somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরকীয়া মুক্ত পাঠ্যবই (১৮ +)

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

.............
.............
.............

Click This Link


podda nodir majhi একটা ছোট গল্প দিয়েই শুরু করি যাতে শুরু থেকেই বিষয়বস্তু পাঠকের কাছে পানির মত পরিষ্কার থাকে এবং অতিসত্বর আমার বিষয় বস্তু ধরতে ও বুঝতে পারবেন। একবার এক ভদ্র লোক গ্রামে সাঁকো দিয়ে খাল পার হচ্ছেন। তার অন্যদিক থেকে একটা পাগলও খাল পারের উদ্দেশ্যে সাঁকোতে উঠল। তখন ভদ্র লোক পাগলকে উদ্দেশ্য করে বলল, ঐ পাগল তুই দেখিস সাঁকো নাড়াইস না। অর্থাৎ, পাগলকে সাঁকো নাড়ানোর জন্য বারণ করা হচ্ছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল পাগল নিষেধাজ্ঞার বাণী শুনা মাত্রই কি যেন চিন্তা করে সাঁকো নাড়ানো শুরু করল আর বেচারা ভদ্র লোক সাঁকো থেকে উল্টে খালে পড়ে গেল। ভদ্র লোকের উদ্দেশ্যে তৃতীয় ব্যক্তির ভাষ্য, পাগলকে কিছু করতে বারণ করা মানে কি তাকে পাগলামি করার ইস্যু মনে করিয়ে দেওয়া নয়? কেননা, যেখানে পাগলের কাজই হল পাগলামি, সেখানে কোন কিছু করতে নিষেধ করা মানেই তাকে উল্টো পাগলামি করার কথা মনে করিয়ে দেওয়া, যা আমাদের গল্পের পাগল করেছিল। আমাদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের উপন্যাসে যদি পরকীয়ার গল্প দিয়ে পরকীয়াকে ব্যঙ্গ করা হয়, তাহলেও তা ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে কি ধরনের প্রভাব ফেলবে তা উপরের গল্প থেকেই আশা করি পাঠকের মনে ধারনা জন্মেছে।

মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে উপন্যাসের নামে উড়তি বয়সী ছেলে মেয়েদের পরকীয়া শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিকে “হাজার বছর ধরে” এবং উচ্চ মাধ্যমিকে “পদ্মা নদীর মাঝি” দুই উপন্যাসই অবশ্যই পড়েছেন। আমিও পড়েছি। দেশী বিদেশে হাজার খানিক উপন্যাস পড়লেও মনে হয় চোখের জল কেবল ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের শেষ পাতা পড়েই পড়েছিল। অতীতে ফিরে যেতে কে না চায়, চিন্তা করতেই রোমান্স অনুভব হয় পাশাপাশি চোখের জল। যথেষ্ট শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা অর্জন করেছেন ‘জহির রায়হান’ স্যার, এতে কোন সন্দেহ নেই। এবং ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসই প্রমাণ করে কত বড় মানুষ তিনি নিজে ছিলেন। আমিও অন্তর থেকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি ‘জহির রায়হান’ স্যারকে। কিন্তু, এই উপন্যাসে আমরা দেখেছি মন্তু মিয়ার সাথে মকবুলের তৃতীয় তথা ছোট বউয়ের পরকীয়া প্রেম। ভালো লেগেছে এতে কোন সন্দেহ নেই; প্রেম, ইমোশন সব মিলিয়ে একটা বেস্ট প্যাকেজ। কিন্তু, ১৫/১৬ বছরের একটা বাচ্চার পাঠ্য বই হিসেবে কেন এই উপন্যাসকে চিহ্নিত করা হল তা আমার মত আরেক বাচ্চার বোধগম্য নয়। উপন্যাস মানেই কিন্তু প্রেম থাকা স্বাভাবিক, আবার পরকীয়া হচ্ছে প্রেমের একটি ভার্সন কিন্তু এছাড়াও তো উপন্যাস রয়েছে, তা কি দেওয়া যেত না।

