আজ বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল আলোচিত সমালোচিত নায়ক অনন্ত জলিলের জন্মদিন।অনন্ত জলিলের দেয়া তথ্যমতে তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলায় তার সাথে বাবার কাছে বড় হয়েছেন। তার পাঁচ বছর বয়সে তার মা মারা যান।অনন্ত জলিল ও লেভেল আর এ লেভেল করেছেন ঢাকার অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে। এরপর ম্যানচেস্টার থেকে বিবিএ এবং ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়েন।অনন্ত জলিলের সহধর্মিণী তার অধিকাংশ চলচ্চিত্রের নায়িকা আফিয়া নূসরাত বর্ষা।
অবিরত যখন বাংলাদেশে প্রেক্ষাগৃহ ভেঙ্গে তৈরি হচ্ছে শপিং মল, বড় রূপালী পর্দার আচ্ছন্ন আকর্ষণের বদলে দর্শক ভিনদেশী সিনেমা দেখার জন্য সাধ্যানুসারে বেছে নিয়েছেন টিভি, পিসি, ল্যাপটপের ছোটপর্দা; তখন সিনেমাপাড়ায় অনন্ত জলিলের প্রবেশ ‘খোঁজ দ্যা সার্চ’ ছবির মাধমে। তারপর এক এক করে করেছেন- ‘দ্য স্পিড’, ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’, ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ এবং সর্বশেষ ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’।সামনে মুক্তি পেতে যাচ্ছে 'মোস্ট ওয়েলকাম টু'. চলচ্চিত্রে নায়ক এবং প্রযোজক হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এবং মোস্ট ওয়েলকাম টু চলচ্চিত্রের পরিচালনার কাজটিও অনন্ত জলিল নিজে করেছেন। নির্মাণে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, বেশ চকচকে রঙ, বেশ ভালো মানের অডিও, ধুন্ধুমার এ্যাকশন ইত্যাদি উপাদান অনন্ত জলিলের চলচ্চিত্র গুলো দেখতে নির্দিষ্ট শ্রেণীর প্রেক্ষাগৃহ বিমুখ দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে ফিরিয়ে নিয়েছে। সিনেমাপাড়ায় এ মানুষটির পথচলায় আমাদের সিনেমার বাজার যে একটু চাঙ্গা হয়েছে একথা অস্বীকার করা যাবে না।খোদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত স্বপরিবারে প্রেক্ষাগৃহে বসে তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা চলচ্চিত্রটি উপভোগ করেছেন। তিনি চলচ্চিত্রের উন্নয়নে ইতোমধ্যে ভবিষ্যতে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে ভারতের প্রাসাদ ল্যাবের আদলে নিজস্ব সিনে ল্যাব নির্মাণ এবং প্রতি জেলায় একটি করে মাল্টিপ্লেক্স নির্মাণের ঘোষণা।
সামাজিক মাধ্যমে অনন্ত জলিল তুমুল আলোচিত ব্যক্তি। তাকে নিয়ে ফেইসবুক ব্লগ ইত্যাদি অনলাইন মাধ্যমে নিয়মিতই হয় তর্ক বিতর্ক। তার এই তুমুল চাহিদার কারণে ইতোমধ্যে তিনি বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোন, ইফাদ ওয়েভি চিপস। তাছাড়া বি এম ডাব্লিউ এর বাংলাদেশ শাখার ব্র্যন্ড এম্বাসেডর তিনি।পাশাপাশি গেল বছর তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন। অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর উপন্যাস ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার নীরব মিশনে অনেকটাই সফলতার দেখা পেয়েছেন জলিল। মূলত নায়ক কিংবা ব্যবসায়ী হলেও অনন্ত জলিল মানবদরদী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে তার উপস্থিতি এবং আর্তমানবতার সেবায় তার ভূমিকা চোখে পড়ার মত। অনন্ত জলিল সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে ৩টি এতিমখানা করেছেন। মিরপুর ১০ নম্বর, বাইতুল আমান হাউজিং ও সাভার মধুমতি মডেল টাউনে আছে এতিমখানাগুলো। এ ছাড়াও সাভারের হেমায়েতপুরের ধল্লা গ্রামে সাড়ে ২৮ বিঘার ওপর একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন এই নায়ক।
প্রতিবছরের মত এবারও তিনি এতিমখানার ১৬০০ বাচ্চার সাথে নিজের জন্মদিন পালন করবেন। জন্মদিনে দেয়া এক ফেইবুক স্ট্যাটাসে অনন্ত জলিল লিখেছেন, “আজ আমার জন্মদিন যা কেউ জানেনা, ভক্তরা আমার জন্য দোয়া করবেন।”
আমাদের পক্ষ থেকে তার প্রতি রইলো শুভকামনা এবং দোয়া। আশা করছি বাংলা চলচ্চিত্রকে তিনি আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন...