আমার Senior friend এবং Mentor- Mohiuddin Ahmed,
Facebook কে গুডবাই জানিয়েছেন মাস খানেক আগে।
কাছের বন্ধু মানোয়ার হোসেন গতকাল ঘোষনা দিয়েছে-
কস্যিনকালেও ফেসবুক জাতীয় মাধ্যম ব্যাবহার করবেনা।
নিজের প্রাইভেসীর নিয়ন্ত্রণ অন্যের হাতে দেয়ার মানে হয়না।
(আসলে এমনিতেও সে এগুলো ব্যাবহার করতোনা,
২ মাস ৪মাস পরে একদিন ঢুকতো আরকি)
আমার টিচার এবং মেন্টর Mahdee Khan , তারও সিদ্ধান্ত এরকম। সে মনে করে Facebook এর use হচ্ছেনা Abuse হচ্ছে। এই কারণে সে নামকাওয়াস্তে চালায়। (মাসে কি ২ মাসে ১ বার)
আমি ২৫ দিন পরে আজ আইডিতে ঢুকলাম।
ঢুকে এসব কথা মনে হল।
ভাবছি ২৫ দিন ফেসবুকে না থেকে কিকি ক্ষতি/উপকার হল?
ভেবে কূল পাচ্ছিনা।
একটা ব্যাপার স্পষ্ট বুঝতে পারছি:
Virtual Media (কম্পিউটার, মোবাইল, ইন্টারনেট) ভয়াবহ একটা শক্তি।
এই মিডিয়ামগুলির সংস্পর্শে থাকলে নিজের কাছাকাছি থাকা যায়না।
এদের থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পরক্ষণে একটা ফাঁকা ফাঁকা অনুভূতি হয়।
সেই অনুভূতির তাড়নায় আবার এসব যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত হতে হয়।
আশ্চর্যের বিষয় আমি খোয়াল করেছি সংযুক্ত থাকা অবস্থায়ও একটা শুন্যতা বোধ হয় !!
এর কারণ কি ??
Taoism বিষয়ে গবেষণা করছি ২ মাস যাবত।
বেশ কয়েকটা বই এ বিষয়ে পড়ার পরে মনে হল বই যথেষ্ট নয়।
বই পড়ে তাওইজম বোঝা মুশকিল।
তাওইজম বুঝতে হলে “তাও” (পথ/ওয়ে) এর কাছে যেতে হবে।
অনেক ভেবেচিন্তে মেডিটেশন শিখে ফেললাম।
একেবারে Graduation course করে Graduate হয়ে গেলাম।
তারপর দেখলাম হচ্ছেনা। আই নিড মোর...
পাহাড়ে গেলাম। সোজা বান্দরবন।
তাওইজম বলে প্রকৃতির সাথে একাত্ব হতে, হলাম তাই।
পাহাড়ি ঝরনার কাছাকাছি গিয়ে সবাই গেল ভড়কে।
কি ভয়ংকর শব্দ, আর হিম শিতল পানি।
২০ জন পুরুষ মানুষ হাটু জলে এগুচ্ছি ঝড়নার নিচে যাব বলে।
দুইপাশের ১৫০ ফুট (আনুমানিক) উঁচু পাহাড়ি দেয়াল।
মাঝখানে মাত্র ৩ফুট চওড়া স্পেস ধরে আমরা পানি ঠেলে হাটছি।
হঠাৎ পাহাড়ি একটা সাপ আমাদের পায়ের পাশ দিয়ে সাতড়ে গেল।
একজন মাগোরে...বলে চিল্লায়া উঠল।
এবার আর কেউ সামনে যাচ্ছেনা।
কারণ সামনে অন্ধকার তার উপরে পানি গলা সমান।
ঠাই পাওয়া যাচ্ছেনা।
সবাই ফিরে যাবার চিন্তা করছে। সাতার জানেনা এরকম দু একজন ব্যাক করল।
কি জানি জানি না, আমার মনে হল ভয়ের কি আছে?
আমি এগিয়ে গেলাম। গভীরতা বেশী দেখে সাতার দিলাম....
ছোট একটা কুয়োর মত। বেশ গভীর । ডুব দিয়ে হাত জাগালাম না পায়ে মাটি পাচ্ছিনা।
বললাম যারা সাতার জানেনা তারা আইসেননা। ডুবে যাবেন।
আমি সাতরে ঝরনার কাছে পেীছে গেলাম।
দুই পাহাড়ের দেয়ালে আড়াআড়ি দুই পাযে ভর রেখে ঝড়নার নিচে মাথা ভেজালাম।
সাহস পেয়ে অনেকেই এবার আসল ....
