১.
তোমার বুকের ভিতর বাজে মোহন মুরালি;
আলতা পায়ের ভাঁজে নুপূরের নাচ দেখে
জোছনাবিহারে রাত্রি নেমেছে স্নানে আজ;
আলোর সমুদ্রে। আমাদের পথ-হাঁটা পথ
অবাধ স্নেহে আবদ্ধ রেখেছে কালের চলাচল।
স্বপ্নরা করেছে নোঙর; ভাসাও আকাশের
নীলাজলে। সিদুঁরে গেঁথে রাখো বিশ্বাসের চাবি,
হাতের শাঁখে বাঁধো হাত; অটুট শিকল।
মৃত্তিকার চিহ্নে আঁকা ঘর; বসতের মিনতী
পোষমানা পাখিরা জানে ভোরের আরতি।
এভাবে দেখে দেখে আমরা দু'জনে
ভুলেছি উদাসিন অতীত; তীব্র দাহ।
আমাদের পথ-হাঁটা পথ, ক্রমশঃ হয়েছে এক।
২.
কবিতার অলিগলি পথ, পাথর-নূড়ি
যেভাবেই পড় তুমি; শূন্য ফলাফল।
যাকিছু সহজেই বলি, ছুঁড়ে দাও বাতিল-বাক্সে।
জলের প্রতুল তলদেশে জমে না পলি;
চাষের আবাদি জমিন তোমার কোমল মন
ঠাঁই চাই, কবি আমি, ভ্রষ্ট-ভ্রুণের কীট।
৩.
এইভাবে পড়ে নিও, আমাকে আবার;
দুপুরের খরারোদ্দুরে পোঁড়া
মাঘের শীতের কুয়াশা-চাদর মোড়া
গা ঘিনঘিন করা কালোকয়লার মানুষের নামে
আমাকে পড়ে নিও অজস্র বেদনাকাতর নতমুখী আমি।
আমি আর জয়নুলের তিনটি কালো কাক
একঘরে থাকি। বাতাসের অনাহারি দ্বি-অম্লজান
আমাদের বুকের হাঁপড়ের হাওয়ায় জ্বলে লৌহার হাঁতুড়ি
তোমাদের যুদ্ধের হাতিয়ার; নাম দিও আত্মরক্ষার অধিকার।
৪.
মাঝারি মানুষ আমি
মাঝখানে থাকি;
ভালোবাসা ও ঘৃণার খুব কাছাকাছি।
যেখানে চোখ রাখো
অনলের দাহ; বাঁধনে ক্ষয়-গাঁথা ফেরারি পাখি।