কি দিয়ে শুরু করি? পুরাই মাকাল ফল টাইপ লেখা। কাজ নাই তাই শুধু শুধু লিখতেসি।
আচ্ছা ধরা যাক আপনি অসম্ভব ভাল ফুটবল খেলেন।আপনার পছন্দের জায়গা হচ্ছে মিডফিল্ড।কিন্তু আপনার কোচ আপনার পছন্দের জায়গায় খেলতে না দিয়ে আপনাকে ডিফেন্সে খেলাল।আপনি তখন কি করবেন? খেলবেন না?খুব মাথা গরম প্রকৃতির মানুষ না হলে আপনি ডিফেন্সেই নিজেকে মানিয়ে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু সমস্যাটা হবে তখন যখন আপনি গোল আটকানোর কাজ বাদ দিয়ে অভ্যাসবশত মাঝ মাঠে উঠে যাবেন।
আরেকটু সহজ করে বলি মনে করুন আপনি অঙ্ক করতে খুব পছন্দ করেন। আপনি যখন জীববিজ্ঞান পরতে যাবেন তখন আপনার কাছে অস্বস্থি লাগবে কারণ জীববিজ্ঞানে আপনি খুজবেন কোথায় অঙ্ক আছে কিন্তু সেখানে অঙ্কের নাম গন্ধও পাবেন না।সেখানে আপনার কি করনীয়? অ্যাডজাস্ট করতে হবে। সহজ বাংলায় মানিয়ে নিতে হবে। এছাড়া আপনার কাছে অন্য কোন উপায় ও নাই।
২১ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে আর কিছু বুঝি আর না বুঝি এটা আমি খুব ভাল করে বুঝতে পেরেছি।আপনার বর্তমান অবস্থা কি আর পারিপার্শ্বিক অবস্থা কি সেটা আপনাকে বুঝে কিভাবে অ্যাডজাস্ট করতে হবে সেটা আপনার নিজেকেই ঠিক করে নিতে হবে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ২বার দেয়ার কারণে এই অ্যাডজাস্ট করার বিষয়টা এখন আমার কাছে ডাল ভাত পর্যায়ে নেমে গেসে।
বাসার একটা নিজস্ব পরিবেশ থেকে যখন হোস্টেলের বিশাল পরিবেশে নিজেকে আবিষ্কার করলাম তখন নিজের জীবনের সব থেকে বড় অ্যাডজাস্টমেন্টটা শুরু করলাম।কি রকম? এই ফিরিস্তি দিয়ে হুদাই ঘ্যানর ঘ্যানর করতে ইচ্ছা করতেসে না।আসল কথা হচ্ছে যেখানেই যান মানিয়ে নেয়ার সময় আপনার কাছাকাছি চিন্তা ভাবনার কিছু মানুষকে খুজে নিতে হবে।অবশ্য মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনার আগে দেখবেন তারাই আপনাকে খুজে নিবে।কেননা তাদেরও মানিয়ে নেবার একটা ব্যাপার আসে না!।কিন্তু এখানেও কিছু ভেজাল আসে.........
ধরা যাক আপনি যে ক্লাসে পড়াশুনা করেন সেই ক্লাসে আপনার মানিয়ে নিতে সাহায্য করা বন্ধুরা কেউই নাই।তখন আপনি কি করবেন?নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি আপনি হয়ত ক্লাসের সব থেকে অচেনা ছেলেটাতে পরিণত হবেন।
আবার ধরি আপনি প্রেম করা শুরু করলেন। প্রেমের শুরু থেকেই আপনাকে মানিয়ে নেয়া শুরু করতে হবে। সব কপোত কপোতি তো আর “Made for each other” টাইপ হয় না। তো আপনার করনীয়? প্রথম থেকেই আপনাকে বুঝতে হবে আপনার উনি(!) কি চান,কি পছন্দ করেন,কি করতে ভালবাসেন ইত্যাদি।
ধরুন বাইরে থাকতে থাকতে সেখানের বন্ধুদের সাথে থাকতে থাকতে বন্ধুত্বের ধরনটা পাল্টে গেছে।আপনার নতুন বন্ধুদের হয়ত মনের সুখে গালাগালি করতেন কিন্তু আপনার পুরাতন বন্ধু গোষ্ঠীর কাছে সেটা হবে বাড়াবাড়ি।
আবার মনে করেন আপনি বাসায় গেলেন ১ মাস কিংবা আর বেশী সময় পরে। আপনার অনুপস্থিতিতে বাসার কিছু নিয়মেও দেখা যাবে ব্যাত্যয়।যেমন ধরুন আগে আপনি সারারাত টিভি দেখতেন এখন আপনার বাসার টিভি ১১ টার মধ্যে বন্ধ।
বাইরে মানিয়ে নিতে যেয়ে আপনার কিছু অভ্যাস গড়ে উঠবে যেটাকে আপনি বাসায় এসে প্রকাশ করতে বেশ সঙ্কোচ বোধ করবেন। তাহলে উপায়? আরে ভাই এখানেও মানায় নেন না।
সব কথার শেষ কথা অ্যাডজাস্ট করা কিংবা মানিয়ে নেয়া যাই বলুন না কেন এটা জন্ম থেকে আমৃত্যু চলবে বলে আমার বিশ্বাস।যে যতটা সহজ ভাবে মানিয়ে নিতে পারবে সে ততটাই সাকসেসফুল হবে আর যে পারবে না সে পরাজিত শ্রেণীর মানুষ।
কে জানে(!) মানিয়ে নেয়া ব্যাপারটা না থাকলে হয়ত মানুষের জীবনে কোন টুইস্ট ই থাকত না।দিনের শেষে বোধ হয় এটাই সবাই দেখে কে কত সুন্দর ভাবে পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে।আরও স্মার্টলি বললে অ্যাডজাস্ট করতে পেরেছে।