৭০-৮০ দশকে আফগানিস্তানে মুজাহিদরা যখন রাশিয়ার সাথে লড়ছিল, তখন বন্ধুর মত তাদের অস্ত্র আর অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে আমেরিকানরা। রাশিয়ানরা তখন আমেরিকানদের শত্রু ছিল, তবে এখন বন্ধুও নয় আবার প্রকাশ্য শত্রুও নয়; স্নায়ু যুদ্ধের শুরু হয়েছে তাদের মধ্যে। মুজাহিদরা এরপর আল-কায়েদা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে; আমেরিকানদের বানিয়ে দেয়া গুহায় লুকিয়ে থাকে এবং ৯/১১ তে আমেরিকায় হামলার দায় স্বীকার করে নেয়। যদিও আল-কায়েদা নেতা বিন লাদেন আফগানিস্তানে থাকতেন এবং পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকতেন, তবু ৯/১১ এর প্রতি উত্তরে আমেরিকা আফগানিস্তান-পাকিস্তান থেকে ১০০০ মাইল দূরে ইরাকে বোমা ফেলে সাদ্দাম হোসেনকে মারার জন্যে। সাদ্দাম হোসেন আর বিন লাদেনের মধ্যে মিল ছিল শুধু মুখের ভাষার এবং তারা দুজনেই একসময় আমেরিকানদের বন্ধু ছিল। বিন লাদেন আমেরিকানদের শত্রু হয়ে পড়েন যখন আমেরিকানদের বন্ধু রাষ্ট্র সৌদি আরবের নাগরিক হয়েও বিন লাদেন প্রথমবার ইরাক হামলার সময়ে ইরাকিদের সাহায্য করতে চেয়েছিলেন। আমেরিকানরা বন্ধু সাদ্দাম হোসেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল যখন সাদ্দাম শিয়া অধ্যুষিত ইরানের উপর হামলা চালিয়েছিল। এদিকে হামাস এবং হিজবুল্লাহও আমেরিকানদের বন্ধু ছিল কারণ তারা আমেরিকানদের শত্রু সাদ্দামের বিরুদ্ধে লড়েছিল ইরানের হয়ে; যারা তখন আমেরিকানদের বন্ধু ছিল যখন শাহকে ক্ষমতায় বসায় আমেরিকানরা; কিন্তু এখন শত্রু। সাদ্দাম হোসেন আমেরিকানদের শত্রু হয়ে পড়ে যখন সে কুয়েত দখল করে আমেরিকান বন্ধু রাষ্ট্র সৌদিআরব দখলের পাঁয়তারা করতে থাকে; যারা সুন্নি রাষ্ট্র। সিরিয়ার আসাদের বিরুদ্ধে যারা যুদ্ধ করছিল তারাও সুন্নি ছিল তাই বিদ্রোহীদের আমেরিকানরা অস্ত্র আর গোলাবারুদ সরবরাহ করে। অবশ্য আসাদও আমেরিকানদের বন্ধু ছিল এবং একসময় এই বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে আমেরিকানদের সাহায্য পায়! এই বিদ্রোহীরা ধীরে ধীরে এই এস এ রূপান্তরিত হয়, যাদের আমেরিকানরা একসময় সমর্থন করত তবে এখন শত্রু মনে করে; এবং বিমান হামলা চালায়। হামাস আর হিজবুল্লাহ দেরও আমেরিকানরা এখন শত্রু মনে করে কারণ তারা আমেরিকানদের বন্ধু রাষ্ট্র ইসরায়েল এর শত্রু।
(এক আমেরিকান সাংবাদিকের ফেবু স্ট্যাটাস পড়ে লিখতে ইচ্ছে হল)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:১৬