সৌদি আরবের আইন এবং অর্থের অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে মরতে বসেছেন প্রবাসী বাংলাদেশি তৌফিক দেওয়ান। সৌদি আরবে অবৈধ বলে বিবেচিত তৌফিক কাজ করতে গিয়ে ৪ তলার ছাদ থেকে পরে মারাত্নকভাবে আহত হলেও আকামা এবং ইন্স্যুরেন্স কার্ড না থাকায় চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তৌফিক এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এই মুহূর্তে তাকে সে দেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা অথবা তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা না করতে পারলে হয়তো খুব দ্রুতই লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হবে তৌফিককে।
সৌদি আরবে বসবাসরত প্রায় ২৩ লাখ বাংলাদেশির মধ্যে এমন শত শত তৌফিক আছেন, যারা সামান্য কিছু টাকা এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবে আজ মৃত্যুপথযাত্রী। এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও কোনো প্রকার সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, সৌদি আরবের আইন এবং অর্থের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সৌদি আরবে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকরা । বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকরা স্থায়ীভাবে দেশে ফেরার ভয়ে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িয়ে পড়ছেন।
বেশি টাকার লোভে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে মারাত্নক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। দুর্ঘটনা কবলিত অবৈধ শ্রমিকরা চিকিৎসার জন্য গেলে আকামা এবং ইন্স্যুরেন্স কার্ড না থাকার কারণে তাদের চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। পর্যাপ্ত টাকা এবং চিকিৎসার অভাবে এই মানুষগুলোকে প্রায়ই ভিক্ষা নিষিদ্ধের এ দেশের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ভিক্ষা করতে দেখা যায়।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, এখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে রোগীর অবস্থা যতই ভয়াবহ হোক না কেনো, ঘটনাস্থলে পুলিশ না আসা পর্যন্ত কেউ সেখানে আহত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে পারবেন না এবং আকামা ও মেডিক্যাল(ইন্স্যুরেন্স) কার্ড না থাকলে তার চিকিৎসা করা হয় না।
এমনই একজন নারায়ণগঞ্জের দেওয়ান বাড়ির আব্দুস সালাম দেওয়ানের ছেলে তৌফিক দেওয়ান। সৌদি আরবে আসার কিছুদিন পরেই কফিলের চাহিদা(মাসিক ফায়দা) মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় অবৈধ হয়ে যান তিনি। অবৈধ তৌফিক দেশের ফেরার চিন্তা মাথায় নিয়ে অল্প সময়ে বেশি টাকা রোজগারের জন্য বাংলাদেশি ঠিকাদার তোফায়েলের অধীনে কনস্ট্রাকশন কাজে যোগ দেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই গত ৪/৫ দিন আগে কাজ করতে গিয়ে ৪তলার ছাদ থেকে পরে মারাত্নকভাবে আহত হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হলে আকামা এবং ইন্স্যুরেন্স কার্ড না থাকার অজুহাতে তাকে সেখান থেকে ফেরত দেওয়া হয়।
চিকিৎসার অভাবে তৌফিক এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। প্রবাসী অনেকে মনে করেন, এই মুহুর্তে তাকে এখানে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা অথবা তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা না করতে পারলে হয়তো খুব দ্রুতই লাশ হয়ে দেশে ফিরতে হবে তৌফিককে।
তৌফিক এবং তার মতো আরো শত শত প্রবাসী বাংলাদেশিকে বাঁচাতে সৌদি দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন প্রবাসীরা।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম