আমরা আমাদের সমাজ বলতে কি বুঝি? এমন একটি সিস্টেম যেখানে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। বর্তমানে এই সংজ্ঞা পাল্টে হয়েছে এমন একটি সিস্টেম যেখানে একটি মেয়েকে আত্মহত্যা করতে হয় একটি ছেলের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ার জন্য! বেশি কিছু বলার নেই, আমরা সবাই এই ধরণের ঘটনা দেখতে দেখতে আজকাল অভ্যস্ত হয়ে গেছি। সেই একই সিরিজে আর একটি ঘটনা যোগ হয়েছে। প্রথম আলো থেকে সেটি শেয়ার করছি বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজে।
"আমার মৃত্যুর জন্য লিটন দায়ী।’ এই চিরকুটটি লিখে গত বৃহস্পতিবার বিষাক্ত কীটনাশক পান করে সোনিয়া আক্তার (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেয়েটির মৃত্যু হয়।
সোনিয়া আগৈলঝাড়ার পশ্চিম সুজনকাঠি গ্রামের দিনমজুর শাহ আলম হাওলাদারের মেয়ে। এ বছর সে আগৈলঝাড়া সদরের শ্রীমতী মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষা দেয়।
সোনিয়ার মা শেফালী বেগম, পশ্চিম সুজনকাঠি গ্রামের লোকজন ও পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের প্রভাবশালী প্রতিবেশী লিটন হাওলাদার (৩২) সোনিয়াকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে আগৈলঝাড়া সদরে আসার পথে লিটন সোনিয়ার পথ আটকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সোনিয়াকে হুমকি দেন লিটন। পরের দিন বুধবার সকালে সোনিয়া তার বড় বোন তানিয়া বেগমকে (২২) বিষয়টি জানায়। ওই দিন দুপুরে তানিয়া লিটনকে ডেকে ধমকে দেন। এ সময় তানিয়ার সঙ্গে লিটনের বাগিবতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে লিটন সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে তানিয়াকে কুপিয়ে জখম করেন। সোনিয়া এগিয়ে এলে লিটন তাকেও মারধর করেন।
পরে তানিয়া আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় ওই দিন বিকেলে সোনিয়ার পরিবার লিটনের আপন ভগ্নিপতি ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের কাছে লিখিত অভিযোগ করে হামলার বিচার চায়। এতে বখাটে লিটন আরও ক্ষিপ্ত হন।
তানিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সকালে লিটন আবার তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের গালমন্দ করেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সোনিয়া। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে গিয়ে সোনিয়া বিষাক্ত কীটনাশক পান করে।
বাড়ির ও স্থানীয় লোকজন সোনিয়াকে দ্রুত উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রাত সাড়ে আটটার দিকে সোনিয়ার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল শুক্রবার মরদেহটি বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও সুক্তারুল ইসলাম জানান, সোনিয়াকে বৃহস্পতিবার রাত সাতটা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসকেরা সোনিয়ার মৃত্যুসনদে লিখেছেন, ‘অজ্ঞাত বিষে সোনিয়ার মৃত্যু হয়েছে’। ধারণা করা হচ্ছে, সোনিয়া কীটনাশক-জাতীয় কিছু পান করেছে।
পুলিশ গতকাল দুপুরে পশ্চিম সুজনকাঠি গ্রামে সোনিয়াদের বাড়ি গিয়ে পড়ার টেবিল থেকে সোনিয়ার হাতের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করে, যাতে লেখা ‘আমার মৃত্যুর জন্য লিটন দায়ী।’
এদিকে সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, প্রভাবশালীদের হুমকির মুখে তাঁরা মামলা করার সাহস পাচ্ছেন না। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে ওই মহলটি।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন জানান, বিষপানে নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে। তবে যৌন হয়রানি বা আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে সোনিয়ার পরিবার থেকে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। ঘটনা তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বখাটে লিটনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তাঁর ভগ্নিপতি ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান বলেন, সোনিয়ার পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছিল। লিটন সোনিয়াকে উত্ত্যক্ত করেননি।"
সূত্রঃ প্রথম আলো
মিজভী সরকার বাপ্পা ভাই রংমহলের একটি পোস্টে এই ব্যাপারটি আমাদের জানান। তাও আমি সামুতে দিলাম। কেন? যাতে আপনারা পারেন বাঁধ ভেঙ্গে দিতে। হ্যাঁ আপনারা, আপনি, যিনি এই মুহূর্তে আমার ব্লগ পড়ছেন তিনি। তাঁর হাতেই আমাদের ভবিষ্যৎ! সরকার-পুলিশ এর সিংহভাগ এই ইভটিজারদের ধামাধরা। কিন্তু তারও উপরের অথরিটি আপনি। জনমত গড়ে তুলুন। আপনিই সর্বোচ্চ বিচারক। স্বপ্নেও কোন ইভটিজার কে ক্ষমা করবেন না। যারা নিজেদের বিকৃত কামনা চরিতার্থ করতে চেয়ে এই নিষ্পাপ মেয়েদের সুস্থ ভাবে বাঁচার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তাদের ক্ষমা নেই, ক্ষমা নেই, ক্ষমা নেই।