ব্রিজ(bridge) - সেতুঃ
বেশিরভাগ কুসংস্কারগুলোই সেতুর সাথে জড়িত। তারা বলে এই অমঙ্গলজনক গাঁথুনিটিকে সমমানের সাথে দেখতে হবে, কার সম্ভবত কারো কারো কাছে এটা জীবন থেকে মৃত্যুর দিকে অতিক্রম করার প্রতীক চিহ্ন। বিগত দিনে মানুষ একটি সেতু তৈরি করার পর প্রথমে তার ওপর দিয়ে অতিক্রম করায় সবচেয়ে বেশি অনীহা প্রকাশ করতো। কারণ তাদের ধারণা ছিল যে, শয়তান সেই জীবন প্রাণীর আত্মাকে চায়, যে এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রথমে অতিক্রম করে এবং সেজন্য প্রথমেই একটা পাখি অথবা কোনো ছোট প্রাণীকে সেতুর ওপর দিয়ে পাঠাতো। সেল্টিক জাতীয় লোকেরা এই প্রথয় বিশ্বাস করতো যে, সেতুর ওপর দিয়ে যাবার সময় অথবা নিচে দিয়ে অতিক্রমকালে কেউ কথা বলতে পারবে না। এতে তাদের অমঙ্গল হবে বলে হুঁশিয়ার করে দেয়া হতো। একটা ধারণা ছিল যে দু’জন লোক যদি একটি সেতুর ওপর থেকে আলাদা হয়ে দুই দিকে চলে যায় তবে তারা জীবনেও আর একে অন্যের দেখা পাবে না, এটা চিরন্তন সত্য এবং বহু লোকই সমস ইউরোপের মধ্যে একটি সেতুর নিচে দিয়ে যাবে না যখন ওপর দিয়ে একটি ট্রেন চলে যায় অথবা ওপর দিয়ে যাবে না, যখন ট্রেনটি সেতুর নিচে দিয়ে যায়।
সেতু নির্মাণকারীগণ প্রথম পিলারের মধ্যে প্রস্তুর স্থাপনের সময় চুন বালু সুরকির সাথে কিছুটা মদ ঢেলে দিতো অথবা একটা ঋতুমুদ্রা অথবা এক টুকরো লোহা ফেলে দিতো, যার দ্বারা ভবিষ্যতে স্টাকচারটির সৌভাগ্য নিশ্চিত হয়। তৎসত্ত্বেও কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকদের ধারণা ছিল একটি লাশ নিয়ে যাবারকালে কখনোই একটি সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করা যাবে না তাতে সেতুটি তাদের নিয়েই ভেঙ্গে পড়বে।
ব্রিমস্টোন (brimstone)- গন্ধকঃ
গন্ধক সম্পর্ক তারা মনে করে , এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে দোজখ এবং তার মধ্যের শয়তানের সাথে । তবুও এর রয়েছে অনেক গুণ সম্পন্ন উপাদান। ইংরেজদের কুসংস্কারে বলা হয়, যদি কোনো লোক খিঁচুনি রোগে আক্রান হয় তাহলে সে যেনো সাথে গন্ধক রাখে অথবা বিছানায় গন্ধক নিয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই তার খিঁচুনি রোগ ভালো হয়ে যাবে।
ব্রুম (broom)- ঝাঁটাঃ
এক প্রকার হলুদ ফুলের গুল্ম , যেটাকে ব্যাপকভাবে অমঙ্গলসচক দুর্ভাগ্যের চিহ্ন বলে বিবেচিত হতো। তার ফুল বিশেষভাবেই কোনো বৃটিশদের গৃহে অভ্যর্থনা পেতো না মে মাসে। তাদের বিশ্বাস ছিল তা মৃত্যুকে ঘরে ডেকে আনে। ঐ গুল্মের ঝাঁটার ব্যবহারও ঐ মাসে সমভাবে ছিল অনাকাক্ষিত। প্রাচীন প্রবাদ-বাক্যে যেমন বলা হয়েছে-
‘If you sweep the house with broom in may
you Il Sweep the head of the house away’
অর্থাৎ
"মে মাসে যদি তুমি
ঝাড়ূ দিয়ে সাফ করো ঘর
তার সাথে গৃহকর্তা
চিরতরে হয়ে যাবে পর"।
ঝাঁটা দিয়ে একটি দুষ্ট শিশুকে উত্তম মধ্যম প্রহার করলে আগেকার দিনে ধরে নেয়া হতো শিশুটির বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। যাই হোক মধ্য যুগে এই লতাগুল্মটির কদর হয়েছিল ভেষজ চিকিৎসকদের কাছে। হেনরি সম্বন্ধে জানা গেছে যে তিনি অনেকগুলো রোগের চিকিৎসার জন্য টনিক হিসেবে এই গুল্মের ফুলের রস ছেঁকে পান করতেন।
এই গুল্মের ফুল এর যাদুকরী শক্তি সম্বন্ধে আরও বলা হয় যে, এটা দ্বারা অবিশ্বাস্য ফল লাভ হয় ঘুম আনয়ন ও শয়তানী শক্তিকে তাড়ানোর ব্যাপারে।
বাবল (bubble)-জল বুদবুদঃ
আটলান্টিক মহাসাগরের উভয় পার্শ্বেই একটি কুসংস্কার বিরাজ করে যে, যদি একজনের চা বা কফির পেয়ালায় বুদবুদ ভাসতে দেখা যায় তাহলে পানকারীর আর্থিক সৌভাগ্য লাভ হবে।
বাকিট (bucket)-বালতিঃ
বিনম্র বালতি বহু সংখ্যক কুসংস্কারের জন্ম দিয়েছে। তার মধ্যে এই ধারণা রয়েছে যে, সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার সময় একটি বালতির পাশ দিয়ে গেলে বালতির অবস্থা অনুপাতে দিনের গতি নির্ধারিত হবে।
যদি বালতিটি পর্ণ থাকে তাহলে ভাগ্য ভালো হবে, কিন্তু যদি বালতিটি শন্য থাকে তাহলে দিনটি দুর্ভাগ্যের দ্বারা নষ্ট হয়ে যাবে। এভাবে যদি একটি খালি বালতি ঘরের দোয়ারে রাখা হয় এবং তা হয় যীশুখৃষ্টের ধর্মেদীক্ষার অনুষ্ঠানের দিনে এবং প্রত্যেকটি বিবাহিতা নারীকে বলা হয় তার ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে পার হতে- যদি কেউ পার হতে না পারে তাহলে ধরে নিতে হবে সে গর্ভবতী। যে সকল নাবিক প্রাত্যহিক কাজের মধ্যে বহুবিধ কুসংস্কার দেখতে পায় তারা দাবী করে যে, যদি একটি বালতি জাহাজের বাইরে পড়ে গিয়ে হারিয়ে যায় অবশ্যই তা হবে একটা দুর্ভাগ্যের বার্তাবাহক। ইত্যবসরে জেলেরা এই ধারণা করে যে বালতি উল্টো করে তার ওপর যে কেউ বসবে ভাগ্য তার কাছে থেকে চলে যাবে।
তরুণী বালিকাদের উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে যে, তারা যেনো বছরের প্রথম চাঁদ ওঠার দিন চাঁদের আলোয় একটা পানি ভরা বালতির ওপর সিল্কের রুমাল রেখে তার মধ্যে দেখে তারা যতোটি চাঁদের প্রতিবিম্ব দেখতে পাবে ঠিক ততো বছর লাগবে তাদের বিয়ে হতে।
বুল (bull) ষাঁড়ঃ
ষাঁড়ের বিরাট শক্তি সামর্থ্য অনেক কুসংস্কারকে অনুপ্রাণিত করছে এবং সুরক্ষা শক্তির মল্যকে জাগ্রত করেছে। বলা হয়ে থাকে যে ষাঁড় বজ্রপাতের আঘাত থেকে সুরক্ষিত এবং এই জন্য বৃষ্টি বজ্রপাতের সময় একটা সাঁড়ের খোঁয়াড়ে আশ্রয় গ্রহণ করা চমৎকার নিরাপদ স্থল। ইত্যবসরে একটা ষাঁড়ের ধমনীতে একটা সুচ গেঁথে সেটাকে চিমনীর কাছে রাখলে তা ডাইনীদের তাড়িয়ে দেবে। সম্ভবত প্রাচীনকালের ষাঁড়দের প্রতি ধর্মীয় ভক্তির ফলে অনেক সময় সপ্তদশ শতাব্দির ডাইনীরা দাবী করতো যে, শয়তান ষাঁড়ের আকৃতিতে তাদের ক্ষুদ্র বক্ষের মধ্যে উপস্থিত হতো।
