শান্তির অহিংস বানী প্রচার কারীদের আসল সুরত
তার নাম ****, পেশায় ক্যামিকেল ইঞ্জিনিয়ার বর্তমানে চাকুরী ছেড়ে পরিবার সহ ছোট ব্যাবসা চালাচ্ছেন। বিশ বছরেরও বেশি সময় যাবত আমেরিকার এই জঙ্গলে (আমার মতে) বসবাস করছেন। ঘরোয়া ভোজসভায় অনেক সুশীলদের ভিড়ে ওনার সাথে সাক্ষাৎ। বাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করতেই বেশ জোর দিয়ে বললেন বর্মা (মিয়ানমার) আমার সাথে আলাপচারিতার কিছুক্ষনপর অন্দরে মহিলাদের মজলিস থেকে বউ- শাশুড়ি কে বেশ উৎসাহ নিয়ে ডেকে আনলেন।
কি ব্যাপার এই মহিলাকে তো একটু আগেই দেখেছিলাম, গাড়ি পার্ক করে বেশ সুন্দর ইংরেজীতে অন্য একজনের সাথে কথা বলছিলো। এখন বুঝতে পারছি আসল রহস্য কি? উনি বিগত পনের-বিশ বছরে ইংরেজী আয়ত্বে এনেছেন তবে প্রমিত বাংলায় অসমর্থ। কথা শুরু হওয়া মাত্রই চট্টগ্রামের খাস আঞ্চলিক বর্ষণ শুরু। মূল মজলিশ থেকে একটু দূরে দাড়িয়ে কথা বলা সত্বেও অনেকেই খানিকটা অবাক হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন কিছুক্ষন, আসলে বলতে হবে ওই মহিলার দিকে। কারণ উনাকে নাকি বিগত একযুগে কেউ বাংলায় কথা বলতে দেখেন নি!!!! যাইহোক ওনারা আইক্কাবের (আকিয়াবের) আদি বাসিন্দা। নব্বইয়ের শুরুতে অ্যামেরিকায় স্থায়ী হন।
গতবছরে আরাকানে (রাখাইয়নে) মুসলমানদের উপর শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কিছুকাল বিরতি দিয়ে আবার ফুঁসে উঠেছে। এটি বর্তমানে পৃথিবীর চলমান জাতিগত সংকট গুলোর মধ্যে অন্যতম। বেশকিছু দিন যাবত আমরা সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর সাইট গুলোতে বাংলাদেশের দক্ষিন-পূর্ব সীমান্ত ঘেঁষা মায়ানমারের রাখাইয়ন রাজ্যে মধ্যযুগীয় বর্বরতার আধুনিক সংস্করণ দেখছি। দেখছে প্রবাসী বাংলাদেশী সহ সারা বিশ্বের মানুষ। তবে অন্য অনেকের তুলনায় আমার অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা খানিকটা ভিন্ন। বিভিন্ন ডকুমেন্টরি বা সংবাদের ক্লিপসে তাদের আর্তনাদ বুঝার জন্য অন্যদের মতো আমাকে সাব টাইটেল বা তর্জমার আশ্রয় নিতে হয় না। আমি বুঝতে পারি তাদের আত্ন ক্রন্দন।
ব্রিটিশ কতৃক পৃথক হয়ে রাজনৈতিক সীমান্তের বাহিরে থাকায় আজ তাদের এই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। ব্রিটিশ কলোনাইজেশনেরও বহুকাল আগ থেকে চট্টগ্রামের মানুষ জীবিকার উদ্দেশ্যে রেঙ্গুন ও আকিয়াব গমন করতো। বাংলাদেশে লুঙ্গির আগমন অনেকটা এই রুট দিয়ে। রাখাইয়ান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বসবাস সেই অবিভক্ত আকারান শাসনামল থেকে। তাদের ইসলাম ধর্ম গ্রহনও আমাদের সমসাময়িক সেই নৌ-পথে আউলিয়াদের আগমনের মাধ্যমে। তাই জাতিগত ও ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে যৌক্তিকভাবে রাখাইয়ান রাজ্য অবিভক্ত চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের অংশ হওয়ার কথা। কিন্তু ব্রিটিশ প্রভু বলে কথা। আর কতো কাল ভারতবর্ষের মুসলমানদের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের আফটারম্যাথ ভোগ করতে হবে তা একমাত্র আল্লাহ ই জানেন।
তবে এখানে পেট্রো ডলারের হারেম শরীফে বসবাসকারী মুসলিম বিশ্বের শাসক কিংবা ও আই সি’র মৌন ভুমিকা আমাদের খানিকটা তাড়িত করে। আন্তর্জাতিক ইস্যু হওয়া সত্ত্বেও জাতিসংঘ সহ অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠন গুলোর অবস্থান বেশ ন্যাক্কার জনক। একজন মালালার বই প্রকাশ করে সারাবিশ্বের মানুষের কাছে আপনাদের ফিরিস্তি বয়ানের চেয়ে এই সময় আরাকানের রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো অধিক জরুরী ও মানবিক। কিন্তু আপনাদের চোখে প্রতিবেশী ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের বাংলাদেশ ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে না!!!! আর আজকাল মুসলিমদের উপর যে কোনো ধরণের হামলা অঘোষিত ভাবে জায়েজ। এমন কি আমাদের দেশ সহ বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অনেক বুদ্ধিজীবীরাও তাই মনে করেন। সোজা কথা “গিভ দ্যা ডগ অ্যা ব্যাড নেইম অ্যান্ড কিল”
ফুট নোটঃ
জীব হত্যা মহাপাপ তবে মুসলিম হত্যা মহৎ কাজ।
সুকি শান্তিতে নোবেল পায়, দালাইলামাও নাকি আজকাল চিকেন বার্গার খায়