এক.
-ওস্তাদ ! এইরকম বেহুদা হরতালের নামে আম পাবলিক মারেন কেন ? দুই একটা রাজা উজির মারলে তাও না হয় মনডারে বুঝ দিতে পারতাম।
- আরে ব্যাডা আহাম্মক ! পৃথিবীতে সব বিপ্লবেই কমবেশি মানুষ মরে। বিনা কষ্টে বিজয় আসলে সেই বিজয়ের কোন মূল্য থাকে না। এই জন্যই কবি বলেছেন, বিপ্লব ধ্বংসের তাণ্ডবলীলা নয় সৃষ্টির প্রসব বেদনা মাত্র।
-বিপ্লব যদি প্রসব বেদনা হয় তাইলে মা কে আর সন্তানই বা কে ?
-ভাগ এইখান থিকা! দুনিয়ার বড় বড় দার্শনিকরা পর্যন্ত ঠিকমত বিপ্লব বুঝতে পারে নাই, তুই আইছোস বিপ্লব বুঝতে ?
- হ বেবাক আপনেরাই বোঝেন ! আপনাগো হরতালের নাম বিপ্লব। ভোটের নাম বিপ্লব। মদ, গাঞ্জা, ফেন্সি খাওয়ার নাম বিপ্লব। চুরি, ডাকাতি, খুন, গুম সব কিছুর নামই বিপ্লব। এর থেইকা আপনার নামটা বদলাইয়া বিপ্লব রাখেন, তাইলে যা করবেন সব কিছুতেই মাইনষে কইবো বিপ্লব করতাছে।
দুই.
-ওই পন্ডিত এদিকে আয়! ক তো এই দেশের বামপন্থী দলগুলা রাজনীতি করে ক্যান ?
-ক্যান আবার বিপ্লবের লাইগ্যা !
-আন্ডা জানো তুমি । তারা রাজনীতি করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণতন্ত্র হত্যা করার জন্য।
-এইডা একটু বেশি কঠিন হইয়া গেল ওস্তাদ।
-ওই দল গুলা কি গণতন্ত্র প্রতিষ্টার জন্য রাজনীতি করে ? নাকি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করে ?
-সমাজতন্ত্র।
-তাইলে তুই ই ক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্টা করতে হইলে গণতন্ত্ররে হত্যা করা লাগে নাকি বাচাইয়া রাখতে হয় ?
তিন.
- ওস্তাদ ! গণতন্ত্রের নামে যদি যা ইচ্ছা তা-ই করা জায়েয হয় তাইলে সবাই গণতন্ত্র গণতন্ত্র কইয়া এত চিল্যাইতাছে কেন ? গণতন্ত্ররে পিডাইয়া মাইরা কবর দিয়া ফালাইলেই তো সবাই আরামে থাকে।
-গণতন্ত্র হইলো গিয়া তোর চিংড়ি মাছ। সব তরকারির সাথেই দেয়া যায়।
-মানে বুঝলাম না।
-সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র, মোল্লাতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র- যেই তন্ত্রই দেশে চালু থাকুক না কেন সেইটা বুক ফুলাইয়া কওয়ার টাইম এইডা না। তাতে নানা ধরণের জটিলতা বাড়ে। তাই দেশে যে তন্ত্রই চালু থাকুক না কেন কইতে হয় যে, গণতন্ত্রের স্বার্থেই এইডা করা হইছে। এতে পাবলিকও দেশে গণতন্ত্র আছে বইলা বলদের মত উল্লাস করে আর বিদেশীরাও খুশী থাকে।