দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশে চেম্বার জজের স্থগিতাদেশ খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। আজ রোববার প্রধান বিচারপতি মো. ফজলুল করিমের নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ সংক্রান্ত আপিলের শুনানি শেষে এ রায় দেন আদালত। সোমবার ১৯ জুলাই থেকে আমার দেশ আবার প্রকাশিত হবে।
উল্লেখ্য, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশনা অবৈধ-সংক্রান্ত অভিযোগে ঢাকা জেলা প্রশাসকের এক আদেশ বলে গত ১ জুন পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ করে দেয় সরকার। জেলা প্রশাসকের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনোয়ার-উন-নবী হাইকোর্টে আবেদন করেন। গত ১০ জুন জেলা প্রশাসকের এ আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি নাজমুন আরার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের ওই রায়ের পর ১১ জুন থেকে ১৫ জুন মোট ৫ দিন পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ আপিল করলে সুপ্রিমকোর্টের চেম্বার বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গত ১৫ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে দেন। চেম্বার বিচারপতির এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আমার দেশ পত্রিকার পক্ষে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজের কাছে রিভিউ পিটিশন দাখিল করলে মাননীয় আদালত ১৫ জুলাই সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন। ১৫ জুলাই আপিল বিভাগের কার্য তালিকায় আমার দেশ-এর বিষয়টি ১৫ নম্বর আইটেম থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে কাভার না করায় শুনানির জন্য সেদিন আদালতে উত্থাপিত হয়নি। আজ রোববার ওই আপিলের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতির স্থগিতাদেশ খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন সুপ্রিমকোর্ট। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি এম এ মতিন, বিচারপতি শাহ আবু নইম মমিনুর রহমান, বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও বিচারপতি এস কে সিনহা।
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার পক্ষে শুনানিতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। এ সময় এ সময় আদালতে বিচারপতি টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার রফিক উল ইসলাম মিয়া, অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান, ব্যারিস্টার এহসানসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এম কে রাহমান। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেন, এ রায়ের ফলে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশে আর কোনো বাধা রইল না। এটি আমাদের নয়, সাংবাদিকদের জয়। স্বাধীন সাংবাদিকতার জয়। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান কোনো বিষয় নয়। মাহমুদুর রহমান উপলক্ষ মাত্র। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সমুন্নত এবং নিশ্চিত হলো।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এ রায়ের ফলে সংবাদপত্র এবং মিডিয়ার বিজয় হলো।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, সরকার অসত উদ্দেশ্যে আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশনা বাতিল করেছে এবং মাহমুদুর রহমানের আবেদন এক বছর পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখেছে। প্রথম পুলিশি তদন্তে বলা হয়, কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এক বছর পর ভেরিফিকেশনে বলা হয়, দেয়া যাবে না। আপিল বিভাগের এ রায়ের ফলে সংবাদপত্র ভারমুক্ত হলো। আশা করি, মাহমুদুর রহমানও একই প্রক্রিয়ায় মুক্তি পাবেন। সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হবে।Click Here
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১০ রাত ৯:৩৭