somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কে প্রগতিশীল আর কে রক্ষণশীল ?

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে মেয়েটি কখনো দিনের আলোয় বের হয় না। একান্ত যদি বের হয়ও সারা শরীর মুড়িয়ে রাখে কাপড়ে।যার গলার আওয়াজ কখনো কোন গায়রে মোহরেম পুরুষের কানে যায়নি। পড়াশুনা যদি একান্ত করেই, সেটা ঘরে বসে বাবা-মা কিংবা ভাই-বোনের কাছে করে- তার দৃষ্টিতে সম্প্রতি ব্রাকে নেকাবের কারণে বহিস্কার হয়ে আলোড়ন তোলা মেয়েটিও আধুনিকতার নামে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেই নেকাবধারী মেয়েটি ওই মেয়েটিকে ভাববে রক্ষণশীল এবং নিজেকে ভাববে প্রগতিশীল।

যে নারী বা পুরুষ পর্দা করে। পাশাপাশি পড়াশুনাও করে। সব সময় ইসলামের উপর থাকতে চায়। তাদের দৃষ্টিতে পর্দা যারা করে না, নারী বা পুরুষ, সবাই প্রগতির নামে অধোগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর যে নারী বা পুরুষ পর্দা করে না কিন্তু তাদের দ্বারা কারো ক্ষতিও হয় না, নারীর সাথে পুরুষ কিংবা পুরুষের সাথে নারী হাত ধরে চলেও না, তাদের দৃষ্টিতে ওই পর্দানশীল নারী-পুরুষ রক্ষণশীল। এবং নিজেদেরকে তারা মনে করে প্রগতিশীল।

যে নারী-পুরুষ প্রেম করে। হাত ধরাধরি করে রাস্তায় চলে কিন্তু জনসম্মুখে চুম্বন বা রিক্সা বা অন্য কোন আড়ালের সুযোগ নেয় না তারাও সেই সকল মানুষের দৃষ্টিতে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যারা পর্দা পালন না করলেও প্রেম করে না। আরেকটা মেয়ে বা ছেলের হাত ধরে হাটাহাটি করে না।

যারা ওপেনলি চুম্বন করে, তাদের দৃষ্টিতে যারা একাজ করে না তারা রক্ষণশীল এবং নিজেদের প্রগতিশীল মনে করে। যারা ওপেন সেক্স করে তারাও যারা করে না তাদেরকে রক্ষণশীল এবং নিজেদের প্রগতিশীল মনে করে।

কোন কোন অঞ্চলে নিজের গাছের ফল নিজে খাব টাইপের যুক্তির আড়ারে নিজ সন্তানের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের দাবী করছে পিতৃকুল। তাদের দৃষ্টিতে তারা নিশ্চয়ই প্রগতিশীল আর অন্যরা রক্ষণশীল।

সমকামীদের বিয়ের পক্ষে যারা মত দিয়েছেন তারাও যেমন নিজেদের প্রগতিশীল ভাবছে তেমনি বিরোধীদের ভাবছে রক্ষণশীল ! আর বিরোধীরাও ওদের ভাবছে প্রগতির নামে অধোগতির দিকে যাত্রা করা মানুষ আর নিজেদেরকে মনে করছে প্রকৃত প্রগতিশীল!

তো দেখা যাচ্ছে প্রগতিশীলতা বা রক্ষণশীলতার সংগা ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন হচ্ছে। তাহলে প্রগতিশীলতা বা রক্ষণশীলতার কাম্য স্টান্ডার্ড কোনটা ? একেক জাতির কাছে একেকটা ? নাকি সকল মানবগোষ্ঠির কাছে একটাই স্টান্ডার্ড হওয়া উচিত ?

ইসলাম ধর্ম সকল মানব জাতির জন্য একই স্টান্ডার্ড ঠিক করে দিয়েছে। ছতর নামের একটা টার্মের আলোকে বলে দিয়েছে একজন নারী বা পুরুষকে ন্যুনতম কতটুকু পরিমান শরীর ঢেকে রাখতে হবে। পাশাপাশি অন্য অনেক ক্ষেত্রেও বলে দিয়েছে সেগুলোর সীমা।

তবে ইসলামের এই সব বেধে দেয়া সীমার বিরোধীতা অমুসলিমদের পাশাপাশি অনেক মুসলমানও করছে। কিন্তু তারা যেটা করছে না, তাহলো বিকল্প প্রস্তাবনা। অর্থাৎ কতটুকু পোষাক পরলে তাকে শালীন বলা যাবে, কতটুকু পোষাক পরলে তাকে অশ্লীল বলা হবে।

আবার এই ধরণের সংগা যদিও দেয়া হয় কখনো, দেখা যায় একদেশের সংগার সাথে আরেক দেশের সংগার মিল নেই। কারো কাছে ভারতীয় নায়িকারা স্লিম হওয়ায় তাদের স্বল্পবসনা নাচের দৃশ্যও অশ্লীল মনে হয় না। আবার আমাদের দেশের নায়িকারা স্বাস্থ্যবতী হওয়ায় তাদের স্বল্পবসনা নাচের দৃশ্য অশ্লীল মনে হয়।

আবার ইসলামিস্টদের মধ্যেও মতভেদ আছে। কেউ শরীর ঢেকে শুধু মাথায় একটা স্কার্ফ পরলেই পর্দা পালন হয় বলে মত দেন। কেউ বোরকা পরতে বলেন। কেউ মুখ খোলা রাখতে বলেন, কেউ শুধু চোখ খোলা রাখতে বলেন। আবার কেউ চোখে রঙিন চশমা দিয়ে চোখও ঢেকে রাখতে বলেন।

তাহলে বিষয়টা কী দাঁড়ালো ? ক্যাচাল চলতেই থাকবে ?

আমার মনে হয় ধর্ম, রাষ্ট্র এবং সমাজ বিজ্ঞানীরা মিলে এই সকল বিষয় ব্যক্তির উপর ছেড়ে দিতে পারে। যার যেটা ভাল মনে হবে সে সেটা করবে। কেউ যদি রাস্তায় ন্যাংটা চলতে কমফোর্ট ফিল করে তাহলে সে ন্যাংটা চলুক। কেউ যদি বস্তায় সারা শরীর ঢেকে চলতে কমফোর্ট ফিল করে তাহলে সে তা-ই করুক।

অথবা, সবাই মিলে ন্যুনতম পোষাক এবং সর্বোচ্চ পোষাকের সীমা নির্ধারন করে দিক। ন্যুনতম কতটুকু অংশ ঢেকে রাখতে হবে এবং সর্বোচ্চ কতটুকু অংশ ঢেকে রাখতে পারবে সেটা ক্লিয়ার করে দিক।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×