আচ্ছা VAT মানে তো Value Added Tax । অর্থাৎ কোন একটি পণ্যকে রূপান্তরিত করে আর একটি পন্যে পরিবর্তিত করা । অর্থাৎ সেই পন্যের মূল্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে তার মুল্য বৃদ্ধি করা । পন্যের সেই বর্ধিত মূল্যের উপর কর প্রদানকে বলা হচ্ছে VAT। এখন মুল্য বৃদ্ধি ঘটিয়ে যিনি মুনাফা করবেন তিনি রাষ্ট্রকে তার মুনাফা থেকে কর প্রদান করবেন । কিন্তু যিনি মুনাফা করছেন তিনি তার মুনাফা থেকে কর প্রদান না করে ক্রেতার কাছ থেকে তা আদায় করে নিচ্ছেন । আর বিক্রেতা বা উৎপাদনকারী মুনাফার পুরোটাই ভোগ করছেন ।
শিক্ষা কি কোন পন্য ???? এখানে ছাত্রকে শিক্ষা দিয়ে ছাত্রের মান উন্নত করে যে সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে তাতে কি ছাত্রের মুল্য বৃদ্ধি হচ্ছে যে ঐ শিক্ষার উপর VAT দিতে হবে ??? যদি তাই হয় তবে শিক্ষা একটি পন্য । সেই ক্ষেত্রে ছাত্রটিও পন্য । শিক্ষিত সকল মানুষই পন্য ।
কিন্তু শিক্ষা আসলে একটি আধিকার । রাষ্ট্রের অধীন একজন নাগরিকের অধিকার । সেই হিসেবে একটি আধিকারকে পন্যে পরিনত করার একটি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্ররা মাঠে নেমেছে । ছাত্ররা বরাবরই সমাজের সচেতন অংশ হিসেবে সংগ্রামী ভূমিকা নেয় । রাষ্ট্রের গৃহীত ভুল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ।
সাধারন মানুষ কোন প্রতিবাদ ছাড়াই VAT প্রদান করছে । কিন্তু ছাত্ররাও যে করবে এমনটা ভাবা রাষ্ট্রের জন্য বোকামি । ফলে সরকার এর রাজস্ব বিভাগ এখন বলছে VAT প্রদান এর দায়িত্ব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের । তারা টিউশন ফি থেকে VAT প্রদান করবে । ধরে নিলাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়য় টিউশন ফি থেকে VAT প্রদান করলো । তাহলেও তো রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গী থেকে শিক্ষাকে পন্য হিসেবেই দেখা হল । রাষ্ট্র তার সীমাবদ্ধতার কারনে সকল নাগরিকের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে শিক্ষা দিতে পারছে না বিধায় কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের পক্ষে রাষ্ট্রীয় নীতি অনুযায়ী সেই দায়িত্ব নিয়েছে । বিনিময়ে একটি সার্ভিস চার্জ ছাত্রদের কাছ থেকে নিতে পারে । কিন্তু শিক্ষাকে একেবারে পন্য বানিয়ে ব্যবসা খুলে বসবে এতটা বাড়াবাড়ি অন্তত ঠিক হচ্ছে না । শুধু VAT না , টিউশন ফি এর উপরও রাষ্ট্রের নজরদারির প্রয়োজন আছে ।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৫