বিবর্তনবাদ আধুনিক বিজ্ঞানের একটি প্রমাণিত সত্য, অতএব কাজের কথায় আসি।
বিবর্তনবাদের কয়েকটি মূল ভিত্তির কথা বলব, যেগুলির উপর বর্তমানের ডারউইনিজম এবং নিও ডারউইনিজম প্রতিষ্ঠিত........
১> প্রাণীর অত্যধিক প্রজনন হারঃ
প্রত্যেক জীবই অসংখ্য বংশধরের জন্ম দেয় এবং গুণোত্তর প্রগতিতে বংশবৃদ্ধি করে। একটি স্ত্রী স্যামন মাছ একটি প্রজনন ঋতুতে প্রায় ২৮,০০০,০০০ ডিম পাড়ে। একজোড়া মাছি পাঁচ মাসের মধ্যে ১৯১,০০০,০০০,০০০,০০০ টি মাছি উৎপন্ন করতে পারে
২> খাদ্য ও বাসস্থানের সীমাবদ্ধতাঃ
আপনারা শুধাবেন এতো মাছি যায় কই? এই বিশ্ব ছাড়া জীবদের বসবাসের অব্য কোন স্থান নেই এবং এখানেও খাদ্য ও বাসস্থান সীমাবদ্ধ বলে পৃথিবীর সীমাবদ্ধতাই জীবদের অনির্দিষ্ট ভাবে প্রজননের বিরুদ্ধে।
তাই অত্যধিক প্রজনন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও প্রতি প্রজাতির জীব সংখ্যা প্রায় দীর্ঘ সময় ধ্রুবক থাকে।
৩> অস্তিত্বের জন্য সংগ্রামঃ
এইবার দেখেন, এক ফুল দো মালীর কেস আপনারা জানেন, আমি বলব এক ফুল হাজার মালীর কেসের কড়চা। হ্যাঁ, খাদ্য বাসস্থান সীমাবদ্ধ, কিন্তু জীব বহুত। ফলে লড়াই লাগে। প্রতিযোগিতা চলে। এর আবার তিন প্রকার।
ক> আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম
খ> অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম
গ> প্রতিকূল পরিবেশের সাথে সংগ্রাম
৪> প্রকরণের উদ্ভবঃ
আচ্ছা বলেন তো, আপনার সন্তানের হয়ত আপনার বা আপনার পার্টনারের সাথে কিছু মিল আছে, কিন্তু তার কি কোন নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নেই? থাকতেই হবে।
আসলে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিটি জীবেই জনিতৃ জীব থেকে কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। একমাত্র সাদৃশ্য যমজ (identical twins) ছাড়া কোন দুটি জীবই এক প্রকারের হয় না।
৫> প্রাকৃতিক নির্বাচনঃ
দেখা গেছে অধিক প্রকরন যুক্ত জীবেরা পরিবেশের সাথে ভালোভাবে অভিযোজিত হতে পারে। কমযোগ্য বা অযোগ্য জীবেরা প্রাকৃতিক নির্বাচন পায় না। যেমন ধরুন দুই টাইপের জিরাফের স্পিসিস ছিল, একটার গলা লম্বা, একটার গলা খাটো, ফলে যখন মাটির কাছাকাছি এরিয়ার খাবার শেষ, তখন বড় গলার জিরাফরা গাছের নাগাল পায়, কিন্তু ছোট গলার জিরাফেরা তা পায় না, ফলে তারা প্রাকৃতিক নির্বাচন পায় না এবং লুপ্ত হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক নির্বাচন আবার তিন প্রকার---
ক> স্থিতিশীল নির্বাচন
খ> অভিমুখী নির্বাচন
গ> সংহতিনাশক নির্বাচন
৬> যোগ্যতমের উদবর্তন এবং নতুন প্রজাতির সৃষ্টিঃ
অস্তিত্বের সংগ্রামে যে জীবরা বেঁচে থাকে তাদের সুবিধাজনক প্রকরন বা বৈশিষ্ট্য গুলি অপত্যে সঞ্চারিত হয়। ফলে ঐ অপত্যরা সুবিধাজনক প্রকরণ গুলি নিয়েই জন্মায় এবং তারা আরও কিছু প্রকরণ সৃষ্টি করে যা আবার তাদের অপত্যে সঞ্চারিত হয়, এভাবেই এগিয়ে চলে বিবর্তন।
পাঠকগণ নিশ্চই লক্ষ্য করেছেন যে আমি প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম এই দুটি পয়েন্টের কিছু সাব পয়েন্টের কথা উল্লেখ করেছি। এই দুটি পয়েন্টকে বেস করে আরও ডিটেলে আমার পরবর্তী পোষ্ট দেব
আরও একটি বিষয় নিয়ে পোষ্ট দেওয়ার ইচ্ছা আছে, তা হল বিবর্তনের সপক্ষে পাওয়া প্রমাণগুলো উল্লেখ করে, যেমন শারীরস্থানিক প্রমাণ, জীবন্ত জীবাশ্ম জনিত প্রমাণ এবং আরও অনেক। সময় করে এই বিষয়েও পোষ্ট দেব।
ডারউইনের নিজের লেখা বইটা ডাউনলোড করে পড়ে নিতে পারেন---
ডাউনলোড লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১১ রাত ১:০২