়ে রেখেছে।
এমনি এমনিই বালক মোবাইলে ছ্যাঁকা সং নামে ফোল্ডার রাখে নি;ওই ইমোশনাল গানগুলো শুনলে বালক পুরনো স্রিতি ভুলে থাকার আস্থা পায় তাই রেখেছে।
প্রত্যেকটা জায়গায় সবার ব্যাক্তিগত স্বার্থ রয়েছেই;যারা বলেন যে-আমি স্বার্থপর নই! নিজের জীবনের খুঁটিনাটি ঘটনাগুলো নিয়ে হালকা ভাবুন দেখবেন সবখানেই ইঞ্চিপরিমাণ হলেও স্বার্থপরতার অস্তিত্ব মেলানো আছে।
এমনিই এমনিই কিছু হয় না!
এমনকি যে বলছে-“তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না”!
“হাত কেটে আপনার নাম লিখেছে”!
“কিচ্ছু খাচ্ছে না পুরো দিনজুড়ে”!
তার পিছনেও রয়েছে একটা স্বার্থ আর সেটা হচ্ছে যে কোনো বিনিময়েই হোক আপনার ভালোবাসা আদায় করা।
ভালোবাসাও একটা ব্যাক্তিগত স্বার্থ।
তন্ময় তনু
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৪