ফেলুদার সাথে পরিচয় ছোট্টবেলায়। বিটিভিতে সপ্তাহে একদিন প্রচারিত হত ফেলুদার সিরিয়াল। তখন তার কাজকর্ম সম্পর্কে খুব একটা না বুঝলেও, বড় হয়ে যখন ফেলুদা পড়া শুরু করি তখন বুঝতে পারি কি অসাধারণ এক চরিত্র সৃষ্টি করেছেন সত্যজিত রায়।
আমি জানি ফেলুদাকে নিয়ে সামুতে অনেক ভাল ভাল লেখাই রয়েছে। তারপরেও লিখলাম ফেলুদার প্রতি ভালবাসার কারণে। আর ফেলুদাকে নিয়ে নিজের ভাবনাকে দুএকজনের সামনে উপস্থাপন করতে।
আমার মতে বাংলা রহস্য সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা। বাংলা ধ্রুপদী চলচ্চিত্রের জনক সত্যজিত রায়ের হাতে জন্ম হয়েছিল ফেলুদা চরিত্রটির। ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’গল্পের মধ্যদিয়ে ফেলুদার আবির্ভাব। ফেলুদা সিরিজে সব মিলিয়ে মোট লেখার সংখ্যা ৩৫ টি। এর মধ্যে গল্প, উপন্যাসিকা এবং উপন্যাস রয়েছে।
১৯৬৫ সালে ফেলুদার আবির্ভাব, তার পর কত সময় গড়িয়েছে। কিন্তু ফেলুদা একনো সমানে জনপ্রিয়। ফেলুদার যখন আবির্ভাব তখন যারা স্কুল পড়ু ছিল তারা আজ অনেকেই বুড়ো হয়ে গেছেন। কিন্তু ফেলুদার জনপ্রিয়তা এখনো তেমনই রয়ে গেছে। ফেলুদার আসল নাম প্রদোষ চন্দ্র মিত্র। ফেলুদার সবসময়ের সঙ্গী তপেশ রঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে। ফেলুদা সিরিজের সবগুলো কাহিনীই তোপসের জবানিতে লেখা হয়েছে।
গোয়েন্দা গল্পের সংখা বাংলা সাহিত্যে নেহায়েত কম না হলেও ফেলুদার মত এমন টানটান উত্তেজনপূর্ণ, মেদবিহীন গল্প বিরল। কাহিনী বর্ণণাতে কোন বাহুল্য খুজে পাওয়া যায় না। গল্প পড়তে পড়তে মনে হয় একটির পর আরেকটি ছবি ভেসে উঠছে চোখের সামনে। রহস্যের জট খুলতেও ফেলুদার স্বাতন্ত্র লক্ষ করা যায়।
ফেলুদার অন্যতম একটি বিশেষত্ব হচ্ছে , ভূগোল, ইতিহাসসহ নানা বিষয় সম্পর্কে অসামান্য জ্ঞান। যে সকল জায়াগা গল্পে এসেছে সেগুলোর অবস্থান , মানুষের জীবনধারণের চিত্র, ভৌগলিক সৌন্দর্য এবং ইতিহাস সব কিছুই সুন্দরভাবে ফুটে উটেছে। যে কারণে ফেলুদা ফেলুদা পাঠকদের কাছে মুধুমাত্র গল্পের চরিত্র নয় বরং বাস্তবের মানুষ হিসেবে হাজির হয়েছে।
ফেলুদা সিরিজে আর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র জটায়ু যার কাগুজে নাম লালমোহন গাঙ্গুলি। জটায়ু মূলত একজন রহস্য রোমাঞ্চ লেখক, তার রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজের নায়ক প্রখর রুদ্রর ভাবসাব অনেকটাই ঢাকাই সিনেমার নায়কদের মত। জটায়ু আসলে সেই সব লেখকের প্রতিনিধি যাদের কাজ হচ্ছে রহস্য রোমাঞ্চ উপন্যাসের নামে গাঁজাখুরি গল্প লেখা কিংবা বিদেশী গল্পের থেকে আর একজনের গল্প থেকে আরেকটু আইডিয়া চুরি করে লেখা।
নিচের লিঙ্কে গেলে ফেলুদার বেশ কিছু বইয়ের লিঙ্ক পাবেন।
ফেলুদার বই