somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

চীন ও ইন্ডিয়ার মধ্যে থুসিডাইডস ফাঁদ

১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত ৩ বছর ধরে ইন্ডিয়াতে চীনের রাষ্ট্রদূতের পদটি খালি। এটা চীনের সাথে ইন্ডিয়ার সম্পর্কের অবনতির একটা ইঙ্গিত দেয়। ইন্ডিয়া আমেরিকার দিকে সিদ্ধান্তমূলক ভাবে ঝুঁকছে।

ইন্ডিয়া চীনকে ভারসাম্যহীন করার জন্য আমেরিকার সাথে সামরিক সম্পর্ক উন্নত করেছে। জাপান, অস্ট্রেলিয়ার এবং আমেরিকার সাথে ইন্ডিয়া কোয়াড গঠন করেছে। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন চার-মুখী গ্রুপিং অর্থাৎ কোয়াডকে চীন "ইন্দো-প্যাসিফিক ন্যাটো" বলে নিন্দা করে।

গত মাসে হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঐতিহাসিক সফরের সময় আমেরিকা এবং ইন্ডিয়ার সম্পর্ককে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। আমেরিকা ইন্ডিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা, হাই-টেক, এবং রপ্তানি বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা দূর করে তাদের সম্পর্ককে বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে।

একজন আমেরিকান শীর্ষ কর্মকর্তা ইন্ডিয়াকে "বিশ্ব মঞ্চে সবচেয়ে বেশি চাহিদার খেলোয়াড়" বলে অভিহিত করেছেন এবং আমেরিকা ও ইন্ডিয়ার সম্পর্ককে বলেছেন, "বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।"

গত কয়েক দশক ধরে আমেরিকা বলতো, চীনের সাথে তাদের দেশের সম্পর্ক বিশ্বের দুটি দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এখন সুর পাল্টেছে, এটা একটা টার্নিং পয়েন্ট। ১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিক থেকে আমেরিকা চীনের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করেছে এবং চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তা করেছে। এখন চীন আমেরিকার প্লে বুক দিয়ে আমেরিকার সাথে খেলতে শুরু করেছে।

সম্পর্কের উন্নতি হলেও আমেরিকা ইন্ডিয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সাথে একমত না। যেমন ইন্ডিয়াতে মানবাধিকারের অপব্যবহার, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার সমালোচনা করতে অস্বীকার করা বা ইন্ডিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সাথে আমেরিকার নিরাপত্তা সম্পর্ক।

আমেরিকা অবশ্য ইন্ডিয়াকে এই প্রতিশ্রুত দিয়েছে যে রাশিয়ার সাথে ইন্ডিয়ার সম্পর্ক নিয়ে আমেরিকা কোন কথা বলবে না। ইন্ডিয়া নিজের মত করে রাশিয়ার সাথে তার সম্পর্ক নির্ধারণ করবে।

আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির কৌশল হচ্ছে যে আমেরিকা এবং অন্য দেশের মধ্যে সম্পর্ককে কোন একক ইস্যু দিয়ে বিচার করা যাবে না। ইস্যুটি যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন। বরং সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কটিকে মূল্যায়ন করা হবে। কারণ উভয় দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে বর্তমান সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বর্তমানে চীন যেসব চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে সেগুলি কীভাবে মোকাবেলা করা যায় সে সম্পর্কে আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এটি আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

এই কৌশলের অংশ হিসাবে আমেরিকা চীনের সাথে ইন্ডিয়ার সীমান্ত বিরোধে ইন্ডিয়াকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই সমর্থনের ফলে চীনের পক্ষে উত্তেজনাপূর্ণ সীমান্ত পরিস্থিতি সমাধান করাকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলবে।

এই মাসের শুরুর দিকে ভার্চুয়াল সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলনে, ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোদী চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইন্ডিয়ার এই মনোভাব দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

দিল্লিতে চীনা রাষ্ট্রদূতের অনুপস্থিতি তাদের পার্থক্যগুলি দূর করার পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা বাড়িয়েছে। যাইহোক, ইন্ডিয়া আমেরিকার সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীনের স্থান দখল করতে যাচ্ছে। এতে চীনের মত করে আমেরিকার সহায়তায় ইন্ডিয়ার অর্থনীতির উত্থান হবে। অবশেষে ইন্ডিয়ার সময় এসেছে। ইন্ডিয়া এই সুযোগ কতটুকু কাজে লাগাতে পারে দেখা যাক।

