মনে করি , সে একজন রাজকুমারী
অথবা বন্দিনী সে কোনো এক নয় মাথাওয়ালা অগ্নি-উদগীরণকারী ড্রাগনের ।
দূর্ভেদ্য , দুরতিক্রম্য কোনো এক দূর্গের চূড়ার কামরাটা তার ।
আর দশটা রূপকথার রাজকুমারীর মতই
আমাদের এই রাজকুমারীও অপেক্ষায় আছে
তার স্বপ্নের রাজপুত্রের ....
যে তাকে এখান থেকে নিয়ে যাবে অনেক দূরে ...
দেবে বন্দীত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি ....
তার প্রতীক্ষায় রাজকুমারী রোজ চেয়ে থাকে জানালা দিয়ে প্রত্যেক সকালে ,
সূর্য লাল চাদর ছেড়ে মধ্য আকাশে অবস্থান নেয় ,
আবার হেলে পড়ে পশ্চিমে , আসে তারা-রা , কখনো বা চাঁদও ,
কিন্তু রাজকুমার আর আসে না ....
আসবে কি করে ? সে যে তুষারকণা আর মৎস্যকন্যাদের নিয়েই ব্যস্ত !
সময় কই তার একজন দূর্গবাসিনীর কথা ভাবার ??!!
এভাবে কেটে যায় একটি দিন .... এবং আরেকটি দিন ...
এবং অনেকগুলো বছর ...
রাজকুমারীর প্রতীক্ষা সরোবরের পানিও আর আগের মত স্বচ্ছ নেই ....
একদিন হঠাৎ জানালা থেকে চোখ সরাতেই চোখে পড়লো
একটা বড়সর বই ....
গৎবাধা জীবনের ক্লান্তি ঘোচাতেই কি না জানা নেই ,
রাজকুমারী হাতে তুলে নিল বইটি ।
খুলতেই তার মনে হল
যেন জ্ঞানের তেজরশ্মি ঠিকরে বের হচ্ছে একেকটি অক্ষর থেকে !!
রাজকুমারী অবাক হয়ে পড়তে আরম্ভ করলো ....
আজকাল সে রোজই পড়ে , সারাদিনই পড়ে
রাতে স্বপ্নেও দেখে বইয়ের রকমারি তথ্যের চিত্রায়ণ ।
একদিন সকালে ঘুম ভাংতেই ..... সে দেখে ....
একরাশ সাদা পালক জুড়ে দেওয়া তার পিঠে !!
তবে কি .... তবে কি ... তবে কি সে ডানা পেয়ে গেল ইকারুসের মত ??
নাহ আর ভাববার সময় নেই ....
হঠাৎ গজানো ডানা দিয়ে , এক্ষুনি , এই মুহূর্তেই উড়ে যাবে সে
এখান থেকে অনেক অনেক অনেক দূরে কোথাও ....
মুক্তি এসেছে তার ,
এবার সে উড়ে যাবে .... উড়ে যাবেই ....