চারিদিকে এতো অন্ধকার কেন
আলো জ্বেলে দে, দেখ না কে এলো;
সেই ঝুলানো চুলের ছেলেটা;
প্রতিমার মতো তবুও তুই দাঁড়িয়ে যে।
আদিত্য, সত্যিই ফিরে এলাম
যদিও দেরী হলো; দেরীতো আমার
অসুখ রে; স্কুল কলেজে কী কখনো
আগে গেছি, না কোনো সভা মিছিলে।
আমিতো বড্ড পিছিয়ে; ছোটবেলায়
যেমন মায়ের আঁচলের পিছনে
পালিয়ে আত্মরক্ষা করতাম; বাবার
সমস্ত রাগ। জয় হতো না, কেবল
সামলে নিতাম নিজকে।
আদিত্য, পালিয়েতো গিয়েছিলাম
নিজকে নিজের ভিতর; লুকাতে কী
পারলাম, নাকি তুই পারলি। কেবল
কষ্টের বহর নিয়ে ক্রমান্বয়ে অকুল
সমুদ্রে দিকবিদ্বিক। এই কী ছিলো
আমাদের চাওয়া, স্বপ্ন। তবুও কেনো
এতো খরা, ঠাঠা রোদ্দুর। আকাশে
মেঘ জমে আবার রোদ এসে মুছে
নেয় সহাস্যে; কেবল আমাদের যেনো
তা হতে নেই; উড়ে যায় ফুৎকারে।
আদিত্য, কী লাভ জানতে চেয়ে অই
পুরানো কথা; মানুষের স্বপ্নেও এতো
ভুল থাকে? বলতে পারিস স্বপ্ন কেমন
হওয়া উচিত? স্বপ্ন আর শূন্যের মাঝে
কতটুকু ব্যবধান? তোদের বিজ্ঞানে
কি স্বপ্নের মাপকাঠি আছে? মনে হয়
মানুষের অসাধ্যই স্বপ্ন; অস্পর্ষী।
জানালার পর্দ্দা কেনো তুলে দিলি
ওপাশে স্মৃতি; হাঙ্গরের মতো ভয়ার্ত।
হোক না এই অন্ধকারে সেই সব
অসমাপ্ত আলোচনার শুরু। উদ্যানে
সেদিনের মতো তুমুল তর্কে উড়ে
যাক কিছুটা সময়; কালঘড়ির চাকায়
তর্কও বুঝি স্বপ্নের মতো অসীম।
চায়ের অভ্যাস মুছে গেছে, অজস্র
ক্ষরণের পর, জ্বলে ওঠে বুকের
ভিতর; গলা উপচে আগুন।
আদিত্য, এরপরই কী মৃত্যু; জীবনের
কোন ধাপে আমরা; এতো পুনাবৃর্ত্তি।
এই সন্ধ্যায় কেনোবা আবার মিলেছি
শহীদুল্লাহ হলের মধ্যরাতের মতো
যেনো আজও কানে শিস দিয়ে বলে
যায় হে হে লর্ডস অ্যার ক্যামিং...
চেয়ে দেখ- অইতো রানু ডুবে আছে
সমরেশে, জীবন বাবু দুমড়ে বসে
খেলছে তাসের ধর্য্য, আমরা দুজনে
এইকোনে হাসানের কবিতায় ডুবে
গেছি তার ছিঁড়ে কোনো এক
অজ্ঞাতপুরে, আনিস কেবল জুড়ছে
আর জুড়ছে এইসব জীবনের ঙাঙ্গা
টেপরেকর্ডার, আর অই জসিম কেবল
অধর্য্য পেরিয়ে বলে ওঠে দুরছাই...
নাকের নীচে আঙ্গুল রেখে হাসলো
যেনো অবিকল নাথবাবু স্যার।
অমনি কী ভাঙ্গলো আমার ঘুম!
আদিত্য, নিরাপদ মোম জ্বলে
নিরাপদে; অন্ধকারে আয়না, চুপচাপ
ডুবে থাকি; স্মৃতির প্রত্যাবর্তনে।
-------------
কবিকথাঃ অনেক পুরানো একটা কবিতা, হঠাৎ পেয়ে শেয়ার করলাম অকারণে।