১. পূর্বকথা: অগ্রণী ব্যংকের নিয়োগ পরীক্ষা শুক্রবার বিকাল ৪.০০ টায়। থাকি ফেনীতে। শুক্রবার সকাল ৬.০০ টায় রওনা দিলাম।ফেনী থেকে ঢাকা যেতে গড়ে ৫ ঘন্টা লাগে। ১০ ঘন্টা সময় নিয়ে বের হলাম। “আগে আগে” পৌছে যেতে চাই। পরীক্ষা বলে কথা! এত সাবধানতা কাজে লাগল। গৌরীপুর – দাউদকান্দিতে মহা জ্যাম। তিনটার কিছু আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছলাম। সরকারী তিতুমীর কলেজ, মহাখালী।
২. শুরুর আগে: হাজার হাজার পরীক্ষার্থী। এত পরীক্ষার্থী দেখেই বোধহয় কর্তৃপক্ষ এক ঘন্টার আগেই গেট খুলে দিয়েছে। চা খেয়ে কিছু সময় পার করে হলে ঢুকলাম। নির্ধারিত সিটে বসে পরীক্ষা শুরুর জন্য অপেক্ষা করছি। এসময় কয়েক জনের কাজকারবার দেখে ছোট বেলায় ফিরে গেলাম। স্কুলে থাকতে সামনের বেঞ্চে সিট পড়লে বেঞ্চ তুলে পিছনে নিয়ে যাওয়া হত। নিয়োগ পরীক্ষায় এমন হতে পারে ভাবাটা কষ্টকরই বটে। সেই অভুতপূর্ব দৃশ্যই দেখলাম! আসলে তখনো দৃশ্যের অনেকটা বাকি! পরীক্ষার উত্তরপত্র দেওয়া হয়ে গেছে এমন সময় ৪-৫ জন ছেলে সম্ভবত তিতুমীর কলেছের ছাত্র এবং আরও বেশী সম্ভবত ছাত্রলীগের ক্যাডার হলে ঢুকে নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষার্থীর কাছে গিয়ে বারবার অভয়বানী দিচ্ছিল। পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের কাছে গিয়ে “স্যার একটু দেখবেন। এরা আমাদের লোক” বলে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিল।কোন নিয়োগ পরীক্ষার হলে এভাবে প্রকাশ্যে বাইরের লোক ঢোকাও এই প্রথম দেখলাম!
শুরু: পরীক্ষা শুরু হল। কিন্তু একি! প্রশ্নের কোন সেট কোড নেই। সবার এক প্রশ্ন। এদিকে ছোট বেঞ্চে বসাইছে তিনজন করে! কর্তৃপক্ষ বোধহয় আমাদের “টিমওয়ার্ক” এর উপযোগী করে গড়ে তুলতে চাইছে পরীক্ষার সময় থেকেই! নাটকের চূড়ান্ত দৃশ্য শুরু হল এরপরই আমার রোল ...১০০ ঠিক তার পরের জন দেখি বড় স্ক্রিণের মোবাইল বের করে বৃত্ত ভরাট করছে! আহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ! বই দেখে নকল করা এনালগ কাম! আমরা না ডিজিটাল বাংলাদেশে! বাইরে সেই ৪-৫ জন ক্যাডার বারান্দায় দাড়িয়ে হৈচৈ করছে। বন্ধ দরজায় লাথি মেরে ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করছে। মনে পড়ল বেয়ন্ড দ্যা গেট (শুটিং ডগস) ছবির কথা!
৩. শেষ কথা: গতকাল ঢাকায় থেকে আজ আবার ফেনী চলে এলাম। বিভিন্ন জন আমার মতই অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন দেখলাম। এত কষ্ট করে এত টাকা খরচ করে ঢাকায় গিয়ে ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা দিলাম নাকি কারও সাজানো চিত্রনাট্যে অভিনয় করলাম?