কাল সন্ধ্যার ঘটনা (কাল রাতে লেখার সুযোগ, মুড কিছুই ছিল না। তাই আজ লিখছি।)। আমি ছয়টার পরপরই ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়েছি। তারপর কাকলী এসে বাসে ওঠলাম। এক মিনিটও অপেক্ষা করতে হয়নি। বাস মানে লোকাল বাস। দরকার না পরলে বাড়ি ফেরার পথে সিএনজির প্যারা আজকাল কম নিই। তাই বিআরটিসি'র দোতলা বাস বা অন্য লোকাল বাসেও উঠে যাই। কারণ অপেক্ষাকৃত 'ভালো' বাসের জন্য ৩০/৪০/৫০ বা তারো অধীক সময়ের অপেক্ষা অসহনীয়; এরচে' লোকাল বাসই স্বস্তিদায়ক।
তো আমি কাকলী মোড় থেকে বাসে উঠেছি। সিট ছিল না। দাঁড়িয়ে ছিলাম। বাসে খুব যে ভীড় ছিল তেমনও না। কাকলী মোড়ের সিগন্যালের পরপরই একটা জায়গা থেকে আরো কয়েকজন উঠলো। ফলে আমার আশপাশেও আরো দুই তিনজন দাঁড়ালো।
তবে এমন নয় যে গা ঠাঁসাঠাঁসি অবস্থা। কিন্তু হঠাত করেই আমি বুঝতে পারলাম আমার নিতম্বের উপরের দিকে বামপাশে, কোমরের খানিক নিচেই, একটা অস্বাভাবিক স্পর্শ। হাতের নয়; নিম্নাঙ্গের। আমি ভাবলাম, হয়তো আমার বামপাশে দাঁড়ানো লোকটার বামে জায়গা নেই। তাই সে এই দিকে চেপে এসেছে। কিন্তু চেপে আসলেও এরকম তো হওয়ার কথা না! যাই হোক, জায়গা নেই ভেবে আমি আমার ডানে সরে গেলাম। কারণ ওই দিকে জায়গা ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবারো একইরকম একটা স্পর্শ। এবার মনে হলো কী ব্যাপার! বাস ব্র্যাক কষেনি, গাড়ি চলছেও না, জ্যামে বসা, আমিও সরে গিয়ে জায়গা করে দিলাম! তাহলে ঘটনা কী! এইবারো আমি আরো একটু ডানে সরে গেলাম। এবার ওই ব্যক্তি এবং আমার মাঝখানে বেশ দুই তিন ইঞ্চির বেশি জায়গা ফাঁকা।
কিন্তু মিনিট কয়েক পর আমি দেখলাম আবারো আমার নিতম্বের বাম পাশে, একেবারে এক্সাক্টলি বলতে গেলে মিডিয়াস-এ(medius), নরোম মাংসপিন্ডের একটা স্পর্শ লাগলো! এবং উইদিন অ্যা ফ্র্যাকসান অফ অ্যা সেকেন্ড আমার মাথায় দপ করে আগুন জ্বলে উঠলো! আমার পাশে থাকা লোকটা সে তার পেনিস-টা ইচ্ছে করে আমার গায়ে স্পর্শ করানোর চেষ্টা করছে! যেই মুহূর্তে আমার এটা মনে হলো এক ঝটকায় তার দিকে ফিরে আমি খপ করে তার নাভির নিচে শার্টটা ধরে ফেলতে ফেলতেই আমার মুখ দিয়ে অটো বেরিয়ে গেছে, শূয়োরের বাচ্চা! দেখি তুই কী করিস! দেখি, দেখি, দেখি, তুই কী করিস!
লোকটার শার্টটা ইন করা ছিল না। শার্টটা দিয়ে সে তার জিপার খোলা পেনিস ও জিপারটা ঢেকে রেখেছিল। আমি শাটর্ট ধরে খপ করে তার নাভির নিচের দিকে তাকাতেই যা দেখলাম, তা অবিশ্বাস্য!! দেখলাম লোকটার প্যান্টের জিপার খোলা! এবং এক লহমায় দেখলাম বাদামী একটা কিছুর ঝিলিক! অর্থাৎ সে জিপার খুলে তার পেনিস কিছুটা বের করে রেখেছিল!
