প্রিয় ফুলগুল লেখক আলাউদিন
শেয়ার করুনঃ 0 0
আমাদের বাড়ির সামনে একটা ফুলবাগান আছে। বাগানে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা আর ডালিয়া ফুল ফোটে তখন বাগানটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। কিন্তু এবার শীতকালে দেখলাম চন্দ্রমল্লিকা আর ডালিয়া নাই। বাগানে শুধুমাত্র গোলাপ ফুল ফুটে আছে তাও তেমন না। বাগানটা বলতে গেলে ম্লানই লাগছে। আমার সাদা রঙের ফুল খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে সাদা গোলাপ। থোকায় থোকায় সাদা রঙের গোলাপ ফুল দেখলেই অদ্ভুত এক ভাল লাগায় মনটা কেমন যেন শান্ত হয়ে যায়।
ছোটবেলায় আমার খুব প্রিয় ফুল ছিল শিমুল। আমার নানীবাড়ির পিছনে বিশাল আকৃতির একটা শিমুল ফুল গাছ ছিল। নানীবাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে খুব কাছেই ছিল। আমি প্রতিদিন ভোরবেলায় শিমুল ফুল কুড়াতে যেতাম। একদিন ভোরে শিমুল ফুল কুড়াতে যাবার সময় একটা কাক আমার মাথায় ঠোকর দিয়েছিল কারণ আমার পরনে ছিল লাল রঙের জামা। শিমুল ফুল নিয়ে আমি খেলতাম। ফুলের কলিগুলো ছোট্ট ছোট্ট করে কেটে বিভিন্ন ডিজাইনের পিঠা বানাতাম। শিমুল ফুলের গন্ধটা কেমন যেন গুমোট কিন্তু ভারি মিষ্টি।অনেকদিন শিমুল ফুল দেখিনা কিন্তু গন্ধটা আমি যেন এখনও পাই । আমাদের বাড়িতে বলতে গেলে অনেক ধরনের ফুল গাছই আছে কিন্তু শিমুল ফুল গাছ নেই। আম্মুকে অনেকবার বলেছি একটা শিমুল ফুল গাছ লাগাতে কিন্তু আম্মু ভুলে যায়।
আমার জীবনের প্রথম নাম ছিল শিমুল। আমার বোনদের সাথে মিলিয়ে আমার নামটাও ফুলের রেখেছিল। কিন্তু এই নামের আমার একটা কাজিন ছিল। সে মাত্র চার বছর বয়সে মারা গেছিল। এজন্য আমার এ নামটা রাখেনি। অথচ সে যদি জীবিত থাকতো তাহলেও তো আমার এ নামটা রাখা যেত না। ছোটবেলায় আফসোস হতো এতো সুন্দর একটা ফুলের নাম আমার কেন হলো না। এখন আর সে আফসোস নেই।
তবে আমার বর্তমান নামটা আমার কখনোই পছন্দ ছিল না। এখনও পছন্দ না। এর অর্থ আকাশ জুড়ে স্বপ্ন যার। আমার ধারণা বোকা মানুষেরাই এত্তো এত্তো স্বপ্ন দেখে বেড়ায়। এজন্যই নামটা অপছন্দ আমার।
অবশ্য ফুলের নামে নাম রাখাও ঠিক না। মেয়েদের ফুলের নামে নাম রাখলে মেয়েরা ফুলের মতোই ভাল হয়। মেয়েদের বেশি ভাল হয়ে লাভ কি!