somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার নির্বাসন: সেন্ট্রাল এয়ার ফোর্স মিউজিয়াম

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার নির্বাসনের সবচাইতে উল্লেখযোগ্য অংশ গুলো কখনও লেখার অক্ষরে তুলতে পারিনা!
যেমন রেল গাড়িতে দেখা এক ফুটফুটে বালিকা, তার বাবার সাথে খুনসুটি আলাপে মেতে ছিল।
অথবা ৬০ কি ৭০ বছরের দুই বুড়ো বুড়ি জড়াজড়ি করে হাটছে!
কিংবা প্রেমিক যুগল দুনিয়া ভুলে একজন আরেকজনের চুলে বিলি কাটছে!

হায়; সব কিছুতেই ভাললাগা আর এক দীর্ঘশ্বাস আমার! কবে ফিরব দেশে!!

হতাশা গুলোকে বাক্স বন্দী করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন দেখে এবার বের হলাম রাশিয়ানদের ঐতিহ্য দেখতে। মস্কো থেকে ৪০ কিঃমি দূরে মোনিনো এয়ার বেসে রাশানদের Central Air Force Museum। পৃথিবীর সবচাইতে বড় এই এভিয়েশন মিউজিয়ামে রয়েছে ১৭৩ রকমের বিমান। যার কিছু আবার পরীক্ষামূলক। cold war এর সময় দুই পরাশক্তি মেতে ওঠে কে কাকে ছাপিয়ে যাবে! তাদের এই প্রতিযোগিতার জ্বলন্ত ফসল চোখের সামনে দেখে কিছুটা ঈর্ষা অনুভব করলাম।

পরিচয় হল পৃথিবী বিখ্যাত কিছু বিমানের সাথে; আজকের লেখায় আমি সেগুলোর কিছুটা তুলে ধরতে চেস্টা করছি।

যাবার আগেরদিন গুগুল মামার কাছ থেকে এই ছবিটা নামিয়েছিলাম।



ভেতরে ঢুকবার মুখেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। বিশাল বপু নিয়ে দারিয়ে আছে Mil Mi-12 (Homer)

এত বড় হেলিকপ্টার আগে দেখিনি কখনও। ১৯৬ জন যাত্রি আর ৪০০০০ কেজি মাল বহনে সক্ষম ছিল এটি।



এটি বানান হয়েছিল ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যলাস্টিক মিসাইল পরিবহন করার জন্যে। যেটার মাথায় নিউক্লিয়ার ওয়ার হেড থাকে।

রাশানরা সবসময় বিশ্বাস করত বড় এবং শক্তিশালী যুদ্ধ যান বানালেই তারা জিতে যাবে। শব্দের গতির চয়ে দ্রুত গতির বিমান তৈরির জন্যে একের পর এক বিমানের নকশা তারা করে গিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সফল বোম্বার হল Tupolev Tu-22M ,যার নিক হচ্ছে Backfire।



রাশানরা এই বোম্বার নিয়ে স্নায়ু যুদ্ধের সময় আমেরিকানদের নেভী ফ্লীটের উপর মক আপ এটাক চালায়। তখন ১৯৭০ সাল। টেনশন ছিল তুঙ্গে। এই বোম্বার বিমানের গতি হল শব্দের প্রায় দ্বিগুণ। ২৪০০০ কেজি বোমা এবং মিসাইল বহনে সক্ষম ছিল এটি।

পরের বিমানটির বিশাল বপু ভয় পাবার মত। Myasishchev M-50 বিমানটি পরীক্ষামূলক ছিল শুধু। চারটি শক্তিশালী ইঞ্জিনের পাশাপাশি ৩০০০০ কেজি গলাবারুদ বহনে সক্ষম ছিল এটি।



এই বিমানটি রাশিয়া ব্যবহার করেনি কারন তখন তারা ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যলাস্টিক মিসাইল এর উন্নতি সাধনে তাদের মনযোগ দিয়েছিল,

এর পরে যে বিমানটি দেখে মুগ্ধ হলাম সেটি হল Sukhoi T-4

পুরো টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি। অদ্ভুত নাক। শুধু মাত্র ল্যান্ডিং এর সময় এর পাইলট বাহিরের জগত দেখতে পেত। শব্দের তিন গুন বেগে উড়বার জন্যে তৈরি ছিল এটি। কিন্তু স্নায়ু যুদ্ধের ঐ পর্যায়ে এটার গুরুত্ব কমে যাবার কারনে আর তৈরি হয়নি এই বিমানটি। এর টেস্ট ফ্লায়িং করেছিল রাশিয়ার বিখ্যাত বিমান ডিজাইনার সারগেই ইলুশিনের ছেলে ভ্লাদিমির ইলুশিন। সারগেই ইলুশিনের সম্পর্কে আলাদা করে লিখবার ইচ্ছে আছে। পরের কোন এক পর্ব শুধু এই মহান ডিজাইনারের জন্যেই উৎসর্গ করব ভাবছি।
Sukhoi T-4 এর উড়ার একটা দুর্লভ ভিডিও এখানে শেয়ার করছি।

এরপরে চলে আসলাম আমার প্রিয় ফাইটারের রাজ্যে। সার বেঁধে দাঁড়ান আমার শৈশবের গল্পে পড়া মিগ সিরিজের বিমান গুলো।



সামনের পর্বে শুধু মিগ আর সুখয় এর গল্প থাকবে।

আর আমার ছোটবেলার নায়ক মাসুদ রানা যে বিমানটি চুরি করে দেশে এসিছিল; তার গল্প হবে একটু আলাদা করে। স্বপ্নের বিমান চোখের সামনে দেখে সার্থক হয়েছি, আর ধন্যবাদ দিয়েছি কাজীদাকে; তার বর্ণনার মতই সুন্দর আমার স্বপ্নের বিমানটি। মিগ-৩১!!

সব শেষে বোনাস হিসেবে এই ভিডিওটাদিলাম! আশা করি ভাল লাগবে


চলবে.।.।.।।।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৪
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×