আমি তো তার শার্ট ধরে প্যান্টের দিকে তাকিয়ে টানাটানি শুরু করেছি! শূয়োরের বাচ্চা! তুই প্যান্টের জিপার খুলে বাসের ভিতর লুইচ্চামি শুরু করেছিস!
কিন্তু আমি যেহেতু তার শার্ট ধরে রেখেছি ফলে তার পক্ষে সহজে অন্য দিকে ঘোরাও সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু তবু সে আমার সাথে প্রায় টানাটানি করে নিজেকে ইঞ্চি দুয়েক চট করে বায়ে ঘুরিয়ে ফেললো। এবং কোনো ক্রমে কায়দা করে ডানহাত দিয়ে জিপারটা আটকে ফেললো।
তার বাম হাতে একটা ভারি ব্যাগ ছিল। ফলে সে ছিল একটা বেকায়দায়। আর আমার ডান কাঁধে আমার রোজকার ভারী কাঁধব্যাগ ছিল। ফলে আমি ওকে বাম হাতেই খপ করে ধরেছি, এবং ডান হাত খোলা না থাকায় ওর ঘুরে যাওয়াটা ঠেকাতে পারিনি।
একটা নারী যে বাসে একটা লোককে খপ করে ধরে ফেললো, সমানে চিল্লাচিল্লি শুরু করলো, গালি-গালাজ শুরু করলো তাতেও বাসের লোকজনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই! আমি খুব অবাক হলাম।
ততক্ষণে ওই লোক যেহেতু তার প্যান্টের জিপার আটকে ফেলেছে, ফলে তুলনামূলকভাবে সে একটা শক্তিশালী অবস্থানে চলে এসেছে। কারণ তার অপরাধের প্রমাণ সে মুছে দিয়েছে। এবং আমি যেহেতু শার্টের নিচের অংশটা ছেড়ে তখনো তার শার্টের কলার ধরে রেখেছি, তাকে থাপড়াবো বলছি, তখন সে উল্টা আমার উপর গলা চড়াও করেছে। কারন তাকে দেখলাম যে সে খেয়াল করে আশপাশে চোখ ঘুরিয়ে দেখলো যে মানুষ ব্যাপারটাকে অতোটা গুরুত্বের সাথে নেয়নি। ফলে, সে বুঝে গেলো যে তার জন্য পরিবেশটা নিরাপদ।
ফলে এবার সে আমাকে বলা শুরু করলো, একি থারাপ মহিলা! পুরুষ মাইনষের গায়ে ধইরা ফেলে! ছাড়েন! ছাড়েন! আপনি আমারে ছাড়েন।
আমি থাপ্পড় মারতে তার গালের কাছে হাতটা নিয়েও নিজেকে সামলেছি। সামলেছি এই কারণে যে আমি রাস্তায় একসময় প্রচুর এইরকম মাইরের ঘটনা ঘটাতাম এবং সেই অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে, একবার হাত ছুটে গেলে পরে সেটাকে থামানো মুস্কিল।
ফলে, তাকে থাপ্পড় দিতে গিয়ে গালের কাছ থেকে হাতটা ফিরিয়ে এনেছি। এবং সেই মুহূর্তে তার মুখের অভিব্যক্তিটাও আমার খেয়াল আছে।
আমি যখন চিল্লাচিল্লি করছি, শার্ট ধরে বলছি, শূয়োরের বাচ্চা! চল, তুই নাম বাস থেকে! ধরে নিয়ে পুলিশের কাছে যাবো! তুই বাসের ভেতর প্যান্টের জিপার খুলে তোর পেনিস বাইর কইরা আমার গায়ে লাগাইছিস! চল তুই।
এমন সময় সে বলে, এই বেয়াদ্দব মহিলা! আপনার কি মান ইজ্জতের ভয় নাই! খারাপ কথা বলতেছেন!
আমি বল্লাম শুয়োরের বাচ্চা! হাগছে ব্যাটার লাজ নাই দেখছে ব্যাটার লাজ!
এমন সময় পাশ থেকে একটা মেয়ে বললো, আপনি করতে পারছেন আপনার মান ইজ্জতের ভয় নাই! আর উনি বলতে পারবে না! উনার মান ইজ্জতের ভয়!
চার-পাঁচ মিনিট ধরে চিল্লাচিল্লি, শার্টের নিচে এবং কলার ধরে টানাটানি হচ্ছে অথচ নাগরিকদের ভ্রক্ষেপ নেই। এই প্রথম কেউ একজন কথা বল্লো! বল্লো একটা মেয়ে!
এরপর পাশ থেকে এক লোক বল্লো, থাক না আপা আপনার মনে হয় ভুল হইছে!!! আমি তারে দিলাম কঠিণ এক ঝাড়ি! বল্লাম, ওই মিয়া আমার ভুল হইছে! তাইলে আমি আপনারে ধরলাম না কেন! জিজ্ঞেস করেন এই শূয়োরের বাচ্চারে সে কী করছে! এই শূয়োরের বাচ্চা তুই বল, তোর প্যান্টের জিপার খোলা ছিল কি-না!
আরেক জন পাশ থেকে বল্লো থাক আপা, মাফ কইরা দেন! বল্লাম, এতক্ষনে কোথ্থেকে আপনি উদয় হইছেন! মাফ কইরা দেন! যেই শূয়োরের বাচ্চা প্যান্টের জিপার খুইল্যা বাসের ভেতর একটা মেয়ের গায়ে ঘষাঘষি শুরু করলো তারে কিছু বলার নাম নাই, আমারে বলতেছেন মাফ কইরা দেন! কেন! আপনিও কি তার মতন নাকি?
তখন সে চুপ!
কিন্তু যে লোক কুকর্ম করেছে, সে আমার সাথে তর্ক করেই যাচ্ছে। বলার চেষ্টা করছে, সে কিছু করে নাই। আমি তারে এমনিই ধরছি!
এমন সময় সে যখন আমার সাথে তর্ক করে যাচ্ছে, তখন পাশ থেকে একটু বয়স্কমতন একটা লোক খুব গলা উঁচিয়ে ওই লোকটাকে একটা ধমক দিল। বল্লো, আপনি চুপ করেন। আর একটা কথা বলবেন না। তাইলে বিপদে পইড়া যাবেন। এইমূহূর্তেই চুপ করেন।
পার্পিট্রেটর তখন গলার স্বর একটু নামাইয়া তখন আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। আপা, আমি কিছু করি নাই। আমি আবার ধমক দিলাম। গালি দিলাম। চড় মারতে গিয়া আবারো গালের উপর থেকে হাত ফিরাইয়া আনলাম।
তখন সে বললো, আচ্ছা আপা, যদি কিছু হইয়া থাকে আমি সরি। মাফ কইরা দেন।
কিসের মাফ! শূয়োরের বাচ্চা, তুই নাম। তোরে নিয়া পুলিশের কাছে যাবো।
বলতে-বলতে বাসটা জ্যামে থেমেছে এবং সে হঠাত বাস থেকে নেমে গেছে।
এমন সময় শুনি বাসের পেছন দিকে এক লোক বলতেসে, এইজন্যই মেয়েদেরকে বাসে তোলা ঠিক না। আর মেয়েদের সিট তো সামনে। ওদের সিট না থাকলে ওদেরকে বাসে তোলাই ঠিক না। তখন আবার পিছনে তাদের দিকে ফিরে তাদেরকে বলতে হইলো, কে বলছেন? কথাটা কে বলছেন? মেয়েদেরকে বাসে সিট না থাকলে উঠতে দেয়া ঠিক না কথাটা কে বলছেন!
তখন আর কেউ কথা বলে না।
কিন্তু আমি বলেই চললাম, যে শূয়োরের বাচ্চা ঘটনা ঘটাইলো তখন কই ছিলেন? তখন গলা দিয়া আওয়াজ বাইর হইলো না কেন? এখন বলতেছেন মেয়েদের বাসে তোলা ঠিক না! বাসে সবাই উঠবে। সবারই সমান অধিকার। আর নারীদের জন্য যে চার পাঁচটা সিট রাখা থাকে এইগুলো তাদের জন্য আলাদা রাখা থাকে। তারমানে এই না যে এর বাইরে আর কোনো সিটে নারীরা বসবে না বা সেই সিট ফিলাপ হয়ে গেলে নারীদেরকে বাসে উঠানো হবে না। আর দশটা লোক যেমন দাঁড়াইয়া যায় তেমনি নারীরাও যারা দাঁড়াইয়া যাইতে পারবে তারা যাবে। দাঁড়াইয়া যাওয়া, ভীড়ের মধ্যে যাওয়া এইটা তো কোনো সমস্যা না। সমস্যা হইছে লুইচ্চাদের নিয়ে। আপনি লু্ইচ্চারে কিছু বলতে পারবেন না। কিন্তু মেয়েদেরকে বাসে তুলতে নিষেধ দেবেন, আপনি কোন খানের কাবিল লোক, ভাই! এই যে আপনার মতন ম্যান্দামারা মানুষ যারা তারা বাসায় গিয়ে বউয়ের উপর চোটপাট করবে, বউ-মেয়ে-বোনেদের বাক্সের ভিতর ভইরা রাখবে কিন্তু যে শূয়োরের বাচ্চা লু্ইচ্চামি করবে তারে কিছু বলবেন না। আপনারাই আসল কালপ্রিট। আপনাদের জন্যই লুইচ্চারা সমর্থন পায়।
এইসব কথা আরো আরো কী কী বলতেছিলাম অতো খেয়াল নাই, তখন একজন বল্লো, থাক আপা, ওর আসলে এইটা বলাটা ঠিক হয় নাই। তখন আশপাশ থেকে লোকেরা গুঞ্জন করা শুরু করলো, আসলে আপা হইছে কী! আমরা বুঝি নাই যে সে আপনার সাথে এমন একটা কাজ করছে! আরেকজন বললো, আসলে আপনার কথা থেকে বোঝা যায় নাই যে সে ওই রকম একটা কাজ করছে। আমি ভাবছি আপনার মোবাইল-টোবাইল কিছু একটা নিয়া-টিয়া গেছে বোধ হয়!
আমি মানুষের এই অদ্ভুত ঔদাসীন্য দেখে ভেতরে থ হয়ে গেলাম! এই আমার নগর! এই আমার দেশ! পাশের মানুষটাকে চিৎকার করে মরে যেতে দেখলে তাকে সাহায্য করা তো দূরে, নিজেরা ঘরে গিয়ে আগে দরজা আটকায় নিজেকে নিরাপদে রাখার জন্য! এরাই তো অপরাধের আসলে ব্রিডিং গ্রাউন্ড।
পরে কারওয়ান বাজারে বাস থেকে নেমে হেঁটে রাস্তা পার হওয়ার সময় এক লোক পাশ থেকে শুনি বলছে, আসলে আপা হইছে কী বুঝতে পারি নাই যে লোকটা এইরকম অপকর্ম করছে! আপনি যদি ঠাস কইরা একটা চড় মাইরা দিতেন আর বলতেন সে কী করছে তাইলে কিন্তু আজকে ওর হাড্ডি লোকে ভাইঙ্গা দিত! তবে, একটা কথা ঠিক! আপনি তো সাহস কইরা বলছেন। এরকম তো রোজই কত হয়! কেউ তো কিছু বলেই না।
আমি তাকে বাসে খেয়াল করিনি। বাসে রোজ কত লোক আসে কেউ কাউকেই খেয়াল করে না। কিন্তু তার কথার প্রসঙ্গ থেকে বোঝা গেলো, সে বাসে ছিল। তার কথা আমি শুনলাম। তাকে বিশেষ কিছু বল্লাম না।
কিন্তু আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কেন আমি নিজের এই কথা ফেসবুকে লিখে সবাইকে জানাচ্ছি? লিখছি ফেবুতে থাকা আমার নারী শিক্ষার্থী এবং নারী বন্ধুদের জন্য। লিখছি, এই কথা জানাতে যে, আপনি যখন এইরকম কোনো ঘটনার মুখোমুখি হবেন তখন প্রথম কথা হলো, মনোবল হারাবেন না। এখানে আপনার ইজ্জত যাওয়ার কিছু নাই। আপনার মানিব্যাগ চুরি গেলে, আপনাকে ছিনতাইকারী ধরলে যেমন আপনার ইজ্জত যাওয়ার কিছু নাই তেমনি একটা বদমাইশ আপনার সাথে লুইচ্চামি করার চেষ্টা করেছে বলে আপনি নিজে বেইজ্জতি হন নাই। যে করছে এটা তার বেইজ্জতি। এটা তার অন্যায়। তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলেন। আশপাশের লোকজনকে ডেকে দেখানোর চেষ্টা করেন। যদিও, আপনি জানেন যে লোকে হয়তো আপনার ডাক শুনবে না। তবু, এটা করুন। এতে অপরাধী একটু হলেও ভড়কে যাবে।
আর দ্বিতীয় কথা হলো, কেউ আপনাকে সাহায্য করছে না, উল্টো আপনিই ভুল করেছেন বলে আপনার উপরে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করলেও ভয় পাবেন না। কারণ যারা এমন বলে মনে রাখবেন, তারাও অপরাধীর দোসর। তাদেরকেও পরিস্থিতি বুঝে জুৎ মতন একটা উত্তর দিয়ে দিন। দেখবেন, জোঁকের মুখে নুন পরার দশা হবে।
বাংলাদেশের স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে, বিরোধীদলীয় নেত্রী, মাননীয় স্পিকার বা যে কোনো ক্ষমতাবান নারীকে তাদের রক্ষা কবচের বাইরে এসে একবার রাস্তায় চলাচল করতে দিন। তারপর দেখুন এই সমাজে নারী অধিকার কতটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর অপরাধীরা এই সমাজে কতখানি শক্তিশালী।
অফিস, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সবখানে এইসব আছে। কিন্তু নারীরা কথা বলেন না। চুপ করে থাকেন। কারণ তারা মনে করেন তারা স্টিগমাটাইজ্ড হবেন। অবশ্য, এই সমাজ করেও তাই। তাকেই স্টিহমাটাইজড করেন। তাকেই দেয়া হয় লোকলজ্জা। যতদিন এই মানসিক ব্যাধি না কাটবে ততদিন এই সমাজে সুস্থ্য পরিবেশ তৈরি হবে না। বন্ধ হবে না এই সমাজের অপরাধ প্রবণতা।
নারীর অধিকার মানে এই না যে নারীকে আপনি সুরক্ষার নামে বাক্সবন্দী করে রাখবেন; তার চলা-ফেরা গতিবিধি নিয়ন্ত্রন করে দেবেন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে সমাজে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা বদল ঘটাতে হবে।
নারীর লড়াই সার্বিক; সামগ্রিক। যে পার্পিট্রেটর ছিল বাসের লোকজন তাকে কিছু বলেনি। কিন্তু আমাকেই বলেছে, আমি ভুল করেছি। নারীকে বাসে তোলা ঠিক হয়নি সেটাই তারা বলেছে। ফলে, শুধু পার্পিট্রেটর নয় নারীকে লড়তে হয় অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়া মানসিকতা ধারণকারী সমাজের বিরুদ্ধেও। তাই আপনার এই লড়াইয়ে আপনি কাউকে সঙ্গে পাবেন এমনটা আশা না করেই লড়াই জারী রাখা ভালো। এই সমাজ আপনার। আপনারই বদল ঘটাতে হবে। সমাজ বদলের জন্য কে উদ্যোগ নেবে তার আশায় বসে না থকে আপনিই উদ্যোগ নিন। সমাজ পাল্টাবে।
২২.১২.১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১০