somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতারনার অভিনব ফাঁদ !আমাজনের আনাকোন্ডা এখন ঢাকায়! সবাই সাবধান !

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি চমৎকার শিক্ষনীয় লেখা আপনাদের মতামতের জন্য শেয়ার করলাম ------------------------------------

গত বছর সাঈদ খালু মারা যাবার পর খালাম্মা কাজে-অকাজে আমার ওপর নির্ভর করেন। সম্প্রতি বাবর রোডে তিনি ডেভেলপারের কাছ থেকে তাঁর ভাগের একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এর মধ্যে একদিন ফোন করে বললেন, ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেবেন। আমার সেল ফোন নম্বর টু-লেট বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করবেন এবং ভাড়াটের সাথে কথাবার্তা আমাকেই বলতে হবে। সার্ভিস চার্জ বাদে ফ্ল্যাটের ভাড়া বিশ হাজার টাকা মাসে। তিন মাসের ভাড়া এ্যাডভান্স দিতে হবে। কি আর করব রাজি হয়ে গেলাম। সম্ভাব্য ভাড়াটেদের ফোন আসা শুরু হলো কিন্তু কেউ আর মাসিক বিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হয় না। খালাম্মাও ঢাকায় নেই। কক্সবাজারে বেড়াতে গেছেন তাঁর আমেরিকা প্রবাসী ছেলেকে নিয়ে। তাঁকে ফোন করে বললাম "খালাম্মা কেউ তো ফ্ল্যাটের ভাড়া বিশ হাজার দিতে চাচ্ছে না_ একজন শুধু ষোল হাজার টাকা দিতে চেয়েছে", জবাবে তিনি জানালেন বিশ হাজার টাকার কমে ফ্ল্যাটটি তিনি ভাড়া দেবেন না। ৫ তলার ফ্লাটটি উনিশ হাজার টাকায় ভাড়া হয়েছে। ফলে ফোনের স্রোতে আমি ভেসে যেতে লাগলাম। যা হোক, গত রোববার সকালে একটা ফোন পেলাম। ফোনদাতা বলছেন_ "আমি আপনার ফ্ল্যাট যে বিল্ডিংয়ে তার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। আমি ফ্ল্যাটটি দেখতে চাই।" ফ্ল্যাটের চাবি আমার কাছেই ছিল। আমি বাবর রোডে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি এক যুবক দাঁড়িয়ে আছে। সে এগিয়ে এসে বললো_ "আমাদের কোম্পানি তাঁদের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের জন্য ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেবে। ঢাকা ইপিজেডে জাপানি বিনিয়োগে তাদের একটি কমপোজিট টেক্সটাইল মিল তৈরী হচ্ছে।" আমি যুবককে তার নাম ও পদবি জিজ্ঞেস করতে সে বললো_ "আমার নাম কামাল আহমদ। আমি এই কোম্পানির ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার"। খালাম্মার ফ্ল্যাটটি দোতলায়। কামালকে নিয়ে আমি দোতলায় গিয়ে ফ্ল্যাটটি দেখালাম। ফ্ল্যাটটি তার পছন্দ হলো। তখন আমি বললাম ফ্ল্যাটটি আমার নয়_ আমার খালাম্মার। সার্ভিস চার্জ বাদে বিশ হাজার টাকার নিচে তিনি ভাড়া দেবেন না। উত্তরে কামাল বললো_ "বিশ হাজার টাকা ভাড়া দিতে তাদের কোন অসুবিধা হবে না, কারণ জাপানিরাই এই ভাড়া বহন করবে।" এরপর কামাল আমার পরিচয় জানতে চাওয়ায় বললাম, আমি অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম-সচিব। প্রশাসনিক ক্যাডারে ছিলাম। এখন ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট কিনে সেখানে থাকি।" তখন কামাল বললো, স্যার, আমরা তো আমাদের প্রশাসন দেখার জন্য আপনার মতো একজনকে খুঁজছি। আমাদের এমডি বাবর রোডের এফ-বস্নকে থাকেন। যদি দয়া করে ওঁর সাথে দেখা করে যান তবে বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে ও আপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।" কামাল আমাকে তার এমডি'র ফ্ল্যাটে নিয়ে গেল। সু-সজ্জিত ফ্ল্যাট। একজন খিদমতগার আছে। কামাল আমার ইচ্ছে অনুযায়ী খিদমতগারকে এক কাপ বস্ন্যাক কফি দিতে বললো। বস্ন্যাক কফি এসে গেল। সঙ্গে চানাচুর। কামাল জানালো_ "স্যার, এমডি ফার্ম গেটে ব্যাংকে গেছেন। এখনই এসে পড়বেন।" আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। আধ ঘণ্টার মধ্যে এমডি এসে পড়লেন। স্যুট টাই পরা সুশ্রী ভদ্রলোক। হাত বাড়িয়ে দিয়ে করমর্দন করে বললেন_ আমার নাম সাইফুল ইসলাম।

তারপর কামালের কাছে সব শুনে বললেন_ "আপনার খালাম্মার ফ্ল্যাটটা আমরা বিশ হাজার টাকায় ভাড়া নেবো। আর আপনার মতো লোক আমাদের দরকার। বারিধারায় আমাদের হেড অফিস। সেখানের এডমিনিস্ট্রেশন খুব উইক। আপনাকে সব সামাল দিতে হবে। উপযুক্ত সম্মানী দেয়া হবে এবং তা ডলারে। দয়া করে আগামীকাল সোমবার সকাল ৯টায় আসতে হবে আপনাকে। কোম্পানির চেয়ারম্যান সাহেব আপনার সাথে মোলাকাত করতে চান। কাল সব কিছু ফাইনাল হবে।" কামাল আমাকে নিচে নিয়ে এলো। আমি কামালকে বললাম_ "কামাল আমি তো এই বাড়ি চিনে বের করতে পারবো না।" উত্তরে কামাল বললো_ "স্যার, আপনি কাল সাড়ে আটটার সময় মিরপুর রোডের কাছে বাবর রোডের মাথায় থাকবেন। আমি আপনাকে এমডি সাহেবের ফ্ল্যাটে নিয়ে যাবো।" যথারীতি সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় আমি বাবর রোডের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। পৌনে নয়টার দিকে কামাল এলো এবং আমাকে একটা রিকশা করে এমডি সাহেবের ফ্ল্যাটে নিয়ে এলো। এমডি সাহেবের সুসজ্জিত অফিস রুমে আমরা বসলাম। খিদমতগার আমার জন্য বস্ন্যাক কফি আর চানাচুর দিয়ে গেল। এমডি সাহেবও এসে গেলেন। বললেন_ "চেয়ারম্যান সাহেবের আসতে দেরি হবে। উনি জাপানিদের নিয়ে ইপিজেডে গেছেন। আপনি দয়া করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।" আমি রাজি হয়ে গেলাম। এমডি সাহেবের সাথে টুকটাক গল্প-গুজব হচ্ছে। কামাল আমার পাশে বসা। এমন সময় দরজা ঠেলে একটা শার্টপ্যান্ট পরা যুবক রুমে ঢুকে পড়লো। কামাল তাকে দেখে একটু হকচকিয়ে গেল। যুবক উত্তেজিত স্বরে কামালকে উদ্দেশ্য করে বললো_ "কামাল, তুমি গত চার মাস আমার সাথে দেখা করনি। ফোন দিলেও ধর না।" কামাল লজ্জিতভাবে বললো_ "ভাই, আমি দেশে ছিলাম না। কোম্পানি আমাকে জাপানে ট্রেনিং-এ পাঠিয়েছিল। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফিরেছি।" আগত যুবক আমাদের দিকে তাকিয়ে বললো_ "আমার নাম রাশেদ আহমদ। কামালের সাথে আমার কিছু কথা আছে। ওকে দুই ঘণ্টা আমার সঙ্গে থাকার জন্য ছেড়ে দিন।" এম ডি বললেন_ "কামালকে ছাড়া সম্ভব নয়। চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে আমাদের জরুরি মিটিং আছে। আপনার যা কথা আছে তা আমাদের সামনেই বলুন।" রাশেদ রাজি হয়ে গেল। সে বললো, "কামালের সাথে আমার পরিচয় দু'বছর আগে। আমরা পাশাপাশি সিটে বসে একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে রাতে ঢাকায় ফিরছিলাম। প্রায় ভোরের দিকে কাঁচপুর ব্রিজের ওপর একটা বালুবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে আমাদের বাসে হেড অন কলিশন হয়। আমি অচেতন হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে দেখি যে, আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে। ডান হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা। পাশে কামাল দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে আমার ব্রিফকেস। বিপদের আশঙ্কা না থাকায় ডাক্তার আমাকে ছেড়ে দিলেন। দেখলাম কামাল আহত হয়নি। কামাল আমার ঠিকানা মিরপুরের বাসায় স্কুটারে করে নিয়ে এলো। বাসায় আমার মা আর আমি থাকি। মা সব শুনে দু' গ্লাস গরম দুধ আমার ও কামালের হাতে দিয়ে বললেন, এই দু' গ্লাস দুধ তোমরা খেয়ে নাও। আমার বুকে দুধ থাকলে আজ তোমাদের আমি খাওয়াতাম। তার বদলে এই দুধ তোমরা খাও। আমরা গ্লাস ভরা দুধ খেয়ে ফেললাম। তখন আমার মা বললেন, আজ থেকে তোমরা দু'জনে দুধভাই।" কামাল আমার ব্রিফকেসটি আমার হাতে তুলে দিলো। খুলে দেখলাম নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা, পাসপোর্ট ইত্যাদি সব ঠিক আছে। কামাল আমার মা'কে সালাম করে চলে গেল।"

রাশেদ বলে চলেছে, "এরপর কামাল আর যোগাযোগ করেনি। আমি ভারতীয় মালিক বিদ্যাধর মোদীর অধীনে কাজ করি। তিনি বছরে অন্ততঃ ছয় মাস বাংলাদেশে থাকেন। আমার মালিক তখন পূর্বাশা হোটেলের বাসিন্দা। আমি মালিকের সাথে দেখা করতে গিয়ে হোটেল লাউঞ্জে কামাল আর একটি যুবককে দেখলাম। কামাল পরিচয় করিয়ে দিলো যুবকটির সাথে। ওর নাম ইশতিয়াক। সুনামগঞ্জে বাড়ি তবে লন্ডনে থাকে। জুয়া খেলার খুব নেশা। মোনাকো, লাসভেগাস ইত্যাদি ক্যাসিনোতে তার যাতায়াত খুব বেশি। ইশতিয়াক রাশেদকে বললো_ "আপনার মালিককে আমি বহু ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে দেখেছি। আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিন না। আমি আপনাদের বিনা মূলধনে বড়লোক করে দেবো। আমি একজন তাসের সাফলার। আমার সাথে তাস খেলায় কেউ জিততে পারবে না।" রাশেদ আমাদের জানালো_ "আমার মালিক অত্যন্ত খারাপ। আমাদের কুকুরও মনে করে না। খুব খারাপ ব্যবহার করে। মালিকের ড্রাইভারের একটি সুন্দরী বিবাহযোগ্য মেয়ে ছিল। তাকে দেখে কৌশলে বিদ্যাধর মোদী রেপ করে। যার ফলে মেয়েটি আত্মহত্যা করে এবং মেয়েটির বাবা ড্রাইভার স্ট্রোক করে মারা যায়। দু'জনকে একই দিনে আজিমপুর গোরস্থানে আমি দাফন করি। তখন থেকেই প্রতিহিংসা নেবার বাসনা আমার মনে জেগে ওঠে। একটা বেদ্বীন ভারতীয় আমাদের সর্বনাশ করছে। আমি ইশতিয়াক আর কামালকে নিয়ে মালিকের কামরায় গেলাম এবং ইশতিয়াক যে মালিকের সাথে তাস খেলতে চায় সেই প্রস্তাব দিলাম। কামালকে ইশতিয়াকের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দিলাম। এদিকে