অন্য দিকে “পদ্মা নদীর মাঝি”, আমার কাছে আরেকটি স্মরণীয় উপন্যাস। নোয়াখালী অঞ্চলের হোসেন মিয়া চরিত্রটি আমার ভীষণ মনে ধরেছে, ক্রিয়েটিভ আসলে এদেরই বলে। কিন্তু, সারা জীবন যেখানে আমরা উপন্যাস, সিনেমায় দেখে আসছি নায়কের বউ হয় নায়িকা, কিন্তু অবাক এবং মজার ঘটনা হচ্ছে এই উপন্যাসে নায়কের শ্যালিকা হচ্ছে নায়িকা, তাও আবার তিন বাচ্চা এবং বউকে ছেড়ে শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার মত মর্মান্তিক প্রেমের কাহিনী। এই গল্পও যথেষ্ট মজার এবং উপন্যাসের সকল সার্থকতা অর্জিত। কিন্তু, ঐ বয়সেই পরকীয়া শিখানোটা কতটা জরুরী ছিল তা কেবল যারা এই উপন্যাস কচি কচি ছেলেমেয়েদের হাতে তুলে দিচ্ছেন তারাই জানেন।

ইতিমধ্যে উভয় উপন্যাসের লেখকের ভক্তকুলের অনেকেই হয়ত আমার উপর চটেছেন। আমি এর জন্য সত্যিকার অর্থেই দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী তার চেয়ে বড় কথা শুধু পরীক্ষায় পাসের জন্য নয় মনের প্রশান্তি এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য অসংখ্য বার আমি এই উপন্যাস দুটো পাঠ করেছি। তাই এর জন্য আমাকে দোষারোপ করাটা মনে হয় পাঠকের ভুলই হবে। কেননা, আমি এক মুহূর্তের জন্যও উপন্যাসসমূহের কোনটিকে হীন বা নীচ করে কিছু বলিনি। শুধু বলতে চেয়েছি, পরকীয়া নির্ভর উপন্যাস এই বয়সের ছেলেমেয়েদের হাতে দিয়ে তাদের প্রকৃত পক্ষে কি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। তারপরও যদি কেউ এতে ব্যথিত হন, তার জন্য আমি শুরু থেকেই ক্ষমা চেয়ে আসছি।

অনেকেই বলবেন, যাদের কচি কচি বাচ্চা বলা হচ্ছে তারা কেউই প্রেম-ভালবাসায় অজ্ঞ নয়। হ্যাঁ, আমি আপনার সাথে এক মত এবং স্বীকারও করি, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা এখনই প্রেম-ভালবাসায় নিজেদের বিলিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু, তাই বলে কি তাদের আমরা এখনই প্রেমের নামে পরকীয়া শিক্ষা দিব? একটা লজিকালি চিন্তা করুন, আপনার বাবা সিগারেট খায় এটা আপনিও জানেন আবার আপনার দাদা-দাদি, নানা-নানিও জানে। তাহলে আপনার বাবা আপনার সামনে সিগারেট খায় কিন্তু ওনাদের সামনে খান না কেন? ন্যূনতম দূরত্ব আমাদের বজায় চলা উচিত বলেই আপনার বাবা তা করছেন না। আপনার দাদা-দাদি কি আপনার বাবাকে বলতে পারতেন না যে, আমরা তো জানি তুই সিগারেট খাস, আয় আমাদের সামনেই খা। কিন্তু বলেন নি, কেননা কিছু ব্যাপার থাকে যেগুলো মেনে নিতে হয় কিন্তু মানিয়ে চলা যায় না। ঠিক তেমনি ছেলেমেয়ে প্রেম-পরকীয়া করুক কিন্তু তা তাদের পাঠ্য থেকে শিখে না করাই মনে শ্রেয়। আশা করি এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য এবং বিষয় বস্তু আপনাদের বোধগম্য হয়েছে।

প্রেম, ভালবাসা থেকে শুরু করে সংসারের সুখ পর্যন্ত নষ্ট হচ্ছে এই পরকীয়া ভাইরাসের দরুন। আপনি যদি হিন্দি সিনেমা ‘স্টুডেন্ট অফ দ্যা ইয়ার’ দেখেন তাহলে বন্ধু সাথে নিজের স্ত্রী/গার্ল ফ্রেন্ডকে পরিচয় করিয়ে দিতে আপনার মনে সংশয় হবে। এত কিছু বলে শুধু মাত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, আর এক বাক্যে বলতে চাই, “পরকীয়ামুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা, শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা”

বিস্তারিত:
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৪৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×