প্রেম সম্বীয় ব্যাপারে ষাঁড়ের অন্ডকোষ দ্বারা তৈরি খাবারের থালাকে সবচেয় শক্তিশালী ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করা হতো যা নাকি যৌন কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে।
বাম্বল-বী (bumble-bee)-ভ্রমরঃ
একটি ভ্রমর ঘরের মধ্যে উড়তে দেখা গেলে তার অনেক অর্থ হতে পারে। বৃটিশদের কুসংস্কার এখানে বিভক্ত। অনেকে দাবী করে এটা একটা নিশ্চিত ইঙ্গিত যে, একজন দর্শক আগত প্রায়। যখন অন্যেরা আরও বেশি অমঙ্গলের প্রতি ইঙ্গিত করে বলে এটা একটা মৃত্যুর আলামত। স্কটল্যান্ডে বলা হয় শরৎকালে প্রথম ভ্রমরটি দেখা মাত্রই মেরে এটা সুরক্ষা করতে হবে তাতে ঘরের মালিক সব সময়ই সৌভাগ্যবান থাকবে এবং কখনো দুঃখ দৈন্যতা আসবে না।
বানিয়ন (bunion)-পদতলের যন্ত্রণাদায়ক ফোঁড়াঃ
কুসংস্কারে এই পরামর্শ দেয় যে, বানিয়ন সেরে তোলার জন্য গরুর গোবরের একটি পুলটিস বেঁধে দিলেই হবে তার সাথে দিতে হবে মাছের তেল এবং এক রাত বেঁধে রেখে দিতে হবে।
বার্ন (burn)-আগুনে পোড়াঃ
কুসংস্কারের মধ্যে রয়েছে আগুনে পোড়া বা উষ্ণ তরল পদার্থে ঝলসে যাওয়া রোগীর বহুবিধ চিকিৎসার পরামর্শ। তার মধ্যে শত সহস্র প্রকার মন পড়ে ক্ষত স্থানে ফুক দেয়াই হচ্ছে প্রধান। ১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডে লিপিবদ্ধকৃত নিম্নবর্ণিত উদাহরণটি আদর্শ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
‘There came two angles from the North, One was Five, the other one Frost, Out Fire, in Frost, In the name of Father, Son and Holy Ghost’
অর্থাৎ
‘উত্তর প্রদেশ থেকে এসেছিল দুইটি অশরীরী জীব
একটি আগুন তার
অন্যটি তুষারের কণা
নিভলো আগুন, জমলো তুষার
পিতা, পুত্র আর সেই
পবিত্র আত্মার নামে’।
শ্রপশায়ার-এর প্রথামত রাজহাঁসের মল এবং এলডার এর ছাল মে মাসের মাখনের সাথে ভেজে লাগাবার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
আর চেশায়ারে বসবাসকারীগণ পরামর্শ দেয় যে গীর্জায় বিছানো কাপড়ের একটি টুকরো দিয়ে ক্ষত স্থানটিকে ঢেকে দিলে রোগ ভালো হয়ে যাবে।
ব্রেড এন্ড বাটার (bread and butter) রুটি এবং মাখনঃ
