অনেকদিন ধরেই লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি, লিখছি। তবে তা নিজে নিজে। কাগজের পাতায় লিখি, কম্পিউটারের পাতায় লিখি। লিখে আবার নিজেই পড়ি। আবার মুছেও ফেলি কখনো সখনো। মনে হোল এর মাঝে একদিন। যা লিখলাম মাঝে সাঝে, ছড়িয়েতো দেয়া যায়? পড়তে দিলেইতো হয়? কেউ পড়ুক আর নাই পড়ুক, মনের মাঝে এক সান্ত্বনা, দিয়েছিতো পড়তে? কারো ভাল লাগতেই পারে! আবার নাও লাগতে পারে ভাল!
এই ভাবনাতেই এখানে লিখার চেষ্টা। ভাবনার প্রকাশ যদি কারো কারো সাথে ভাগ করে নেয়া যায়, ক্ষতি কি? শুরুতো করি। পরে কি হয় পরে দেখা যাবে। বিষয়বস্তুরতো আর অভাব নেই। কত কিছুই না প্রকাশ করা যায়। ভাবনা, বেদনা কিংবা চেতনার বহিঃপ্রকাশ! যা শুরু করলেই শুরু, যার বিস্তৃতি অনেক। লেখার, ভাবনার, চিন্তার বন্ধ জানাল বা দরজা খুলে যাবার! আর সেসবই সবার সাথে ভাগ করে নেবার! শুরু করা যায়, যার শেষ নেই।
সময় ফুড়িয়ে যে যায়!
কিছু কিছু বিষয় আছে লিখে বলা মুশকিল আবার বলেও বোঝানো যায় না সহজে, তখন ঝামেলা হয় বুঝাতে বা বুঝতে। নিজেকে কিংবা অন্য সবাইকে। লিখতে বসলে তো অনেক কিছুই লিখতে ইচ্ছা হয় তবে লেখা হয়ে উঠে না। বর্তমানে আমার জীবন দর্শন একটু অন্য রকম। ভাবনার বিষয় হলো যে এখন জীবনটাকে কয়েক ভাগে ভাগ করে ভাবতে আর পূরানো কথা ভেবে কিংবা মনে করে কি করলাম আর কি কি করা দরকার ছিল তাই মিলাতে চেষ্টা করি। ইচ্ছা হয় মিলাতে। অনেক কিছুই যেন মিলে না অনেক কিছুরই সাথে। মনে হতে পারে যে আমি হতাশ হয়ে এভাবে ভাবছি, আসলে কিন্তু তা নয়। ভাবনাটা এসে যায় যখন মনে হয় মানুষ আর কয়দিনই বা বাঁচে! আর তখনি আমাকে পেয়ে বসে হিসাব মেলানোর খেলাতে।
আগে মনে হত ডায়রীতে লিখি, করতামও তাই। তারপর এখানে লিখতে পারার পর মনে হল ডায়রীতে লিখে আর কি কাজ? একবারে কম্পিউটারে লিখে ফেললেইতো হয়। যেই ভাবা সেই কাজ। ভালই লাগে এখন লিখে যেতে আর হিসাবের খাতা খুলতে। হিসেবটা আসলে বড় কিছু না। মনের এক সান্ত্বনা যে কিছু করতে পারি আর না পারি স্মরন করে মন খারাপ তো করতে পারি বা নিজে নিজে খুশি হতে। সেই যে কোন খারাপ কাজ বন্ধ করার শক্তি না থাকলে চুপ করে মনে মনে ঘৃণা করার মত। কিছুই না করতে পারলে অথবা কোন কিছু ফেরানো না গেলেও নিজের কাছে, মনের কাছে অনুশোচনাও একটা বড় বেপার বলে আমি মনে করি।
আমি কোন বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিও নই যে আমার আত্মজীবনী লেখার প্রয়োজন আছে। আমার লেখা শুধুই আমার নিজের জন্য। দুই হাযার তেরর এই লেখা হয়তো কোন সময় আমি দেখব কিংবা আমার নাতি পুতির কেউ। তবে এটুকু বলতে পারি হয়তো কারো ভাল লাগতেও পারে। যাই হোক স্বাধীনতা পরবর্তী এই বেয়াল্লিশ বছর দেখলাম যে আমাদের কোন দপ্তর, ডিপার্টমেন্ট বা সংস্থা সম্পূর্ণ কাজ করেই না। প্রতিটি জায়গাতে গলদ। পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, রাস্তাঘাট, চলাচলকারী যানবাহন যাই হোক না কেন, সব জায়গায় গণ্ডগোল।
