তোতাপাখির শব্দভাণ্ডারে ১০০+ শব্দ থাকতে পারে। Kosik নামের হাতিটি অল্প একটু কোরিয়ান ভাষা বলতে পারে। আশ্চর্য যে আমাদের সবচেয়ে কাছের প্রজাতি বানর ও শিম্পাঞ্জি কথা বলতে পারে না। তারা কেবল একটু আধটু কিচির মিচিরেই সীমাবদ্ধ থাকে। কয়েক দশক ধরেই বিজ্ঞানীরা বানরের কথা বলার অক্ষমতার জন্য কণ্ঠনালীর গঠনকেই দায়ী করছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে বানর ও কাছাকাছি গোত্রের প্রাণিগুলোর কথা বলার অক্ষমতার জন্য দায়ী তাদের মস্তিষ্ক। তাদের মস্তিষ্ক কথা বলার জন্য যথাযথভাবে গঠিত হয়নি।
গবেষণায় প্রমাণিত যে বানরের কণ্ঠনালী কথা বলতে অনেক বেশি সক্ষম যতটা আগে ভাবা হতো। বলেছেন জন এসলিঙ, একজন ভাষাতাত্ত্বিক ও ধ্বনি বিশেষজ্ঞ, ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা।
গবেষণার প্রধান নেতৃত্বদানকারী, Willium Tecumseh Sherman Fitch III, একজন বিবর্তন জীববিজ্ঞানী, বলেছেন যে, বানরেরা কেন কথা বলে না, এই প্রশ্ন ডারউইনের আমল থেকেই। ডারউইন ভাবতো মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রজাতি গুলোর মস্তিষ্ক কথা বলার জন্য উপযুক্ত নয়। কিন্তু পরবর্তীতে নৃতত্ত্ববিদরা বলেন যে প্রাণিগুলোর কথা বলার অক্ষমতার জন্য দায়ী তাদের কণ্ঠনালীর গঠন। কণ্ঠনালীগুলো যথেষ্ট নমনীয় (ফ্লেক্সিবল) না হওয়ায় প্রয়োজনীয় শব্দতরঙ্গ উৎপন্ন হয় না। বর্তমানের পাঠ্যবইগুলোতে এই কারণটিই দেয়া আছে।
ফিচ এবং তার সহগবেষক আসিফ গজনফর (নিউরোসাইন্টিস্ট@প্রিন্সটন ইউনি) বলেন যে ডারউইনই ঠিক বলেছিলেন। প্রাণিগুলোর মস্তিষ্ক অপরিপক্ব হওয়ায় তারা কথা বলতে পারে না।
তারা একটি বানরকে ট্রেনিং দিয়ে চেয়ারে বসিয়ে তার খাওয়া মুখের নড়াচড়া, কণ্ঠস্বরের বিভিন্নতা এবং ঠোটের গতিপ্রকৃতির এক্সরে ভিডিও ধারণ করে। সেটা বিশ্লেষণ করে তারা কণ্ঠের ৯৯টি ভিন্ন ভিন্ন কনফিগারেশন পায়। এর উপর ভিত্তি করে তারা একটি মডেল তৈরি করে এবং একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামে তা প্রবেশ করায়। " Will you marry me?" বাক্যটি তারা ঐ কম্পিউটার প্রোগ্রামে চালিয়ে দেখে যে বানরের কণ্ঠস্বর ফ্ল্যাট ও কিছুটা কড়কড়ে কিন্তু শব্দগুলো পরিষ্কার ও কম্প্রেহেনসিভ।
গবেষণার সিদ্ধান্ত এই যে, বানর ও তৎসদৃশ গোত্রের প্রাণিদের কথা বলার জন্য যথাযথ অঙ্গ আছে। কিন্তু মস্তিষ্কের অক্ষমতার জন্য তারা কথা বলতে পারে না। তাদের যদি মানুষের মত মস্তিষ্ক থাকতো তবে ঠিকই কথা বলতে পারতো। আসলে তাদের শব্দ উৎপাদনকারি অঙ্গ সমূহ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তাদের নেই। তাই তারা আমাদের মত বলতে পারে না।
বোঝার সুবিধার্থে লেখাটি সংক্ষিপ্ত ও সহজ করা হয়েছে। যারা ইংরেজিতে দক্ষ তারা মূল লেখাটি দেখে নিতে পারেন।
মূল লেখাটি দেখতে এনে ডুইক্কা পড়ুইন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪০