জানি না অটোগ্রাফের পর পরিচালক কাম লেখক শ্রীজিতের কাছে আমাদের প্রত্যাশার পারদ কোন পর্যায়ে চড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এটুকু নিশ্চিত যে "বাইশে শ্রাবণ" সকলের প্রত্যাশা মিটিয়ে দেবে। এমন ফিল্ম কালেভদ্রে হয়।
আমি রিভিউ দিচ্ছি না, অতএব পরিচালনা বা স্টোরিলাইনের ক্রিটিসাইজের দিকে যাব না। শুধু গল্পটার একটা আভাস দিচ্ছি।
একের পর এক সিরিয়াল কিলিং এ বিধ্বস্ত কলকাতা শহর, ক্রমশ খুন হয়ে চলেছে শহরের নিচুতলার কিছু মানুষ- ভিখারি, দেহব্যবসায়ী। এই কেসের ভারপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর অভিজিৎ পাকড়াশীর (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) তো মাথা খারাপ হওয়ার যোগাড়। এতো কেসে তার সফলতা এসেছে, কিন্তু এই কেসে দীর্ঘ আট মাস ধরেও সে হালে পানি পাচ্ছেনা। গার্লফ্রেন্ডের সাথে ফালতু কারণে ঝামেলা লেগে যাচ্ছে। আক্ষরিক অর্থে একেই বোধহয় "লাইফ হেল হয়ে যাওয়া" বলে।
একই সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে পর্দায় চলতে থাকে ব্যর্থ হাংরিয়ালিস্ট কবি নিবারণ চক্রবর্তীর কাহিনী। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের সম্ভবত সবচেয়ে বিতর্কিত অধ্যায় হাঙ্গরিয়ালিস্ট মুভমেন্টের কিছু কথা ফুটে উঠেছে। কবির হৃদয়ের যন্ত্রণা, সমাজের প্রতি তীব্র ধিক্কার, উন্মত্তপ্রায় হয়ে রেলস্টেশানে দাঁড়িয়ে কবিতাগুলো হাওয়ায় ছুঁড়ে দেওয়া, যেন সমাজের মুখে কষে একটা থাপ্পড়! ওফ! গৌতম ঘোষ ছাড়া এমন চোখে মুখে অভিনয় কে করতে পারত?!
ওদিকে পুলিশের কর্তাব্যক্তি শ্রীবাস্তব (রাজেশ শর্মা) সিরিয়াল কিলিং এর ঘটনা নিয়ে চিন্তিত। বারবার তাঁর মনে আসছে একটাই নাম, যাকে বলা চলে সিরিয়াল কিলিং এর কেসে স্পেশালিস্ট। তাঁর এক কলিগের কথায় -এই কেস সলভ করার মত লোক সারা ভারতে বোধহয় ঐ একজনই আছেন।
শ্রীবাস্তবের মাথায় ঘুরতে থাকে অতীতের কথা, তার সেই বন্ধু ব্রিলিয়ান্ট হলেও মানসিকভাবে অসুস্থ প্রকৃতির, সব ক্রিমিনালকে সে ব্যক্তিগত শত্রু বলে মনে করে। উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ না পেলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে এনকাউন্টার করে নৃশংসভাবে মেরে ফেলতেও তার আটকায় না। এজন্যই তাকে সাসপেনশানে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই পারে............ সেই একমাত্র পারবে এই কেসের সমাধান করতে। আরও খুন হয়ে যাওয়ার আগেই তাকে আনতে হবে... যেভাবে হোক।
ব্যাস, আর নয়, এর বেশী জেনে ফেললে সিনেমার মজা থাকবে না, আর বেশী বলতে গেলে আমিও হয়ত গল্পের আসল চমকটা ফাঁস করেই ফেলব। তাই এখানেই স্টোরিলাইনের ইতি টানছি। শুধু সকলকে বলব সিনেমাটা দেখুন, ভাবনার প্রচুর উপাদান আছে। সিনেমার দু-তিন জায়গায় ছড়ানো ছিটানো আছে শেষে কি ঘটতে চলেছে তার একটা অস্পষ্ট ইঙ্গিত। ধরতে চেষ্টা করুন।
বিঃদ্রঃ- বাস্তবতা আনার জন্য সিনেমাটিতে কিছু অ্যাবিউজ আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৩:২১