ঢাকা ছাড়া দেশের অন্যান্য শহরের কথা বাদই দিলাম। রাজধানী হিসাবে ঢাকাতে যেসব গাড়ী চলে তাতে প্রাইভেট গাড়ীর অবস্থা চকচকে আর সাধারন পাবলিক পরিবহনের অবস্থা ভয়াবহ! ছোট ছোট বাসের নামে যা চলে রাস্তায় তা দেখতেও জঘন্য আর যন্ত্রেরও লড়াদশা। যারা চালায় তাদেরও একই অবস্থা! প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই আছে। প্রতিকার চেয়ে গলা ফাটিয়ে ফেলছে আমাদের নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের মত কেউ। কার কথা কে শুনে? কারন কি এসবের? কারন এগুলি নিয়ন্ত্রন করে আওয়ামী লীগ বা বি এন পি যেই খমতায় থাকুক তাদের মন্ত্রী মিনিস্টাররা। বিরাট বখরা আসে এদিক সেদিক। তাই গরিব মানুষ রাস্তায় মরলেই কি আর সাধারন মানুষ গাড়ীতে চড়লেই কি? কারো কিচ্ছু আসে যায় না। আর আমরাও জাতি হিসাবে এমন বিশ্ব গাধা যে এদেরকেই আবার ভোট দিয়ে আনি! এখন আবারতো নতুন আইন হোল যে গাড়ী চাঁপা দিয়ে মারলেও সরাসরি ৩০২ ধারায় মামলা করা যাবে না শুরুতে। অনিয়মের এই দেশে যেখানে মন্ত্রীরা শাষকরা বলে যে অশিক্ষিত বা অর্ধ প্রশিক্ষিত ড্রাইভাররা শুধু রাস্তায় চিহ্ন বুঝলেই চলবে অন্য কিছুর দরকার নাই সেখানে আর বলার কি থাকে। কোথায় রাস্তার দুর্ঘটনা কমাতে চেষ্টা করে ভাল আইন বা প্রশিক্ষনের কথা হবে তা না করে বরং দুর্ঘটনা ঘটাবার জন্য প্ররোচিত করে যাচ্ছি আমরা। আমাদের জন্য যেন এগুলাই ভাল! শেরাম ভাল আর কি!
যেহেতু আমাদের নিজেদের বাড়ি তাই ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়। পানির অফিস থেকে লোক আসে, মিটার টিটার দেখে বাপ বা কাকাদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে চলে যায়। ঢাকা স্টেডিয়ামে আমাদের ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান ছিল। সেখানে ভ্যাট এর লোক আসে, পকেট ভারী করে চলে যায়। আমি মনে করতে পারিনা বাইরের কোন দোকান থেকে কিছু কিনে কবে ক্যাশমেমো নিয়েছিলাম। এখনো তাই একি অবস্থা। দোকানের ভ্যাট নিয়ে আমি ছোট কাকাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম একবার। জানতে পারলাম এরকম না করলে দুনিয়ার আরো ঝামেলায় জড়ায়ে দিবে। তাই আর সবাই যা করে তাই করেই জীবন আর জীবিকা। আমার মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছা হয় যে এগুলা আমরা কোথা থেকে পেলাম। ২০০ বছর ধরে দাবিয়ে গিয়ে ব্রিটিশরা আমাদের কি দিয়ে গেল! আমাদের অনেক বড় বড় নেতারা তাদের পূর্বসূরিদের আদর্শের কথা বলে কিন্ত নিজেরা মানে না কিছুই। দেশের জন্য কেউ ভাবে বা কিছু করে কিনা আমার বোধগম্য নয়। ধর্মীও ভাবে, সামাজিক ভাবে সব দিক দিয়েই ক্ষতি আমাদের অথচ মানছি না আমরা কিছুই। মনে মনে নিজে হাসি আর দুনিয়ার সবাই আমাদের কান্ড কারখানা দেখে হাসে। অবশ্য আমাদের দেশের লোকজন কেবলই বিনা কারনে হাসে! আগেও হাসত এখনো হাসে!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৩