লাউঞ্জে আমাদের মধ্যে স্থির হয়েছিল যে, ইশতিয়াক তাস খেলে যে টাকা লাভ করবে তা সমানভাবে আমাদের তিন জনের মধ্যে ভাগ হবে। মালিক তাস খেলার প্রস্তাব গ্রহণ করলেন তবে বললেন যে, আধ ঘণ্টার বেশি খেলতে পারবেন না। কারণ তাকে আজই দিলি্ল যেতে হবে। নতুন তাস আনানো হলো। ঠিক হলো প্রত্যেক দান ৫ লাখ টাকা করে। তিন দান খেলা হবে। আশ্চর্যের বিষয় যে, ইশতিয়াক তিন দানে ১৫ লক্ষ টাকা জিতে নিল। মালিক বললেন_ "আজ মেরা লাক খারাপ হ্যায়। দিলি্ল সে লউটকে ফিন তুমহারা সাথ খেলুঙ্গা।" মালিক কে নিয়ে আমি এয়ার পোর্টে চলে গেলাম। যাবার আগে ওদের কাঁটাবন মসজিদের সামনে অপেক্ষা করতে বললাম। ফিরে এসে ওদের কাউকে পেলাম না। আজ রিকশায় করে যখন কামাল এই বাড়িতে আসছিল তখন আমি ওর পিছু পিছু এসে ওকে ধরেছি। কামাল এখন বলো আমি আমার ভাগের টাকা পেলাম না কেন?" উত্তরে কামাল বললো_ "দেখেন আপনি চলে যাবার পর ইশতিয়াক আমাকে এই খেলাটা শিখিয়েছে যাতে কখনোই আমি হারবো না। তারপর একটা স্কুটারে চেপে আমরা কাঁটাবন মসজিদের চৌরাস্তায় পেঁৗছাই। স্কুটার ভাড়া দেয়ার জন্য ইশতিয়াক ৫০০ টাকার একটা নোট আমাকে দিয়ে বলে যে, "ওটা ভাঙিয়ে স্কুটারওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে দাও।" আমি আশেপাশে টাকা ভাঙাতে না পেরে স্কুটারওয়ালাকে এলিফ্যান্ট রোডে গিয়ে এক প্যাকেট সিগারেট কিনে টাকা ভাঙাই এবং স্কুটারওয়ালাকে ভাড়া মিটিয়ে দেই। ফিরে এসে দেখি আমার বন্ধু ইশতিয়াক ১৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও। সুনামগঞ্জ গিয়েও ওর দেখা পাইনি। ইশতিয়াক লন্ডনে চলে গেছে। লজ্জায় আপনার সাথে আর দেখা করিনি। এর মধ্যে তিন মাসের জন্য জাপানে ট্রেনিংয়ে গিয়েছিলাম।

কামালের কৈফিয়তে রাশেদ সন্তুষ্ট হলো বলে মনে হলো। এমডি সাইফুলও বললেন_ "আপনার যখন বাসে এ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল আপনি তো চেতনা লুপ্ত অবস্থায় ছিলেন। তখন তো কামাল আপনার ব্রিফকেস ভর্তি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যেতে পারতো। কামাল আমার আত্মীয়। ওকে আমি লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বিশ্বাস করি। সুতরাং ও যা বললো তাই সত্যি বলে ধরে নিন।" উত্তরে রাশেদ বললো_ "ঠিক আছে। আমার মালিক এখন মোহাম্মদপুরে তাজমহল রোডের এক বাসায় বিমানবালার সাথে থাকে। এমডি সাহেব আপনি যদি ব্যবসা করেন তবে আমার মালিকের আগামী একমাসের মধ্যে পাঁচ কোটি টাকার সিমেন্ট আগরতলায় পাঠাতে হবে। আপনার পঁচিশ লক্ষ টাকা লাভ হবে। আমাকে পাঁচ লাখ টাকা ভাগ দিতে হবে। যদি রাজি থাকেন তবে আমার মালিককে এখানে নিয়ে আসি। আর একটা কথা, কামাল যখন ইশতিয়াকের কাছ থেকে তাস খেলে জেতার ট্রিকসটা শিখেই ফেলেছে তখন ব্যবসায়িক কথাবার্তা বলার পর আমি তাস খেলার প্রস্তাব দেবো। যদি রাজি হয় তবে খেলা হবে। এর মধ্যে কামাল এক প্যাকেট তাস কিনে আপনাদের দেখাক কিভাবে সে প্রত্যেকবারেই জিততে পারে।" রাশেদ বিদ্যাধর মোদীকে আনতে চলে গেল। কামাল এক প্যাকেট তাস কিনে নিয়ে এলো। দুটো