আমি মরুর আকাশচুম্বী ইমারাতের ভিড়ে
খুঁজে ফিরি এক নুয়েপড়া কুটির—
যেখানে খেজুর পাতার বিছানা পাতা।
খোদার ভয়ে যেখানে চোখের ধারা আর তরবারির ধার একাকার হয়ে গিয়েছিল।
যে চোখে ইনসাফের জিদ ছিল, কিন্তু নিঁদ ছিল না।
যে ইনসাফের তরবারিতে সাফ হয়েছিল কুফফারের গোবর্জনা।
আর, নিদ্রাহীন যে চোখের বিনিদ্র সফরে সুফলা হয়ে উঠেছিল ফোরাতের কূল।
আর দজলার আজলা-আজলা জলে জ্বলে উঠেছিল ঈমানের আগুন।
সে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল অর্ধেক পৃথিবীতে।
অন্তরে আর বাহিরে ,
কায়সারে-কিসরায়-দাহিরে।
যে-বিশ্বাসের ভূমিকম্পে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল গোমরাহির ভিত,
আমরা তো সেই বিশ্বাসের নিঃশ্বাসবাহী।
সেই প্রচণ্ড, প্রমত্ত প্রলয়-শিখার উত্তরাধিকারী।
কিন্তু, আফসোস।
বংশপরম্পরায় অবশেষে আমরা কিশোর থেকে যুবক হয়েছি;
আমরা যুবক হয়ে উঠেছি, কিন্তু আমরা পুরুষ হতে পারিনি—
আমরা তো সেই কাপুরুষ যারা রাতের আঁধারে বিসর্জন দিয়েছি দ্বীনকে
আর, মানবী লাইলীর প্রেমে ভাসিয়ে দিয়েছি কিয়ামুল লাইল—
শেষরাতে রবের আহ্বানে থেকেছি নীরব।
ভোরের আজানেও থেকেছি বেভোর।
আমাদেরই কাপুরুষতায় আজ পরিণত হয়েছে জেরুজালেম জালেমের ঘাঁটিতে;
অবিশ্বাসের বিষ-বাষ্প ছড়িয়ে পড়েছে আকাশে-আকাশে, মাটিতে-মাটিতে।
পাথরছোঁড়া অবুঝ শিশুর রঙ্গনের মতো রক্তে ভিজেছে আকসার প্রাঙ্গন।
শত শহীদের শাদা কাফনে মোড়ানো রক্তে তাজা হয়েছে গাজার জমিন।
আল্লাহর ভয় যখন আমরা ছেড়ে বসেছি, তখন আমাদের অন্তরে গেড়ে বসেছে জালিমের ভয়।
আর, সিজদায় মাথা নত করা যখন বন্ধ করেছি, তখনই মাথা চাড়া দিয়েছে জালিমেরা।
হে, ওমরের বংশধর, হে সালাহউদ্দীন আইয়্যুবীর সন্তানেরা, হে ঘুমিয়ে থাকা সিংহ—
ইতর তুমি, নিথর তুমি, কোথায় তোমার দ্বীন?
তোমার বুকের রক্তে আবার জাগুক ফিলিস্তিন।
জায়নামাজে যায় না দেখা তোমার চোখের জল
নতুন করে আবার জাগো—না ঘুমানোর দল ।
আকসাতে আজ একসাথে হও, ডাকছে মুকাদ্দাস
বইছে, জেনো, সব মুমিনের ভীনদেহে এক শ্বাস।
অমর ওমর শহিদ হতে আসুক ফিরে ফের—
ভিত কেঁপে যাক, হৃদ কেঁপে যাক জায়ন-জালিমদের ।
—ধূসর ফিলিস্তিন
আহমদ মুসা;
১৭ অক্টোবর, ২০২৩।