সবুজ গালিচা বিছানো বিজন মাঠ প্রান্তরে
উড়ছিল বাধনহারা উচ্ছল ফড়িঙ কন্যা।
বিশ্রামলাগি কাশবনের গোড়ায় বেধেছিল বাসা
দুরন্ত কিশোরের পদভারে দলিত হয় সে আশা ।
কাশ বনে ছড়ানো নীল খামের ছেড়া টুকরা
সে সাথে চপলা বালার খিলখিলানী হাসি
থামিয়ে দেয় লাজুক ফড়িঙ কন্যার মাতামাতি
সবুজ ঘাসের বুকে পারেনা হতে নৃত্য রত ।
ঘাসের বুকে ঝিমিয়ে পরা ফড়িঙ কন্যা
আশায় থাকে অভ্রদের নীলখামের চিঠির
নিয়ে আসবে যা শরতের শিউলী ঝড়া বাতাস
নৃত্যের তালে মত্ত হবে মাতাল করা ঘ্রানে ।
অপেক্ষার প্রহর শেষে নীল খামের আগমনে
সবুজ ঘাসের বুকে নৃত্য রত ফড়িঙ কন্যা
উড়ে ফুল থেকে ফুলে কুড়ায় আর ছড়ায়
মধুমাখা সৌরব রেনু ফুটানো রঙ্গিন ফুলে ।
শরত অবসানে শীতের মলিনতায় মৃয়মান প্রান্তর
হরিত ঘাসের বুকে নেতিয়া পরে ফড়িঙ কন্যার ডানা
অপেক্ষার প্রহর হয়না শেষ কাটেনা অন্তহীন দিন
শিশির সিক্ত দুর্বাঘাস ও অশোকবনে ফুটেনা ফুল ।
ফড়িঙ কন্যা কেঁদে কয় ইচ্ছে করেনা বেঁচে থাকি
আসবে কখন সে, বুকের ভিতর তুশের আগুন জ্বলে
আর জীবন নিবু নিবু, মনের অনল করছে দহন
আর কতকাল পুড়লে বুজবে বসন্ত, তোকে ডাকি ।
অবশেষে ফাগুনের হাওয়ায় জাগে বসন্তদোলা
ঘাসের বুকে ফুটে ফুল আমের বনে ধরে মুকুল
নিবে যায় জ্বালা, ফড়িঙ কন্যা উড়ে ঘাসবনে
ফুল্ল সুন্দরীর বেশে নৃত্ত করে মুক্ত বিহংগ সনে ।
নেচে গেয়ে কখন যে কেটে যায় প্রমত্ত বসন্ত বেলা
গ্রীস্মের খরতাপে পুড়ে রংগীন পাখা সাংগ হয় খেলা
রিক্ত বুক সিক্ত করতে চায় বৃষ্টির ফোটায় ফোটায়
চেয়ে থাকে দিগন্তে সবুজ শ্যামল মাঠের আশায় ।
অবশেষে বৃষ্টি আসে নিয়ে লীলায়ীত লঘুনৃত্য নদী
বক্ষে ঢেলে দেয় সুখ জাগানিয়া যৌবনের দুরন্ত জলদি
মিথ্যা বাঁধা বন্ধনের ধংস উল্লাশ ঝড়ে পড়ে তার বুকে
সকল বিঘ্ন সকল আগল ভেঙ্গে করে স্পন্দন পাগল ।