কারণ প্রবাদ আছে ঐ ঝরনার নিচে মাথা দিয়ে মনে কোনো ইচ্ছা পোষন করলে তা পুরণ হয়।
এ বিষয়ে আমি সন্দিহান, তবু কি যেন ইচ্ছা করেছিলাম....
সাহস পেয়ে একে এক অনেকেই ইচ্ছা পূরনে আসল।
পাহাড় থেকে ফিরে আসার ২ দিনের মাথায় একটা শুন্যতা ফিল করলাম।
আবার যেতে চাইলাম। অতি পাগলামি হবে ভেবে ক্ষান্ত হলাম।
ক্ষান্ত হলেও শুন্যতা থেকে গেল।
কোথায় যেন একটা ফাঁকা বোধ হচ্ছে।
তাহলে কি আমি “আমার” কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম ?
তাওইজম বলে ‘এক’ এ (oneness) বিশ্বাষ করতে।
যাবতীয় সৃষ্টি একক ক্ষমতার আওতাভুক্ত।
আমি সেই বিশাল ক্ষমতার তুচ্ছাতিতুচ্ছ অংশ।
300 ফিট পাহাড়ের চুড়ায় উঠে ৩০ মিনিট মেডিটেশন করলাম।
কাছেই নিলগিরী দেখা যাচ্ছে। নিচে অসংখ টিলা।
শুনশান নিরাবতা। মাথার উপরে সূর্য।
এমন surrounding এ চোখ বন্ধ করার পরে যেটা দেখলাম সেটা একটা বড় শুন্য।
High angel থেকে সেই শুন্যটা আমি অবলোকন করলাম।
Zoom in করে Close এ যাবার পরে দেখলাম সেখানে ক্ষুদ্র একটা মাটির ঢেলার উপরে আমি বসে আছি।
শুন্যটা ঘুরছে, ধীরলয়ে। বেশ ধীরে।
Zoom out করে চলে আসলাম ।
এবার আবিস্কার করলাম আমি নিজে এক বিশাল শুন্যের পেটে।
সে এক বিশাল শুন্য। বিশাল...মহাশুন্য।
সেই শুন্যের গর্ভে অসংখ্য ছোটবড় শুন্য। টিকটিকির ডিমের মত।
চোখ মেলার পরে মনে আসল- এই শুন্য আবিস্কার করেছে উপমহাদেশ, ভারতবর্ষ।
সেই শুন্য চুরি করে নিয়েছে আরবরা।
আরবদের কাছ থেকে ছিনতাই করেছে ইউরোপ।
শুন্য যাদের হাতে জ্ঞাণ তাদের করতলে।
তবে জ্ঞানই একমাত্র বস্তু যা ছিনতাই করা যায়না।
কেউ চেষ্টা করলেও কেবল তার ছায়া নিতে পারে ।
ফিলোসোফার ইমাম গাজ্জালির যাবতীয় খাতাপত্র ডাকাতরা নিয়ে যাচ্ছে।
গাজ্জালী অনুরোধ করলেন-“ভাই ওগুলো তোমাদের কাজে লাগবেনা।
আমায় ফেরত দাও। আমার সারা জীবনের সন্চয়িত জ্ঞান ওতে লেখা আছে।”
ডাকাত সর্দার অবাক হয়ে বলল- যে জ্ঞাণ চোরে চুরি করে নিয়ে যেতে পারে এমন জ্ঞান দিয়ে তুমি কি করবে ?
গাজ্জালীর আক্কেল হল। তাইতো !!
আমরা কি বেআক্কেল ?
শুরু করলাম কে কে ফেসবুক বন্ধ করেছে তা দিয়েে।
এসে পৌছলাম আক্কেল বেআক্কেলে।
অর্থ কি দাঁড়াল?
দাড়াল যে আমি উদভ্রান্ত...
কেন?
ব্রেইন ওয়েভ স্বাভাবিক না তাই ।
গামা লেভেল।
আমি লক্ষ্ করেছি virtual world এর সাথে সংযুক্ত থাকাকালীন সময় ব্রেইন ওয়েভ বেড়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩১