রাজনৈতিক নেতৃত্ব শূন্যতার কবলে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব শুরু হয়েছিল, পরবর্তীতে ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন , ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেই নেতৃত্ব পরিপক্কতা লাভ করেছিল। সেই পরিপক্ক রাজনৈতিক নেতৃত্ব ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু, ৭১ পরবর্তী সেই নেতৃত্ব অন্তর্কলহে লিপ্ত হয়। ৬০ এর দশকে কম্যুনিস্ট নেতৃত্ব অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। সেই নেতৃত্ব তৎকালীন মূলধারার রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত ছিল। ৬০ এর দশকে মূলধারার রাজনীতি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিস্বত্বার আন্দোলন তীব্র করা। তৎকালীন আওয়ামী লীগ, ভাসানি ন্যাপসহ সহ প্রায় সকল বামপন্থীই বাঙালি জাতিস্বত্বার আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত ছিল। বাঙালি জাতিস্বত্বার সেই আন্দোলন ১৯৬৬ সালের ৬ দফার ধারাবাহিকতায় ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং স্বাধিকার আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়ে সেই আন্দোলন সফলতা লাভ করে। সেই দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে উঠেছিল।
রথম অন্তর্কলহ শুরু হয় জাসদ প্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়ে এবং ১৯৭১ পূর্ব রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিভক্ত হয়। পরবর্তীতে জাসদ বিভক্ত হয়ে বাসদসহ নানা শাখা প্রশাখা তৈরি হয়ে সেই নেতৃত্ব রাজনৈতিক মুল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একই অন্তর্কলহ শুরু হয়েছিল বামপন্থীদের ভেতর ১৯৬৫ সালে। কমিউনিস্টরা বিভক্ত হয়ে ভাসানি ন্যপ ও মোজাফফর ন্যাপ এর পতাকা তলে আশ্রয় নেয়। এই ভাঙ্গন ছাত্র সমাজের মধ্যেও দেখা যায়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন বিভক্ত হয়ে ছাত্র ইউনিয়ন মেনন ও মতিয়া গ্রুপ নামে দুই ভাগে বিভক্ত হয়। পরবর্তীতে ন্যাপ ভাসানি ৬০ এর দশকের শেষের দিকে আরও বিভক্ত হলে ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপও বিভক্ত হয়ে বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নসহ নানা গ্রুপে পরিণত হয় । মূলতঃ মস্কোপন্থী ও পিকিংপন্থী হিসেবে বামপন্থীদের মধ্যে এই ভাঙ্গনগুলো দেখা দেয়। কিন্তু কতিপয় বামপন্থী নেতৃত্ব বাদে প্রায় সকলেই বাঙ্গালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রশ্নে খুব একটা মতবিরোধ প্রকাশ করেনি বিধায় পুরো রাজনীতি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এমনকি সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি ভারত বিরোধী অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশে থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
১৯৭১ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে জাসদ ও সিরাজ শিকদারের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয় তা আওয়ামী লীগকে অনেকাংশেই দুর্বল করে ফেলে । বিশেষ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সবচেয়ে বড় অংশটি জাসদের নেতৃত্বে চলে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের ছাত্র নেতৃত্ব থেকে কোন শক্ত রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে মস্কোপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন ডাকসু নেতৃত্ব দখল করলেও আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। অবশ্য ১৯৭৫ সালে মস্কোপন্থী কমিউনিস্টরা বাকশালে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু পিকিংপন্থী কমিউনিস্টরা ভাসানি ন্যাপ এর ছায়ায় এবং কেউ কেউ স্বাধীনভাবে আওয়ামী লীগ বিরোধী সংগ্রাম অব্যাহত রাখে। আওয়ামী লীগ বিরোধী অব্যাহত সংগ্রামের সুযোগে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কতিপয় সামরিক অফিসারের হাতে নিহত হন।
পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে তৎকালীন আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি দ্বারা জিয়াউর রহমান আরেকটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলেন। শুরু হয় আরেকটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান প্রক্রিয়া। তৈরি হয় বিএনপি। মূলতঃ ভাসানি ন্যাপসহ পিকিংপন্থি বামদের একটি অংশ নতুন এই ধারার রাজনৈতিক নেতৃত্বে চলে আসে। সেই সাথে আওয়ামী লীগ দমনের রাজনীতিও শুরু হয় । ১৯৭৫ পূর্ব ও পরবর্তী রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে অনেক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিহত ও রাজনীতি থেকে ঝরে পরে। কিন্তু সেই রাজনৈতিক নেতৃত্বে শূন্যতা পূরণে ভূমিকা রেখেছিল ছাত্র রাজনীতি ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একইভাবে কতিপয় সামরিক অফিসার দ্বারা নিহত হলে অল্প দিনের মধ্যেই দেশ পুরোপুরি সামরিক বাহিনীর হাতে চলে যায়। রাজনৈতিক নেতৃত্ব পরাজিত হয়। মূলতঃ রাজনৈতিক অন্তর্কলহ এমন আকার ধারণ করে যে কেউ কারও নেতৃত্ব মানতে রাজী ছিল না। সেই সুযোগটি নেয় সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাষী অফিসার। ১৯৮২ সালে দেশে সামরিক শাসন জারি করে গোটা দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায় তারা।
আবার শুরু হয় নতুন করে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন। রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিছুটা পরাজিত হলেও ছাত্র রাজনীতি যে তখনও শেষ হয়ে যায়নি তার প্রমাণ হিসেবে ১৯৮৩-৮৪ সালের ছাত্র আন্দোলন সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। অনেক ছাত্র ছাত্রী প্রাণ দিয়ে সামরিক শাসন বিরোধী একটি আন্দোলনের ধারাবাহিকতা তৈরি করেন। তখনও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু ছিল। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্র রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অব্যহত ছিল। যে কারণে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন থেকে কেউ কখনও পিছু হটেনি। রাজনৈতিক নেতৃত্ব কখনও কখনও সামরিক শাসনের সাথে আঁতাত করলেও ছাত্র রাজনীতি বরাবরই সামরিক শাসন বিরোধী ছিল। এই ছাত্র রাজনীতির কাছে ১৯৯০ সালে সামরিক রাজনীতিকরা পরাজিত হয়। ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দীর্ঘ ৯ বছর সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। এই ৯ বৎসরের এই আন্দোলনই ছিল মুল ধারার রাজনীতি। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নতুন করে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া এই ৯ বৎসরের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নিজ নিজ দলের নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক দক্ষতায় পরিপক্ক হন।
ছাত্রদের নেতৃত্বে ১৯৯০ সালে সামরিক শাসক বাহিনী পরাজিত হলে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ১৯৯১ সালে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে আবারও নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এইভাবে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ২০০১ সালে আবারও বিএনপি ক্ষমতায় আসে, সেই সাথে একটি অপশক্তিও ক্ষমতার অংশীদার হয়। মাঝখানে আবারও সামরিক বাহিনী ক্ষমতালিপ্সু হয়ে ২০০৭ সালে ১/১১ তে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে। আগের ৯ বৎসরের আন্দোলনের প্রক্রিয়ায় যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে উঠে, ২০ বছরের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সেই রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে উঠেনি। এর অন্যতম কারণ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন ১৯৯০ এর পর আর অনুষ্ঠিত হয়নি । উপরন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব ২০ বৎসরে নিজেদের বিকশিত না করে লুটপাটের মাধ্যমে চরম নৈতিক অধঃপতন ঘটায়। গোটা রাজনীতি একটি লুটপাটের কারখানায় পরিণত হয়। সমাজে এর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জনমনে রাজনীতি সম্পর্কে ভীতি ও নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। দুই নেত্রী নিজেদের মধ্যে একদিকে বিভেদ তৈরি করে অন্যদিকে দলে নিজদের ও পরিবারের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দল থেকে বিতারিত করতে থাকেন। লুটপাটে আকৃষ্ট হয়ে ব্যবসায়ী শ্রেণী পুঁজিবাজার ছেড়ে রাজনৈতিক দলে আশ্রয় নেয়। আস্তে আস্তে রাজনৈতিক দল হয়ে যায় পুরোপুরি নেতৃত্ব শূন্য । আবার দুই নেত্রীর উত্তরসূরী হিসেবে এখনও দলে কোন নেতৃত্ব গ্রুপ বা ব্যক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
১৯৯০ সালের পর লুটপাটের রাজনীতির কারণে রাজনৈতিক দলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের চেয়ে ব্যবসায়িক ব্যক্তিদের প্রতি দল বেশি আকৃষ্ট হয়। এর প্রথম প্রতিফলন ঘটে ১৯৯৯১ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যে। ৯ বছর সামরিক সরকার যে লুটপাট প্রক্রিয়া এই দেশে শুরু করেছিল সেই ধারাবিকতা পরবর্তী সকল সরকারের আমলে শুধু অব্োহতই থাকেনি বরং লুটপাটকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে থাকে। এর ফলস্বরূপ রাজনীতি থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ঝরে পড়ে। বিপরীতে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার কোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিদ্যমান না থাকায় এবং ছাত্র সংসদের অভাবে ছাত্র রাজনীতি আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে লুটেরা শ্রেণীর লাঠিয়াল বাহিনী ও পাহারাদারে পরিণত হয়।
রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিদ্যমান থাকলে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিছুটা পূরণ করা সম্ভব, কিন্তু এই পরিষদগুলো হচ্ছে লুটপাটের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র। কেন্দ্রীয় রাজনীতি ব্যবসায়ী শ্রেণীর দখলে চলে যাওয়ার ফলে স্থানীয় রাজনীতিবিদরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান না, লুটেরা ব্যবসায়িক শ্রেণী নিজেদের স্বার্থে স্থানীয় সরকারগুলো থেকেও রাজনীতিবিদদের সরিয়ে দেয়। এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সরকার প্রশাসন লুটেরা ব্যসায়িক শ্রেণীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায় । কেন্দ্র থেকে স্থানীয় সরকার পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই রাজনীতিবিদদের জায়গায় ব্যসায়িক শ্রেণীর দখলে চলে যায়। উপরন্তু ছাত্র সংসদ না থাকায় স্থানীয় সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের কোন প্রতিবাদী শক্তির অস্থিত্ব সমাজে বিদ্যমান থাকে না। সাধারণ জনগণ গোটা প্রক্রিয়ার কাছে জিম্মি হয়ে যায়। এমনকি রাজনীতিও বর্তমানে এই প্রক্রিয়ার কাছে জিম্মি।
এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতাসম্পন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব খুব শিগগিরই দেখা দেবে। এখনও যতটুকু অবশিষ্ট আছে তা ৬০ এর দশকের গুটি কয়েকজন রাজনীতিবিদ। ৯ বছরের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যে নেতৃত্ব ছাত্র আন্দোলন থেকে বেরিয়ে এসেছিল তাদেরকে রাজনীতি থেকে ইতিমধ্যেই পরিকল্পিতভাবে বিতাড়িত করা হয়েছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনও পরিকল্পিতভাবেই বন্ধ রাখা হয়েছে। দুই নেত্রীর অবর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতি কোন প্রক্রিয়ায় অব্যহত থাকবে তার কোন ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে না।
কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার কোন বিকল্প নেই। সমাজ ও অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে রাজনীতি সেভাবে এগোচ্ছে না। রাজনীতি বিকাশ না করলে সমাজ ও রাষ্ট্র আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাবে। রাষ্ট্র দুর্বল হলে বহিরশত্রু মোকাবেলায় রাজনৈতিক নেতৃত্বে অদক্ষতা দেখা দেবে। বর্তমানে জঙ্গিবাদ বা আইএস ইত্যাদির উত্থান হচ্ছে একটি দক্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাবে। সেই সাথে জনমনে রাজনীতি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা থেকে একটি হতাশা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জঙ্গিবাদ যেহেতু একটি মতবাদ কাজেই রাষ্ট্রীয় শক্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিরোধ সবচেয়ে বেশি জরুরী। ১৯৭১ ও ১৯৯০ এর মতো রাজনীতির মূলধারায় জঙ্গিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান থাকতে হবে। কোন পক্ষ বিপক্ষ থাকবে না। রাজনীতি রাজনীতিবিদদের দ্বারা পরিচালিত হলে সমাজের অভ্যন্তর থেকে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সম্ভব। ব্যবসায়ীদের দ্বারা রাজনীতি পরিচালিত হলে রাজনীতি মুনাফার হাতিয়ার হয় আর রাজনীতিবিদদের দ্বারা পরিচালিত হলে তা জনকল্যাণের অংশ হয়। রাজনীতিবিদরা রাষ্ট্রকে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত করে আর ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিজেদের মুনাফার স্বার্থে ব্যবহার করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৬