আপনি কি আমাদের খাস হিন্দুয়ানী-মালাউনী জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত?
"আমার সোনার বাংলা" গাইতে গেলে ছাগলের মত আপনার গোয়া চিড়বিড়ায়?
গোয়া চিড়বিড়ালে কি আপনি জিহবা দিয়ে গোয়া চুলকাইতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ম্যাৎকার শুরু করেন?
টেনশন নেওয়ার কিছু নেই। সব সমস্যারই সমাধান আছেরে ভাই, আছে। কথায় বলে না? "ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়"। আপনি জানেন, আমিও জানি, আপনার ইচ্ছা আছে, কিন্তু উপায় জানা নেই, এইতো? আসেন, আপনার সমস্যার সমাধান করে দেই।
খুবই সিম্পল, "আমার সোনার বাংলা" গানটা আরবীতে অনুবাদ করে গাইলে কেমন হয়?
যেমন,
يا بنغالي الذهبي
أحبك
إلى الأبد، سماؤك
هوائك يضبط قلبي
كما لو كان مزمارًا
আপনি কি ভাবছেন "আরে বাহ! কি সুন্দর!!!"।
একটু খাড়ান, দুনিয়া অত সোজা নারে ভাই, সমস্যা আরো আছে। একটু চিন্তা করে দেখেন, "বাংলাদেশ" নামটা কি ইসলামী? ১০০% হালাল? এর মধ্যে কেমন যানি একটা হিন্দুয়ানী হিন্দুয়ানী দুর্গন্ধ আছে না? হ্যাঁ, আপনি ঠিকই ধরেছেন। এই জন্য অনেকে বলেন দেশের নাম চেঞ্জ করে "বাংলাস্তান" করা হউক। কিন্তু আবার চিন্তা করেন, "বাংলা" শব্দটা কি আরবী বা ইসলামী কোন শব্দ? মোটেও না। প্রাচীন কালের আরবরা "বাংলা"কে বলতো "বাঞ্জালা" (بانجالا)।
আপনি এখন ভাবছেন "স্তান" শব্দটা ইসলামী? কারণ পাকিস্তান, আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কিমেনিস্তান এদের সবার নামের সাথে "স্তান" আছে তাই? "স্তান' একটি আবেস্তানী (পশ্চীম-সংস্কৃত বা খারোষ্টী) শব্দ। সংস্কৃত ভাষার পূর্ব-পুরুষ হলো আবেস্তানী এবং খারোষ্ঠী। সংস্কৃতেও একই রকম শব্দ আছে যেটা আমরা সবাই জানি -- "স্থান", এর অর্থ হলো "এলাকা" বা "দেশ"। তার মানে এইটাও ইসলামী কিছু না। "বাংলাস্তান" "বাংলাদেশ" এর মত ১০০% অনৈসলামিক হিন্দুয়ানী মালাউনী শব্দ। কিন্তু আরবীতে অনুবাদ করতে তো কোন সমস্যা নাই, কি বলেন? ১০০% হালাল করতে চাইলে দেশের নাম পাল্টে "দৌলত-উল-বাঞ্জালা" (دولة البانجالا) করা যেতে পারে। এর অর্থ "বাংলা রাজ্য" বা "বাংলাদেশ"। দেশের নামও ঠিক থাকলো, আবার ঈমান-আকিদা নিয়েও টানাটানি হলো না। কি সুন্দর!
আপনি হয়ত এখন বলবেন, "আরে চুদুরভাই, জাতীয় সংগীত আর দেশের নামতো না হয় ১০০% হালাল করা গেল, কিন্তু যে বেটা এই গান লিখেছে, তার নাম তো আর মুসলমানী নাম না। তার কি হবে?"
আপনার কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু তার সমাধানও আছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুসলিম না হলেও উনি ছিলেন তাওহিদী মতবাদে বিশ্বাসী একজন ব্যক্তি। আপনি কি অবাক হচ্ছেন? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্ম সমাজের সদস্য ছিলেন বলে জানা যায়, ফুল মেম্বার ছিল কিনা জানা নেই, তবে তাদের সাথে উনার অনেক উঠাবসা ছিল। আর ব্রাহ্ম সমাজের সদস্যরা এক সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করতেন। সুতরাং ধরা যায়, উনিও সম্ভবত একই রকম আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। আমরা যদি এটা ধরে নেই, তাহলে রবীঠাকুরকে ৫০% হালাল ধরা যেতে পারে। কিন্তু আসল সমস্যা হলো উনার নাম, "রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর" -- এইটা খাস হিন্দুয়ানী-মালাউনী নাম। কিন্তু সুখবর হলো এই নামকেও আরবীকরণ করা যায়।
যেমন,
রবীন্দ্রনাথ = রবি + ইন্দ্র + নাথ = সূর্য + ইন্দ্র + প্রভু = সূর্যের মহাপ্রভু = سيد الشمس العظيم (সাইয়িদুল-শামসুল-আযীম)
ঠাকুর = নেতা বা গুরু = الرئيس (আল-রইস)
তার মানে দাড়াচ্ছে,
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর = سيد الشمس العظيم الرئيس = সাইয়িদুল-শামসুল-আযীম আল-রইস
দেখুন, রবীঠাকুরকেও ১০০% হালাল করে দিলাম।
বললাম না? ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়? এবার কি বিশ্বাস হলো?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:১১