পশ্চিমা সংস্কৃতিতে মাখন মাখানো রুটির নিজস্ব একটা পৌরানিক কাহিনী আছে। সবচে প্রসিদ্ধ কুসংস্কার হচ্ছে যে, একাকী কোনো বালিকা তার প্লেটে সর্বশেষ মাখন রুটির টুকরাটি নিজে তুলে নেবে না, যদি না সেটা তাকে কেউ তুলে দেয়। এই ক্ষেত্রে সে একজন সুন্দর সুপুরুষ স্বামী অথবা বছরে ১০ হাজার পাউন্ড পাবে। তাকে কেউ না দিলেও যদি সে সর্বশেষ টুকরাটি নিজের প্লেটে তুলে নেয় তাহলে তার ভাগ্যে কখনোই বিয়ে আসবে না। ইত্যবসরে কোনো বালিকা যদি মনের ভুলে প্রথম মাখন রুটির টুকরোটি খেয়ে শেষ করার পূর্বেই দ্বিতীয় টুকরোটিতে কামড় দেয় তবে শীঘ্রই তার বিয়ে হবে।
ব্রাশ (brush)- ঝাড়ূঃ
বুরুশ বা ব্রুমকে আপাত দৃষ্টিতে একটা নির্দোষ গৃহস্থালী সরঞ্জাম মনে হয় (একদা এটাকে বলা হতো (besom) ঝাঁটা)। এটা হচ্ছে কুসংস্কারী বিশ্বাসের মহা সম্পদ। ঘরের জন্য একটি ঝাড়ূ সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে একেবারে শেষ মুহর্তে ফেলে দেয়া পর্যন্ত এর প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে।
প্রাচীন প্রবাদে আছে মে মাসে কখনোই একটা ঝাড়ূ কিনবেন না, তাহলে তুমি তোমার পরিবারের একজনকে ঝাড়ূ দিয়ে ফেলে দেবে এই ধারণাটা আজ পর্যন্ত কোনো কোনো অঞ্চলে পালিত হয়। এই পর্ব সংস্কারটি টুথব্রাশ ক্রয় করার সাথেও জড়িত রয়েছে, যদিও এর পেছনের কারণটি এখনো অজ্ঞাত রয়ে গেছে। ক্রয় করার পর লক্ষ্য রাখতে হবে ব্রাশটি কিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ করে যদি কেউ প্রথমবারের মতো একটি নতুন ব্রাশ অথবা একটা নতুন তৈরি ঘরে একটি ব্রাশ ব্যবহার করতে চায়। এটা বিশেষভাবে জরুরি যে, সব সময় ময়লাটাকে ঝাড়ূ দিয়ে ঘরের বাইরে না ফেলে ঘরের মধ্যে রাখতে হবে, তা না হলে ময়লার সাথে গৃহকর্তার ভাগ্যও চলে যেতে পারে ( এর সমাধান হচ্ছে একটা ময়লার পাত্রে করে ময়লাটি বাইরে নিয়ে ফেলে দেয়া)। উপরের কক্ষগুলো অবশ্যই দুপুরের আগে ঝাড়ূ দিতে হবে। এর পরে দিলে তাতে আশঙ্কা করা হয় যে একটা মৃত দেহ এই পথেই বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। যাই হোক পুরাতন ঝাড়ূ কখনোই নতুন ঘরে নেয়া যাবে না; স্যার অকার নেমে আসার পর ঘর ঝাড়ূ দেয়া যাবে না; ঝাড়ূ ধার করাও যাবে না, ধার দেয়া বা পোড়ানোও যাবে না। আরও রয়েছে যে, কেউ কখনো ঘরের ভেতরটা ঝাড়ূ না দিয়ে প্রথমে ঘরের বাইরে ঝাড়ূ দেবে না; কোনো মরা লাশ ঘরে থাকা অবস্থায় কেউ ঝাড়ূতে হাত লাগাবে না।
বিশেষ করে যে ঘরে একজন গর্ভবতী মহিলা রয়েছেন অথবা একজন সদ্য প্রসতি মা রয়েছেন সেখানে ঝাড়ূ দেয়া অত্যন বিপজ্জনক। এটা বিশেষভাবে আবশ্যক যে খাটের নিচে ঝাড়ূ দেয়া যাবে না, তাহলে সেই মহিলা মারা যাবে। ইত্যবসবে কখনোই ঝাড়ূ দিয়ে টেবিল পরিষ্কার করা যাবে না এবং সূর্য পড়ে এমন জায়গা থেকে ঝাড়ূ দিয়ে ময়লা ভেতরে আনতে হবে, সুর্যালোকের মধ্যে ঠেলে দেয়া যাবে না (এবং কখনোই সামনের দরজা দিয়ে বাইরে নেয়া যাবে না)।
