somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশে মানসিক রোগে আক্রান্ত প্রায় দুই কোটি মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন হাসপাতালে মাত্র ৮১৩টি শয্যা রয়েছে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক কোনো সেবাকেন্দ্র নেই। হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ রোগের চিকিৎসা নির্ভরশীল। এ ছাড়া এ রোগের চিকিৎসার জন্য দেশে মাত্র ১৯৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এতে করে মানসিক রোগে আক্রান্তরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

দেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত। অথচ বিশাল এই জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় মাত্র ১৯৫ জন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।

তাদের মধ্যে প্রায় একশ' চিকিৎসক রাজধানীতে অবস্থান করছেন। জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। সরকারি পর্যায়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, পাবনা মানসিক হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মানসিক রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সীমিত পরিসরে মানসিক রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে রোগী ভর্তির জন্য মাত্র ৮১৩টি শয্যা আছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১৬ শতাংশ এবং শিশু-কিশোরদের মধ্যে ১৮ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এ ছাড়াশিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রতি হাজারে আটজন অটিজমে আক্রান্ত। এর মধ্যে সিজোফ্রেনিয়া রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ৬০ লাখ।

এ বিষয়ে মনোবিদ অধ্যাপক ডা. মুহিত কামাল বলেন, সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা, কুসংস্কার এবং সামাজিক কারণে অসুস্থতার চেয়ে সমাজই আক্রান্তদের বেশি নিগৃহীত করে। ভ্রান্ত ধারণা বর্জন করে সঠিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে এ অবস্থার উন্নতি করা সম্ভব।

সিজোফ্রেনিয়া রোগে রোগীর চিন্তা, প্রত্যক্ষ ও আচরণের অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। অলীক প্রত্যক্ষণ (হ্যালুসিনেশন) :যেমন কানে অদৃশ্য কারও কথাবার্তা শোনা, বদ্ধমূল ভ্রান্তবিশ্বাস (ডিল্যুশন), অহেতুক সন্দেহ, অস্বাভাবিক আচরণ, নিজের চিন্তা ছড়িয়ে যাচ্ছে বা চুরি হয়ে যাচ্ছে বা অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে এমন বিশ্বাস, ঘুমের সমস্যা, একা একা কথা বলা, নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকা, কর্মক্ষমতা নষ্ট হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে। সাধারণত ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। পঞ্চাশের দশকের পর থেকে মানসিক রোগের ওষুধের আবিষ্কার ও ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী এ রোগের লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা বহুলাংশে সম্ভব হয়েছে। হতাশ না হয়ে সিজোফ্রেনিয়াসহ যে কোনো মানসিক রোগকে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। সবার আগে প্রয়োজন সিজোফ্রেনিয়া রোগটি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ও বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা। অনেক সময় নানা কুসংস্কারের কারণে বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসার বিপরীতে অপচিকিৎসা গ্রহণের কারণে রোগটি আরও জটিল হয়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে যে, সিজোফ্রেনিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ, তাই দীর্ঘসময় এমনকি কখনও কখনও সারাজীবন ওষুধ খাওয়াতে হবে। রোগী ওষুধ না খেলেতাকে দোষারোপ করা যাবে না; বরং স্বজনদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।

বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে ওষুধ বাদ দিয়ে কেবল কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা করা যাবে না। রোগ লক্ষণগুলোকে গোপন না করে রোগীর সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হবে, আত্মহত্যার প্রবণতা থাকলে তাকে নিরাপদে রাখতে হবে। রোগীর যত্ন নেওয়া তার খাদ্যগ্রহণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। রোগীকে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন না করা, তাকে ব্যঙ্গ বা উপহাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। রোগীর সক্ষমতার ওপর নজর রেখে তাকে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি না রেখে পরিবার ও সমাজের মধ্যে রেখে তার চিকিৎসা করতে হবে। রোগের লক্ষণ দূর করার উদ্দেশ্যে সুস্থ হওয়ার আগেই তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে না। রোগী যাতে মাদকাসক্ত হয়ে না পড়ে সে ব্যবস্থা নেওয়া ও মাদকাসক্ত হয়ে গেলে চিকিৎসা নেওয়া এবং মানসিক রোগীর প্রতি সহমর্মী দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে, যাতে সমাজের মূলস্রোতে থাকতে পারে। সে জন্য চিকিৎসক, অভিভাবক, সমাজকর্মী, নীতিনির্ধারক সবাইকেই হতে হবে সচেতন।

নেট থেকে

এখানে আরো পড়ুনঃ http://www.psychobd.com
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×