সম্পদের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার প্রশ্নে নারী-পুরুষের সমান অধিকার দেওয়ার বিধান বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। 'নারী উন্নয়ন নীতি ২০১০' নামে খসড়াটি ইতিমধ্যে চুড়ান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) বাস্তবায়নসহ ১৯৯৭ সালের নীতিমালার প্রায় সব বিষয় নতুন নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খুব শিগগির মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য এটি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে আমাদের সূত্র। ইতিমধ্যেই সরকার 'পারিবারিক সহিংসা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০' মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় উত্তরাধিকার বিষয়টিও পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালের নীতিমালার ধারা অনুযায়ী উত্তরাধিকারের বিষয়টি নতুন নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো সম্ভব হবে বলে প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে এটি কখন এবং কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নারী উন্নয়ন-সংক্রান্ত সংবিধানের সংশ্লিষ্ট দিকনির্দেশনার আলোকেই ১৯৯৭ সালে এই নীতিমালা তৈরি করা হয়েছিল। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার-২০০৮-এ নারীর ক্ষমতায়ন, সম-অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করতে ১৯৯৭ সালের নারী উন্নয়ন নীতিমালা পুনর্বহাল করার কথা বলা হয়েছিল। ইতিপূর্বে ১৯৯৭ সালে নারী-পুরুষের উত্তরাধিকার সম্পত্তি সমান পাওয়ার নীতিমালা গ্রহণ করার পর বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ১৯৯৭ সালের নারী উন্নয়ন নীতিমালার সংশোধনী এনে ২০০৪ সালে নতুন করে নীতিমালা ঘোষণা করে। জোট সরকারের নীতিমালায় 'উত্তরাধিকার সম্পদ' কথাটি বাদ দেওয়া হয়েছিলো। তত্তাবধায়ক সরকারের সময় পুনরায় এই ধারাটি যুক্ত করার চেষ্টা করা হলে মুসলমানদের প্রতিবাদের মুখে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত খতিব মুফতি মুহাম্মদ নুরুদ্দীনকে প্রধান করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করতে একটি কমিটি করতে বলে। এ কমিটি ২০০৮ সালের নীতিমালার ১৫টি ধারা কোরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী বলে মন্তব্য করে। এর মধ্যে সিডও বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত ধারাটি বাতিলের সুপারিশ করেছিল কমিটি। সিডওয়ের অনেক ধারা মুসলিম উম্মাহর বিশ্বাস, চিন্তাচেতনা ও সংস্কৃতিবিরোধী বলে উল্লেখ করা হয় 'খতিব কমিটি'র প্রতিবেদনে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব অধ্যাপক মাওলানা সালাহউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'বিষয়টি সেনসিটিভ (স্পর্শকাতর)। তাই এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। পরে আলাপ করব।'
পরে কখন আলাপ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বিষয়টি খুবই বেশি সেনসিটিভ হওয়ায় আসলে আমি এ বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলব না।' এটি নিয়ে কোনো লেখালেখি না করাই ভালো বলে পরামর্শ দেন তিনি। (সূত্র- কালের কণ্ঠ, ৭ মার্চ, ২০১০)
উল্লেখ্য পৈতৃক সম্পত্তিতে নারীর অধিকার বিষয়ে শরিয়া আইনে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে, যা এখনো কার্যকর। এ ছাড়া কুরআন শরিফে ছেলে-মেয়ের অধিকার সংক্রান্ত যাবতীয় দিকনির্দেশনা রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীকে বেশি অধিকার দেওয়া হয়েছে, আবার কোথাও কোথাও পুরুষকে বেশি অধিকার দেওয়া হয়েছে।
ইহা একখানা কপিপেস্ট প্রযোজনা। সুত্র: Click This Link