আমার লটারির ভাগ্যটা মোটেই ভালো না। স্মরণাতীতকাল থেকে আমি লটারির টিকিট কিনছি, কিন্তু কখনোই পুরস্কার পাইনি। তারপরও কোন সংস্থা বাজারে লটারি ছাড়লে আমি সেই লটারি টিকিট কিনি। কারণ, যদি লাইগ্যা যায়। কারণ, গতবার কপালে ছিল না বলে কি এবারও পাবো না -- আমার মধ্যে এ মনোভাব কাজ করে।
আমার চেয়ে তিন বছরের ছোট চাচাতো ভাই সাবীলের কপালটা আমার চেয়েও খারাপ। দিনের পর দিন স্কুলের টিফিনের পয়সা বাঁিচয়ে সে একবার একটা প্রাইজবণ্ড কিনলো। ড্রয়ের ফলাফল যেদিন পত্রিকায় বের হলো সেদিন সে আশায় আশায় পত্রিকা নিয়ে বসলো। ফলাফলের খবরটা পড়তে পড়তে সে হঠাত করে পাথরের মূর্তি হয়ে গেলো। কারণ, পুরস্কার পেয়েছে এমন একটা প্রাইজবণ্ডের নম্বরের সঙ্গে তার প্রাইজবণ্ডের শেষ সংখ্যাটা ছাড়া আর সবই মিলে । শুধু তাই নয়, তার প্রাইজবণ্ডের শেষ সংখ্যাটা ৮ আর পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাইজবণ্ডের শেষ সংখ্যাটা ৯। অর্থাত সাবীলের পরে যিনি প্রাইজবণ্ড কিনেছেন তিনিই পুরস্কার পেয়েছেন। দুর্ভাগ্য আর কাকে বলে।
যে কথা বলার জন্য এই লেখাটা শুরু করেছিলাম সেই প্রসঙ্গে আসি। কিছুদিন আগে প্রাণ ম্যাংগো জুসের একটা বিজ্ঞাপন টিভি ও পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, এক বোতল ম্যাংগো জুস কিনলে আপনি দশ লাখ পর্যন্ত বিভিন্ন অংকের পুরস্কার পেতে পারেন। প্রাণ ম্যাংগো জুস খেয়ে এক লাখ টাকা পুরস্কার পেয়েছেন এমন কয়েকজনের ছবিও দেখলাম পত্র-পত্রিকায়। বিজ্ঞাপন দেখে প্রাণ ম্যাংগো জুস খাওয়ার উদগ্র বাসনা জাগলো মনে। ভুল বললাম, জুস খাওয়ার বাসনা জাগলো না, জুস খেয়ে দশ লাখ টাকা পাওয়া যায় কি না সেটা দেখার খায়েশ হলো । আমি ঢাকার হাতীরপুল এলাকায় থাকি। হাতীরপুলের বেশ কয়েকটা দোকানে প্রাণ ম্যাংগো জুস খুজঁলাম। কোথাও পেলাম না। আমার অফিস মতিঝিলের কাছে। অফিসের আশপশের বেশ কয়েকটা দোকানেও খুঁজেছি। নাহ, কোথ্থাও নেই।
অনেক খোজাঁখুজিঁ করেও প্রাণ ম্যাংগো জুস না পাওয় ার জন্য দায়ী কে -- আমার কপাল নাকি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিজনেস স্ট্র্যাটেজি? এমনও হতে পারে, যে শ্রেণীর ক্রেতাকে টার্গেট করে এই পুরস্কারের আয়োজন তাতে আমি পড়ি না। কে জানে।