পত্রিকান্তরে জানলাম যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে ১৫জন কিশোর নিজেদের শরীর কাচের টুকরো দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে । তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে । মাত্র তিন মাস আগে টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে ২০জন কিশোর একই পদ্ধতিতে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে
প্রতিবাদের এই প্রকাশভঙ্গী অনাকাঙিক্ষত ।কারাকর্তৃপক্ষের উচিত ছিল এই কিশোরদের পাশে দাড়িয়ে বুদ্ধিমত্তার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা ।
কিশোরদের দাবিদাওয়াকে সংবেদনশীল ভাবে দেখা । এই কিশোররা তো অন্য কোন গ্রহ থেকে আসে নাই । এরা আমাদের সমাজেরই অংশ । এটি কোন কারাগার নয় । শিশুকিশোর সংশোধনাগার । এদের সংশোধন করা রাষ্ট্রের কর্তব্য । কর্তৃপক্ষের কাজ ।
কিন্তু কি ভাবে ?
এরা সবাই পারিবারিক / পারিপার্শ্বিক / মানসিক সমস্যার কারণে এই অপরাধজগতের সাথে জড়িয়ে পড়েছে । মানসিক রোগ যেমনConduct Disorder,ADHD,Substance Abuse (drug addiction), Adjustment Disorder ,Mental Retardation,Depression
প্রভৃতি রোগে ভুগতে পারে ।
যে ৬জন কিশোরকে টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছিল তাদের ২জন বর্তমান ঘটনার সাথে জড়িত বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে । এদের সকলেরই মানসিক অবস্থার পরীক্ষানিরীক্ষা করা প্রয়োজন। শিশুকিশোর অপরাধীদের জেলখানায় রেখে তাদের প্রতি বিশেষ কোন ব্যবহার/ ব্যবস্থা নেয়া বা গুরুত্ব দেয়া হয় না ।
প্রায়শই তাদের সাথে বয়স্কদের মতই আচরণ করা হয় । সমাজে বসবাসরত শিশুকিশোদের মতই এই জুভেনাইল ডেলিকুয়েন্টদের স্বাভাবিক কিছু চাহিদা থাকে । উঠতি বয়স । এ সময়ে যথেষ্ট শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে । খাদ্যের চাহিদা বেড়ে যায় । খেলাধূলা,টিভি দেখা ,বয়সজনিত দুষ্টমি করা স্বাভাবিক । ক্ষুধাপেটে কোন কিছুই ভাল লাগার কথা নয় । দুষ্টুবুদ্ধি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে । এদের মধ্যে যে অনৈতিক বোধগুলো রয়েছে তা সুস্থদিকে ধাবিত করার জন্য প্রয়োজন সুস্থ মমত্ববোধপূর্ণ পরিবেশ । যাদের সুস্থ হওয়ার / ভাল পরিবেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে থাকে তাদের আগে চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
এদের প্রত্যেকের রিস্ক ফ্যাক্টর,প্রটেক্টিভ ফ্যাক্টরগুলো পর্যালোচনা করা দরকার। এরপর প্রয়োজনে স্কুলিং এর পাশাপাশি ভোকেশনাল ট্রেনিং এর মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলা উচিত । ফলে স্বা ভাবিক জীবনে ফিরে এলে স্বস্ব কর্মে নিয়োজিত থাকবে। অন্ধকার পথে পা বাড়ানোর আগ্রহ থাকবে কম। আর যাদের মোটিভেশন কম তাদের জন্য সাইকোথেরাপী মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে ।