somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চেহারা একটু সুশ্রী না হলে যা হয় (কালো হলেতো কথাই নেই)

০২ রা নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেউ তাকায় না, কোন ছেলেই ভালবাসতে চায় না, স্বামী ছাড়া। স্বামীতো বাধ্য হয়েই ভালবাসে,বিয়ে করেছেতো তাই। তাছাড়া পরিবার থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে অথবা টাকার লোভে একটা ভুল করে ফেলেছে, তাই বাধ্য হয়েই ভালবাসতে হয়, কাছে আসতে হয়, সাথে থাকতে হয়। বেড়াতে যেতে চাইলেই যত তালবাহানা।
আজ এমনই একটি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো………..

গ্রাম্য: আমি তখন অনেক ছোট কেবল বুঝতে শিখেছি। বয়স তেমন বেশি নয়, প্রাইমারী স্কুলে পড়ি। গায়ে তেমন ভালো পোশাকও পড়ি না, হাফ প্যান্ট পড়ি। কি করলে সুন্দর লাগে কি পড়লে ভাল দেখাবে, কেন ভাল দেখাতে হবে তা আমি ভাল করে বুঝে উঠিনি। তাই নোংড়া হয়েই থাকি, আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় বাবা মা কাজে ব্যস্ত থাকে, আমি পড়ার চেয়ে খেলাধুলায়ই বেশি ব্যস্ত। সেই ভোরবেলা উঠি, কাকের মুখে ভাত আসার আগেই আমার গায়ে ভোরের হাওয়া, শীতের শীষ, মুখে গাছের টাটকা চুরি করা অথবা কুড়িয়ে পাওয়া ফল সোভা পায়। বাড়িতে কোনদিন বাবা কোনকিছু কিনে এনেছে কিনা মনে পড়ে না। দিনের বেলা কখন ভাত খাই না খাই তার ঠিক নেই। সমবয়সীদের সাথে খেলাধুলা করি, ওরা খুব দুষ্টু আমার কালো ময়লা সুন্দর গালটা খামচে যে কি হাল করেছে, তা দেখে মা শুধু বকা বকি করে ”তোকে কে উ বিয়ে করবে না” বদসুরুদ, নটি জানি কোথাকার! কোন কাজ করে না, শুধু খায় আর ঘুরে বেড়ায়। প্রতিদিনই আরও কত কি গালাগালি করে!!! ও আমার সহ্য হয়ে গেছে। পড়াশুনার প্রতি কোন খোজ নেয় না, শুধু স্কুলে পাঠানোর জন্য মাঝে মাঝে ঝাড়ু হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে দৌড়ায়। তাই স্কুলে যেতেই হয়, পড়া দিতে নয়, মার খেতে। এতো নিত্য দিনই খেতে হয়, শিক্ষকেরাও যেন কেমন তাদের রাগ উঠেই থাকে, একি গতিতে পিটায় যেন, তাদের ঘরের ভাত চুরি করেছি!!! এভাবে পশুর মতো আমায় মারতে পারে ক্যামনে? এভাবে বেড়ে উঠা। স্কুল, বাড়ি হাট বাজারে কোথাও আমাকে কে উ ভাল কথা বলেনি শুধু বলতো এ নোংরা মেয়ে, তোকে বিয়ে করবে কে?

এভাবে বেড়ে উঠা সকলের অনাদরে ও ঘৃনায়। কেন যে তারা ঘৃনা করতো তা আমি এখনও বুঝতে পারি না। আমিতো পরিবেশের শিকার, ভাল পরিবারে জন্ম নিলে, আমার চেহারা এত আচরকাটা, অমশৃন, মলিন বিশ্রি থাকত না। এভাবে আমার বয়স যখন ১৩, তখন আমি একটু আদটু সাজতে শিখলাম, ভালভাবে থাকতে শিখলাম, বন্ধবীদের দেখে। কিন্তু কে উ আমার দিকে একবারও তাকাতো না, আমার সাথে সুন্দরী বান্ধবীরা থাকতো তাদের দিকেই তাকাতো। আমার অনেক হিংসা হতো, কোন ছেলেই আমার সাথে ঘুরতো না, ভালবাসি বলেনি, নয়ন ভরে তাকায়নি। আমি যেন আমার জন্যই সাজতাম। টিপ পড়তাম, ভালকরে কাপর পড়তাম। এভাবেই আর তিন বছর একা নিঃষঙ্গ কাটলো কেউ আমাকে মুল্যায়ন করে না, কোন কাজেই সাহায্য করে না, শুধু বকাবকি, আর সকলেই যেন বোঝা আমি। কেন আমিতো সব কাজ ঠিক মত করেই করতে পারি, কোন সুন্দরী মেয়ে ঠিক করে করতে না পারলে তাকে দেখিয়ে দেওয়া হয়, আমাকে কেন হয়? আমি কেন অবহেলিত? সুন্দরীরা কত জনে কত প্রেম করে। আমারওতো মন চায়, কেউ আমাকে চায় না, ভালবাসে না।

বাবার জমানো কিছু টাকা ব্যয় করে দেওয়া বিয়ে দিয়ে ষষ্ঠ শ্রেনীতেই আমাকে থামিয়ে দেওয়া হলো। ছেলের বাবা মা আমাকে খুব পছন্দ করছে, তবে কিছু যৌতুকতো দিতেই হবে। অনেক লোক আসলো, অনেক মানুষের ভীর। খাওয়া দাওয়া করে যায়, আমাকে সাজলে কেমন দেখায় কেউ বলে না, আমার স্বামীর বাড়ির সবাই আমাকে দেখে বিষম নিন্দা আমি নাকি দেখতে খুব খারাপ। আমার কলিজা ছিড়ে যায়, নিয়তির পরে মরে যাই। অনেক ঝকঝকে বাসর, আমিও সেজে আমার রুপ বদলে দিয়েছি। স্বামীর মন ভাল, আমাকে দেখেই সে বিমোহিত। জীবনে প্রথম কোন পুরুষের প্রসংশা কুড়াইলাম, সে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা, যা আমি কখনো শুনিনি, কোন দিনও ভুলবো না। কথা বার্তার সময় যেন তারআর নেই, অনেকদিন ধরে না খাওয়া। রাত শেষে দিনের আলোয় স্বামীর ভালবাসা যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে, প্রথম দিনের মতো করে আর ভালবাসে না। আর কাছে আসে না, আমি বুঝতে পারি দুধের সাধ সে ঘোলে মিটায় না, দুধেই মিটায়। আমার হাতের রান্না সবার নিকটই প্রিয় শশুর শাশুরী আমাকে খুব ভালবাসে। ওনি বাড়ি ফেরে অনেক রাতে, অনেক দেরিতে, কখনও বা ফেরেই না!! এখন আমি দু’সন্তানের জননী, শিক্ষাদীক্ষাও নেই যে কিছু একটা করব, এভাবে কাটছে জীবন, মাঝে মাঝে স্বামীকে পাই, স্বামী থাকে অন্যের ঘরে। আমার কপাল এমন হলো কেন???????? কি আমার অপরাধ??

সুত্র: অভাগিনী পাশের বাড়ির আপা
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:৩৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×