অতিথি ছবি
বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা নামক স্থানে ঐতিহাসিক সোনাকান্দা দূর্গটির কথা প্রথম জানতে পারি মুনশীগঞ্জের ইদ্রাকপুর জলদূর্গের পরিচিতি ফলকে। তারপর থেকেই যাবো যাবো করছিলাম। সেদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে দূর্গটি দেখে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। ক্যামেরা আর ১ বোতল পানি ব্যগে নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম।
গুলিস্তান থেকে ঊৎসব, বন্ধন ও আসিয়ান এই ৩টি পরিবহন নারায়নগঞ্জ যায়। আরো কোনো পরিবহন চলে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমরা গিয়েছিলাম বন্ধন পরিবহনে। বাসের কন্ডাকটারকে গন্তব্য বলাতে সে বলল গাড়ী এক্করে শেষ ইস্টপিজে নিয়া যহন স্টার্ট বন্ধ কইরা কমু সবাই নামেন, তহন নাইম্যা যায়েন। তথাস্তু !
ভাড়া নিল ২২ টাকা। রাস্তা মোটামুটি ভাল। সময় লাগল ১ ঘন্টার কিছু বেশি। বাস থেকে নেমে যে কাউকে বললে বন্দর ঘাটের রাস্তা বাৎলে দেবে। আমদেরকে অবশ্য বাসের কন্ডাকটারই সাহায্য করেছিল। ঘাটে গিয়ে দেখি বিস্তর নৌকা। জনপ্রতি মাত্র ২ টাকায় আমরা ওপারে গেলাম।
ওপারে গিয়ে পরলাম বিপদে। কোনো রিক্সাওয়ালাই দেখি সোনাকান্দা দূর্গ চেনেনা। এমন সমস্যায় এর আগেও অনেক জায়গায় পরেছি। তাই খুব একটা অবাক হলাম না। শেষমেষ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের কথা বলাতে কাজ হলো। ভাড়া ঠিক হলো ২০ টাকা। ২০ টাকায় কাটয় কাটায় ২০ মিনিট পরে নামিয়ে দিল দূর্গের সামনে।
আমার একমাত্র ভ্রমন সঙ্গী।
ভেতরের মাঠে পেলাম
সোনাকান্দা দূর্গটি বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম ঈশা খাঁ তৎকালীন সময়ে ব্যবহার করতেন। বর্তমানে দূর্গটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংরক্ষিত। দূর্গটি বহুবার মেরামত করা হয়েছে। চতুস্কোন আকৃতির এই দূর্গটি লম্বায় ৮৬ দশমিক ৫৬ মিটার এবং প্রস্থে ৫৭ মিটার। এর চারপাশে ১ দশমিক ৬ মিটার পুরু ও ৩ দশমিক ৫ মিটার উচুঁ সুরক্ষা প্রাচীর আছে যা এখনও প্রায় অক্ষত। চতুস্কোন আকৃতির প্রতিটি কোনায় গোলাকৃতি মঞ্চ আছে। আর পশ্চিম দেওয়ালের মধ্যবর্র্তী স্থানে আছে দূর্গের মূল বেদী। দূর্গটিতে ঢোকবার জন্য উত্তর দিকে ১টি প্রবেশ দ্বার আছে। বাংলার তৎকালীন সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ১৭ শতকের মধ্যভাগে এই দূর্গটি নির্মান করেন।
দূর্গের কাছেই একটা গাছে একটা ঘুড়ি আটকে আছে।
দূর্গের বাইরে লাটিম সমেত একটি কিশোর।
দূর্গটি দেখা শেষ করে আবারো রিক্সা নিলাম। এবার গন্তব্য কদম রসুল দরগাহ্। তবে সে গল্প আজ বলব না। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।
কৃতজ্ঞতা ঃ বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, অতিথি ছবি ও তথ্যের জন্য - বাংলাভাষা (বাংলাদেশ ট্যুর এন্ড ট্রাভেল গাইড), অত্র এলাকাবাসী।
ইন্টারনেটের সমস্যার কারনে এই পর্যন্ত ৩বার আপলোড হলো। তথাপি দুঃখ প্রকাশ করছি। যারা ১ম বার মন্তব্য করেছিলেন তাদের ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:২৮