# আমার কিছু ভাল লাগে না!
- কি ভাল লাগেনা?
# কিছুই ভাল লাগে না; খেতে, ঘুমোতে, টিভি দেখতে..কিচ্ছু না, সব বিরক্তিকর!
- হুম, তো আমি কি করতে পারি?
# একটা ঔষধ লিখে দিন।
- ভাল লাগার ঔষধ?
# হুম, ড্রাগ-ফ্রাগ কিছু একটা লিখে দেন!
- ড্রাগ নিতে চান? ভাল লাগবে সেটা?
# কি জানি; কিন্তু মুক্তি দিন আমাকে এই "ভাল না লাগা"র বিরক্তি থেকে?
-শেষ কবে ভাল লেগেছিল খেতে?
# মনে পরছেনা ঠিক;.।.।.।। মনে হয় সাজিয়ার বিয়েতে; কাচ্চি ছিল, রোস্টেড আলু সহ, সাথে চাটনি! আলু বোখারার চাটনি!
-খাবেন নাকি কাচ্চি; আনিয়ে দেই?
# না, দরকার নেই; ওটা এক বছর আগে খেয়েছিলাম মনে হয়; এখন খেতে ইচ্ছে করে না!
- সাজিয়া কে?
# আমার বন্ধুর ছোট বোন। আমাদের দুই বছরের ছোট।
-হুম, দেখতে কেমন?
# ভালই, মানে ঠিক ঠাক; অবশ্য মুটিয়ে গেছে এখন
- সাজিয়ার প্রিয় রঙ কি ছিল?
# কেন? ও আচ্ছা, আপনি কি আমাকে ছ্যাক খাওয়া পাবলিক মনে করছেন? .।.।.।হাসবেন না; আমি ওকে অনেক স্নেহ করতাম, প্রেম নয়।
-দুঃখিত, কাচ্চির বর্ননা শুনে খেতে ইচ্ছে করছে; আমি আনাই, একসাথে খেতে খেতে গল্প করি?
# গল্প করতে আসি নাই; একটা ঔষধ লিখে দেন, চলে যাই।
-আচ্ছা আসুন তাহলে, অবশ্য নিচের হোটেলের কাচ্চি টা খারাপ না, সাথে বোরহানি আছে, বিল নাহয় শেয়ার করলাম?
# সরি.।।। আসলে সব কিছুতে বিরক্ত লাগে; কিছু মনে করবেন না, চলুন কাচ্চি খেতে যাই।
-যেতে হবে না, আনিয়ে দিচ্ছি। মোখলেস, দুইটা কাচ্চি নিয়ে আয়; এক্সট্রা মাংস আর আলু; সাথে চাটনি, আর বোরহানি; ম্যনেজারকে বলিস বিল লিখে দিতে।
# আপনার কথা শুনে খেতে ইচ্ছে হচ্ছে বেশ।
-হা হা, ভাল লাগছে খাবার কথা ভাবতে?
# হুম, তা লাগছে
-আর কি কি ভাল লাগত?
# আকাশ ভাল লাগত, ছোট ছোট বাচ্চা ভাল লাগত, বই ভাল লাগত, ঘুমোতে ভাল লাগত.।.।.।
- এখন আর ভাল লাগে না?
# লাগে; না, আসলে ঠিক জানিনা; মানে ভাবিনি ঐভাবে। ঘুম হয়না ঠিক মত। অনেক যন্ত্রনা হয় মাথায়।
-মাথা ব্যথা?
# না, ঠিক ব্যথা নয়; চাপ চাপ কষ্ট!
-কবে থেকে?
# অনেকদিন; আমাকে একটা ড্রাগ লিখে দিন প্লিজ। আর কাচ্চিটা মানা করে দিন!
-হুম, ঠিক আছে। আপনাকে একটা ঔষধ লিখে দিচ্ছি, তবে কাজ হবে না মনে হয়!
# কেন, ঔষধ কাজ করবে না কেন?
-আপনার কোন অসুখ নেই; সেইজন্য।
# কি হয়েছে আমার?
-ভয় নেই, অনেকেরই এটা হয়; আসলে আমারো হয়েছিল। এটা রোগ নয়; এটা সেরে ওঠার লক্ষন!
#কি বলতে চান?
-নিজের সাথে প্রতারনা বন্ধ করুন; কষ্ট কমে যাবে।
# কি প্রতারনা?, কি বলতে চান, খুলে বলুন।
- হুম ঠিক আছে আপনি খান, আমি বলছি
আমরা প্রত্যেকেই আলাদা, আমাদের চাহিদা আলাদা, আমাদের আনন্দ আলাদা। তবে একটি জিনিস এক। সেটা হল আমাদের আত্মিক শুদ্ধতা। আমাদের জন্ম হয় শুদ্ধ আত্মা নিয়ে। সময়ের সাথে সাথে আমরা নিজেদের আত্মার শুদ্ধতার সাথে প্রতারনা করতে শুরু করি। শুরুতে আমরা বুঝিনা, কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের আত্মার ক্ষয় হয়। একসময় আমাদের শরীর বেঁচে থাকে, আত্মা মরে যায়।
তবে এটাই শেষ নয়; আত্মাকে আবার বাঁচিয়ে তোলা যায়। কান পাতুন, আপনার আত্মার বেঁচে থাকার আকুতি শুনতে পাবেন। সারা দিন তার ডাকে। সব ঠিক হয়ে যাবে
আবার বাঁচুন, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে!
-কাচ্চিটা কেমন ছিল ভাই?
#অসাধারণ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