মার্কিন নির্বাচনের ডামাঢোলে মোদির একটা সাহসী কাজ চাপা পরে গেল প্রায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি কালো টাকা, জাল টাকা এবং ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া টাকা ধরার ফন্দি হিসেবে হঠাৎ করে ১০০০ এবং ৫০০ রুপীর নোট বাতিল করে ব্যাংকে জমা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। ৮ নভেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে। যারা ১০০০ রুপী এবং ৫০০ রুপীর নোট জমিয়ে কালো টাকার পাহাড় বানিয়েছিলেন তারা প্রকৃত অর্থেই ধরা। অনেকে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জন্যও ব্যাংকে টাকা না রেখে ঘরে রেখেছিলেন, তারাও ধরা। সাধারণত কালো টাকার অর্থ বড় বড় নোটেই সংরক্ষণ করা হয়। তবে প্রকৃত কালো টাকার মালিকরা নগদে টাকা সংরক্ষণ করে কিনা সন্দেহ আছে। জমি, স্বর্ণ কিংবা ডলারেও বিনিয়োগ থাকতে পারে।
১০০০ ও ৫০০ রুপির নোট ব্যাংকে পরিবর্তন করে নতুন ৫০০ ও ২০০০ রুপির নোট গ্রহণ করা যাবে। বিপুল অংকের রুপি নতুন মুদ্রায় পরিবর্তন করতে গেলে অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তাই অবৈধ অর্থের মালিকরা বিপুল ক্ষতি মেনে নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকে চেঞ্জ করতে গিয়ে ধরা খেতে চাইবেনা নিশ্চয়ই। ছোটখাট সঞ্চয়কারীরা কিছুদিন ধৈর্য ধরে একটু কষ্ট করে হলেও চেঞ্জ করে নিতে পারবে।
কোনো পূর্ব ঘোষণা ব্যাতীত হঠাৎ এরকম সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের সাময়িক ক্ষতি হলেও দীর্ঘমেয়াদে ভারতের অর্থনীতির জন্য তা ভালোই হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। পর্যটক, মানি চেঞ্জার কিংবা লাগেজ ব্যবসায়ীদের সাময়িক ক্ষতি হবে। কিছুদিনের জন্য হাসপাতাল এবং রেলওয়েতে এ অর্থ লেনদেন করা যাবে।
বাংলাদেশে অনেকের হাতে কালো টাকা আছে। ভারতের এ ঘটনায় অনেকে সতর্ক হয়ে ৫০০ কিংবা ১০০০ টাকার মুদ্রায় কালো টাকা সংরক্ষণ নাও করতে পারে। তবে ছোট নোটে বিপুল পরিমাণ নগদ মুদ্রা সংরক্ষণ করাও ঝামেলার। আবার ছোট নোটের মুদ্রা বাজারে ঘাটতি হলে ধরে নিতে হবে এগুলো কালোবাজারীদের হাতে। সরকার ঐ ছোট নোটের মুদ্রা বাতিল করে দিলে কালোবাজারীরা ধরা খাবে। কালো টাকা জমি, স্বর্ণ কিংবা অন্য কোথাও বিনিয়োগ করলে দুদকতো আছেই। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকেও এরকম একটি সাহসী পদক্ষেপ আশা করতে পারি।
আমাদের অর্থমন্ত্রী প্রতিবছর বাজেট মৌসুমে কালো টাকা সাদা করার উপায় নিয়ে নানান প্রেসক্রিপশনের কথা বলেন। কোনোটাই কাজে লাগে না। কিংবা বলা যায় কালো টাকার মালিকরা নির্ভয়ে অর্থমন্ত্রীর প্রেসক্রিপশনকে অবজ্ঞা করেন। তাই মোদি সরকারের মত সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে কালো টাকাকে বিলুপ্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানাই সরকারের কাছে।