শিষ্য একদিন গুরুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, গুরু প্রেম কি?
গুরু বললেন, ঐ যে সামনে পাহাড় দেখছিস তার অপর পাশে এক অপূর্ব সুন্দর ফুলের বাগান আছে। বাগানের ঠিক মাঝখান দিয়ে একটা পথ চলে গেছে। তুই সেই পথ ধরে হেঁটে যাবি। যাওয়ার সময় পথের দুইপাশের ফুলগুলোর মধ্যে যেটা তোর সবথেকে ভাল লাগবে সেই ফুলটা তুলে নিবি। তারপর আমার কাছে ফিরে আসবি। তোর জন্য দুটো শর্ত –
১। পথ ধরে শুধু সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যেই ফুলগুলো পিছনে পরে থাকবে সেগুলো থেকে আর তুলতে পারবি না।
২। একটা ফুল তুলে ফেলার পর ফিরে আসবি, আর সামনে যাবিনা।
শিষ্য পাহাড় ডিঙিয়ে বাগানের দেখা পেল। যেদিকে চোখ যায় নয়ন জুড়ায়ে যায়, জগতের সব সুন্দর ফুল এখানে আছে। মুগ্ধ চোখে শিষ্য মাঝখানের পথ ধরে হেঁটে যায়। যেই একটা ফুল তুলতে যাবে তার মনে পড়ে দ্বিতীয় শর্তের কথা। একটা তুলে ফেললে ফিরে যেতে হবে। সামনে হয়ত আরো অনেক সুন্দর ফুল আছে। শিষ্য হাঁটতে থাকে আর ভাবে সবথেকে সুন্দর ফুল তুলে নিতে হবে। আরো অনেকদূর যাবার পর হঠাত তার মনে হয়, এই ফুলগুলো মলিন। পিছনের অনেক ফুল এর থেকে ভাল ছিল, কিন্তু প্রথম শর্তানুযায়ী পিছনে ফেরা যাবে না। আরেকটু সামনে গিয়ে পথের শেষ দেখা যায়। শিষ্য তখন বাদবাকী ফুলগুলোর মধ্যে মোটামোটি যা ভাল লাগে একটা ফুল তুলে ফেরার পথ ধরে।
গুরু জিজ্ঞেস করেন, বাগানে এটাই কি সবথেকে সুন্দর ফুল ছিল?
শিষ্য বলে, না গুরু। তারপর সবিস্তারে কাহিনী খুলে বলে।
গুরু তখন বলেন, এটাই প্রেম বৎস।
…
…
…
দশ বছর পর।
শিষ্য এসে গুরুকে জিজ্ঞেস করল, গুরু বিবাহ কি?
গুরু বললেন, ঐ যে সামনে পাহাড় দেখছিস তার অপর পাশে এক অপূর্ব সুন্দর ফুলের বাগান আছে। বাগানের ঠিক মাঝখান দিয়ে …
শিষ্য অস্থির হয়ে গুরুকে থামিয়ে দিয়ে বলে, গোস্তাকি মাফ হয় গুরু। বাকীটা আমার মনে আছে। শর্ত কি আগের দুইটাই?
গুরু বিরক্ত হয়ে বলেন, হুম, ভাগ মূর্খ কোথাকার!
শিষ্য চেনা পথে বাগানে চলে আসে। দশ বছর চলে গেছে, ফুলের সৌন্দর্য এতটুকু কমে নাই। শিষ্য পথ ধরে হাঁটতে শুরু করে। অল্প কিছুদূর গিয়ে একটা ফুল তার মনে ধরে। আরেকটু সুন্দর ফুলের খোঁজে সে সামনে আগায়। গতবারের ঘটনা তার ভাল মনে আছে। তাছাড়া এখন বয়স হয়েছে, বেশী হাঁটতে ইচ্ছা করে না। দু’কদম গিয়ে যে ফুলটাকে সুন্দর মনে হয় সে আর কিছু চিন্তা না করে তুলে নিয়ে আসে।
গুরু জিজ্ঞেস করেন, এত তাড়াতাড়ি ফিরে আসলি? বাগানে এটাই কি সবথেকে সুন্দর ফুল ছিল?
শিষ্য মাথা নেড়ে বলে, না গুরু। তারপর সবিস্তারে কাহিনী খুলে বলে।
গুরু তখন বলেন, এটাই বিবাহ হতভাগা