চীন এবং ইন্ডিয়া উভয় রাষ্ট্রের আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পরাশক্তি হওয়ার আকাঙ্ক্ষা আছে। ইন্ডিয়া বর্তমান সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আগামীতে চীনের জন্য প্রধান ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে। এটা কি চীন ও ইন্ডিয়ার মধ্যে থুসিডাইডস ফাঁদ শুরু?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:২৪
১৪৫ বার পঠিত
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

১. ১৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:০৪

বাকপ্রবাস বলেছেন: ওরা নি‌জে‌দের স্বার্থ দেখ‌ছে আর আমরা কার স্বার্থ দে‌খি বোঝা মুশ‌কিল

১৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৩৮

লেখক বলেছেন: রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুসারে প্রতিটি রাষ্ট্র গঠিত হয় সেই দেশের জনগণের স্বার্থ দেখার জন্য।
পৃথিবীতে মনে হয় একটা রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে অন্য রাষ্ট্রের স্বার্থ দেখার জন্য।
এইরকম রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা কি বলেন

২. ১৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: এখন বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা।
খুব শ্রীঘই বিশ্ব মোড়ল হবে চীন।

১৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৫১

লেখক বলেছেন: কোন মানুষের পক্ষে ভবিষ্যৎ বলা সম্ভব না।
তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চীনের বিশ্ব মোড়ল হওয়ার সম্ভাবনা একদম নাই।

তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম আগামী মোড়ল চীন।
তাতে বাংলাদেশের মানুষের উল্লসিত হওয়ার কারণ কি?

চীন এখনো সেই রকম শক্তি হয়ে উঠে নাই।
এতেই তার প্রতিবেশীদের 'ত্রাহি মধুসূদন' অবস্থা।

অথচ আমেরিকার দুই প্রতিবেশী কানাডা এবং মেক্সিকোকে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতেই হয় না।
এই দুই সীমান্তে অভিবাসী ঠেকানো ছাড়া আর কোন সামরিক উপস্থিত নাই।

অথচ চীনের প্রতিবেশী ইন্ডিয়া, সমুদ্রের অপর পারে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন ইত্যাদি দেশ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
আর মোড়ল হলে কি অবস্থা হবে ভেবে দেখুন।

তবে হবে না এটা নিশ্চিত।
এতগুলি প্রতিবেশির সাথে বিরোধ করে মোড়ল হওয়া যায় না।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

১৯৭২-এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ২০২৪-এর অর্জন না

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৯


৭২-এর রক্তস্নাত সংবিধান বাতিল করে । নিজেদের আদর্শের সংবিধান রচনা করতে চায় এরা‼️বাংলাদেশের পতাকা বদলে দিতে চায়! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো লাগেনা এদের!জাতিয় শ্লোগানে গায়ে ফোস্কা পরা প্রজন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। এইচএমপিভি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৩




করোনা মহামারির ৫ বছরের মাথায় নতুন একটি ভাইরাসের উত্থান ঘটেছে চীনে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপিভি নামের নতুন এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে দেশটিতে।চীনের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তান, আমেরিকা, জামাত-শিবির আমাদেরকে "ব্যর্থ জাতিতে" পরিণত করেছে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৭



আজকে সময় হয়েছে, আমেরিকান দুতাবাসের সামনে গিয়ে বলার, "তোরা চলে যা, ট্রাম্পের অধীনে ভালো থাক, আমরা যেভাবে পারি নিজের দেশ নিজেরা গড়বো। চলে যাবার আগে তোদের পাকী... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হয়তো কখনো আমরা প্রেমে পড়বো=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০০


পোস্ট দিছি ২২/১২/২১

©কাজী ফাতেমা ছবি

কোন এক সময় হয়তো প্রেমে পড়বো আমরা
তখন সময় আমাদের নিয়ে যাবে বুড়ো বেলা,
শরীরের জোর হারিয়ে একে অন্যের প্রেমে না পড়েই বা কী;
তখন সময় আমাদের শেখাবে বিষণ্ণতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×