অনেকেই বলবেন আরে ভাই, নাটকের পেছনে লাগলেন কেন? আমি নিশ্চিত নই, তবে হতে পারে আমার মতন অনেকেই বিদেশ-ভূইয়ে থেকে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে কিংবা সিডি কিনে অবসরে দেশের দৃশ্য দেখে আনন্দ পান।
কিন্তু আজকাল নাটক দেখে বড়ই হতাশ লাগে-
-নাটকের নাই কোন নির্দিষ্ট কাহিনী বা উপন্যাসের ভিত্তিতে তো নয়ই। এক সময়ে যেমন সংসপ্তক, অয়োময় ইত্যাদির কথা বলা যায়।
- একই অভিনেতা বিভিন্ন নাটকের সিরিয়ালে বিভিন্ন চরি্ত্রে এবং সব চরিত্রই একই ভাবে অভিনয় করে চলেছেন। পাশাপাশি অপটু পার্শ্ব চরিত্রগুলো বাদই দিলাম। ভাবতে পারেন, আসাদুজ্জামান এর ছোট মির্জা ও বাকের ভাই নাটক একই সময় প্রিমিয়ার হলে কেমন হতো?
- নাটকের কোন সেট নাই। ডিজিটাল যুগে যেকোন জায়গায় চিত্রধারণ ও শব্দ গ্রহণ করা যায় সহজেই। তাই বলে একই বাড়িতে একই সাজে নানা নাটকের কথা ১০ বছর আগেও ভাবা হত কি? এট্টু খরচ করেন ভাই। নাটকের ভাল সেট বানান।
- নাটকের জন্য কপিরাইট করা মিউজিক চুরি (তারা বলে সংগৃহিত)। আগে প্রতিটি নাটকের জন্য থাকতো সেই নাটকের জন্য প্রযোজ্য একটি থিম মিউজিক। সেটি বানাতেন অবশ্যই নাটকের সংগীতকার। আর আজকাল, পরিচালক (তিনি পাশাপাশি প্রযোজক, নায়ক, ক্যামেরাম্যান ইত্যাদি) নিজেই বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগীত কপি করে বানিয়ে ফেলেন নাটকের থিম ও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং একই মিউজিক বার বার আগায়-মাথায় চলতেই থাকে।
-একই কাহিনী বার বার রিপিট। পৌরাণিক কাহিনী, ছোটদের গল্প, ইতিহাসের কাহিনী, কল্প-কাহিনী, থ্রিলার বলে যেন কিছু নাই।
-চারিদিকে শুধু প্রেম আর পারিবারিক ঝগড়া-ঝাটি আর টিন-এজ মোবাইলের প্যাঁচাল। টান-টান উত্তেজনার সেইসব নাটক কই?
- নাটকে ভাষার ব্যবহার নিয়ে আর কিছু বল্লাম না। মোস্তফা সারওয়ার ভাই রাগ করতে পারেন। তবে, শুদ্ধ ভাষার ব্যবহার অবশ্যই মানুষকে সুন্দর করে কথা বলতে অনুপ্রানিত করে।
সবশেষে বলা যায়, পরিচালকদের খুব দোষ দেই না। কারন, দিন বদলে গেছে, বিঢিভির যুগ শেষ। এখন এতো টিভি চ্যানেল আর মানুষের হাতে নানান অপশন। তাই ভিউয়ার ধরে রাখাটাই কঠিন কাজ। দর্শক যদি দেখে তাহলে ভাল, অ্যাডের টাকায় নাটকের খরচ উঠলেই হয়। সাহিত্যমান, শিল্পীর অভিনয় ইত্যাদি গোল্লায় যাক।
তবু কেন যেন বলতে ইচ্ছে করে, এটু খরচ করে নাটক বানান। টাকা খরচ করতে না পারলে মেধাটা করা যায় কিনা দেখেন। অন্তত কাহিনীটা লেখককে দিয়ে লিখিয়ে নিন প্রথমে। সবই যদি নিজে করেন, তাহলে মানুষ করবে কি?
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৮:৩৩