জোকারসহ ৫৪ কার্ডে তাস খেলা হবে। তাস ওপর থেকে না বেটে নিচের থেকে বাটতে হয়। দেখা গেল প্রত্যেকবারই কামাল জিতছে। কিছুক্ষণ পর রাশেদ বিদ্যাধর মোদীকে নিয়ে উপস্থিত হলো। বিদ্যাধর মোদীর অদ্ভুত পোশাক। কালো সিল্কের প্রিন্স কোট ও প্যান্ট। চোখে কালো চশমা। ইংরেজি ও হিন্দি বলতে পারেন। রাশেদ এমডি'র সাথে সিমেন্টের ডিলটা করে দিলো। এলসি'র মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকার সিমেন্ট আগরতলায় এমডি বিদ্যাধর মোদীর নামে পাঠাবে। এর মধ্যে বিদ্যাধর মোদীকে আপ্যায়ন করা হলো।

আপ্যায়ন শেষে রাশেদ তার মালিককে বললো_ "ইনলোগকো আপকে সাথ তাস খেলনে কা বহুৎ এরাদা হ্যায়। কেয়া হোজুর খেলিয়ে গা'। উত্তরে মোদী বললেন_ "জরুর, আভি খেলেঙ্গে।" ঠিক হলো প্রত্যেক ডিলে ১৫ লক্ষ টাকা বাজি হবে। তাসের প্যাকেট কামাল অন্য ঘরে সরিয়ে রেখেছিল। সে তাস নিয়ে এলো। মোদী তাসগুলো পরীক্ষা করে দেখলেন। বললেন "ঠিক হ্যায়", কামাল তাস বাটা শুরু করলো। মোদী বাধা দিয়ে বললো_ "তুমতো ইশতিয়াক কা ম্যানেজার থা। হাম ম্যানেজার কা সাথ নেহি খেলেঙ্গে।" কামাল আমার পাশেই বসে ছিল। মোদী আমাকে বললেন_ "তুম বাটো।" কামাল যেভাবে বাটছিল আমি সেইভাবে তাস বাটলাম। যে তাস বাটবে সে একভাগ পাবে আর মোদী পাবে দুই ভাগ। প্রত্যেক ভাগে তিনটা করে তাস। যে ভাগে জোকার অথবা সাহেব পাওয়া যাবে সেই জিতবে। তাস বাটার পর কামাল হঠাৎ মোদীর তাস থাবা দিয়ে ধরে উল্টাতে না দিয়ে বললো_ "পহেলে পন্দেরো লাখ রুপিয়া দেখলাইয়ে।" মোদী রাগান্বিতভাবে তার কোর্টের দু' পকেট থেকে ৪ বান্ডিলে ৪০ হাজার ডলার বের করে সামনে রেখে বললো : ইয়ে ডিল নেহি হোগা কিউকে ও বেটা ম্যানেজার মুঝে তাস উল্টানে নেহি দিয়া।" আমার ভাগের তাস উল্টে দেখা গেল তিন তাসের মধ্যে একটা জোকার ও একটা সাহেব আছে। মোদীর দুইভাগে সবই ছোট তাস। তাস আবার বাটা হলো। তখন মোদী বললো_ "তাস উল্টানো কে প্যাহলে তুমলোগ কে পন্দেরো লাখ রুপিয়া দেখলানে পড়ে গা।" উত্তরে এমডি বললেন_ "আমি চেক দিতে পারি। নগদ টাকা দিতে পারবো না।" মোদী রাজি হলো না। এমডি বললেন_ বিকেল ৪টায় খেলা হবে। তখন আপনি আসেন। মোদী চলে গেলেন। রাশেদ মোদীকে নিচে নামিয়ে দিয়ে এলো। এমডি বললেন_ "আজ তো পনেরো লাখ টাকা আমার হাতে নেই। গতকাল এক কোটি ষাট লাখ টাকার এলসি খুলেছি। এখন এই টাকাটা আমাকে আর যুগ্ম-সচিব সাহেবকে যোগাড় করতে হবে। যুগ্ম-সচিব সাহেব তো বারবার পরীক্ষা করেই দেখেছেন যে, মোদীর সাথে তাস খেললে আমরা কখনোই হারবো না। আমি দশ লাখ টাকা দিচ্ছি। বিকেল তিনটার সময় যুগ্ম-সচিব সাহেব পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আসুন। বেলা ৪টার সময় মোদীর সাথে আমাদের খেলা হবে।" মুহূর্তের মধ্যে এদের গেমটা আমার কাছে ক্লিয়ার হয়ে গেল। সমস্ত ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তু আমি। আমি তথাকথিত এমডিকে "আচ্ছা আসব" এই কথা বলে আনাকোন্ডার কবল থেকে বেরিয়ে এলাম। আর ওমুখো হইনি।

Daily Sangbad-10-09-09
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×