ভারত ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ গুরু নানকের অমূল্য বাণী ও তাঁর আধ্মাত্মিক জীবনকে স্মরণ করেন। আজ থেকে প্রায় পাঁচশো বছর আগে গুরু নানকের সেই বাণীর কয়েকটি হলো ।
১) গরিব মানুষদের কখনও ভুলবে না
সমাজে ধনী-গরিব বৈষম্য আজও যেমন প্রবল ভাবে আছে, আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগেও ছিল। গুরু নানকের তখন বয়স ১২ বছর। নানককে তাঁর বাবা ২০টাকা দিয়েছিলেন একটি ব্যবসা করার জন্য। কিশোর নানক ওই টাকায় প্রচুর খাবার কিনে এনেছিলেন এবং গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। যখন নানকের বাবা তাঁকে টাকাটির ব্যাপারে জিগ্গেস করেন, নানকের উত্তর ছিল, এটাই তো সত্যিকারের ব্যবসা। আজও গুরু সচ্চা সওদায় গরিবদের খাবার দেওয়া হয়।
২) ভগবান এক
একটাই ধর্ম, তা হল মানব ধর্ম। গুরু নানকের কথায়, 'হিন্দু, মুসলিম বলে কিছু নেই।' গুরু নানক হরিদ্বার সফরে গিয়ে দেখেন, গঙ্গার জলে নেমে মানুষ সূর্ষের দিকে মুখ করে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন। তাঁদের বিশ্বাস, পূর্ব দিকে স্বর্গের দ্বার রয়েছে। গুরু নানক গঙ্গার জল নিয়ে পশ্চিমে জলাঞ্জলি দিতে শুরু করলেন। অনেকেই হাসাহাসি শুরু করে দিলেন। কেউ কেউ রেগেও গেলেন। তখন নানকের উত্তর ছিল, যদি তোমাদের ছেটানো গঙ্গাজল স্বর্গে যেতে পারে, তাহলে আমার পশ্চিমে ছেটানো গঙ্গাজল কেন পঞ্জাব যাবে না।
৩) নারী-পুরুষ সমান সমান
তিনি দেখেছিলেন, কোনও মন্দির বা মসজিদে মেয়েদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। মনে খুব আঘাত পেয়েছিলেন। তিনি শিখ সম্প্রদায়ের মহিলাদের মন্দিরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন।
৪) উদার হও
মনকে উদার হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন নানক। বলেছিলেন, জঙ্গলের মধ্যে ঢুকলে আলোর সন্ধান পাবে না। তাই উদার হও।
৫) জীবনের ৫ শত্রু
জীবনে ৫টি শত্রুকে চিহ্নিত করেছিলেন গুরু নানক। অভিমান, রাগ, লোভ, সংযুক্তি ও আকাঙ্খা।
৬) সঠিক গুরু জীবনের সঠিক পথের জন্যই গুরুর প্রয়োজন। নানক বলেছিলেন, তীর্থ ভ্রমণের থেকে ভালো জীবনে সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়া।
৭) স্বাবলম্বী
নিজের কাজ নিজে করো। কারও সাহায্য ছাড়াই কাজ করার চেষ্টা করো।
৮) কুসংস্কারকে দূর হঠাও কোনও কুসংস্কারকে প্রশ্রয় দিও না। কারণ কুসংস্কার মানসিক ভীতি তৈরি করে। জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়।
৯) সারল্যই সৌন্দর্য
শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য গুরু নানক মাত্র ৩টি শপথ নিতে বলেছিলেন। বন্ধ চাকো, অর্থাত্ সকলের সঙ্গে মেলামেশা করো, কিরাত করো অর্থাত্ সত্ জীবনযাপন করো ও নাম জাপনা বা ঈশ্বরের নাম জপো।
১০) ভ্রমণ করো
মানসিক বিকাশের জন্য ভ্রমণের বিকল্প নেই। দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াও।
সূত্র : ইন্টারনেট