যে কোনো কারণেই হোক না কেন গুড ফ্রাইডের এবং নব বর্ষের দিনে ঘর ঝাড়ূ অবশ্যই দেয়া যাবে না, তাতে যে কোনো একজন আত্মীয়ের জীবন বিপন্ন হবে।
ঝাড়ূ দেয়া শেষ হয়ে গেলে ঝাড়ূটিকে তার হাতলের ওপর ভর করে রাখতে হবে-ব্রাশের ওপর নয় এবং ঘরের এক কোণে রাখাও উচিত নয়। তাহলে ঘরের মালিকের নিকট একজন আগন্তুকের উপস্থিতি ঘটবে। একজন লোক একটি ঝাড়ূর পাশ দিয়ে হেঁটে যাবার সময় হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই যদি ঝাড়ূটি মাটিতে পড়ে যায়, তাহলে তার দুর্ভাগ্য অবশ্যই আশা করা যায়। একটা পড়ে থাকা ঝাড়ূর ওপর অলক্ষে পা রাখা বা তা ক্রস করে যাওয়া সমভাবে দুর্ভাগ্যজনক। একটি কুমারী মেয়ে অবশ্যই এটার প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখবে। কারণ যদি সে একটা পড়ে থাকা ঝাড়ূর ওপর দিয়ে ডিঙিয়ে যায় তার অর্থ হচ্ছে অবিবাহিত অবস্থায় তার গর্ভবতী হবার ঝুঁকি আছে, সতী হবার পূর্বেই সে মা হয়ে যাবে। যদি ঝাড়ূ দেবার সময় হাতল খুলে যায় তাও হবে অত্যন দুর্ভাগ্যজনক এবং এটার অর্থ এই দাঁড়াতে পারে যে যদি ঝাড়ূ দেবার বিনিময়ে সে কোনো বেতন পায় তাহলে এটা হবে একটা নিশ্চিত সংকেত যে, সে তার বেতন পাবে না।
বেশিরভাগ মানুষই এই বহু পুরাতন কুসংস্কারটির সাথে পরিচিত যে, ডাইনীরা তাদের গৃহে ফেরার জন্য ঝাড়ূর শলার ওপর ভর করে উড়ে চলে (যদিও পর্বে তাদের প্রসিদ্ধি ছিল যে তারা লাঠির ফাটলের মধ্যে করে লম্বা হাত ওয়ালা কোদালে চড়ে, ডিমের খোসায় চড়ে, পশুদের ঘাড়ে চড়ে বা অন্য উপায়ে উড়ে যায়)। এটা বলা হয়ে থাকে যদি শনিবার রাতে একটি ঝাড়ূ কারণবশত বাইরে থেকে যায় তাহলে সেটা নিজে নিজেই গায়েব হয়ে যায়, ডাইনীদের সেটাকে প্রয়োজন হোক আর নাই হোক সেই ঝাড়ূটা অন্যান্য ঝাড়ূর সাথে মিশে ডাইনীদের গৃহে বিশ্রামের জন্য চলে যায়। সাধারণত ঝাড়ূর ওপর ভর করে ডাইনীরা ধমনালী (Chimney)র মধ্য দিয়ে বাইরে চলে যায়। সম্ভবত এটা এই প্রথা থেকে এসেছে যে, চিমনীর ওপর একটা ঝাড়ূ বেঁধে রেখে এই বোঝানো হতো যে গৃহিনী ঘরে নেই। প্রকৃত পক্ষে কিছু কিছু দোষী সাব্যস ডাইনীরা কখনোই স্বীকার করেনি যে তারা ঝাড়ূর শলার মধ্যে বসে উড়ে যায়। এই কল্পনাটা সম্ভবত এসেছে মতিভ্রমের ওষুধ সেবনের ফলস্বরূপ। যদিও কিছু সংখ্যক ডাইনী এটা স্বীকার করেছে যে তারা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে নৃত্যের সময় একটা লাঠিতে ভর করে দাঁড়াতো। বিপরীত দিকে প্রকৃত ডাইনীদের বাধা দেয়ার জন্য ঝাড়ূর ডান্ডা ব্যবহার করা হতো। যদি একটি ঝাড়ূ আড়াআড়িভাবে দরজায় ফেলে রাখা হয় তা একটি ডাইনীকে ঘরে প্রবেশ থেকে বিরত রাখবে।
ঝাঁটার হাতলের বিবাহ এক সময় তুলনামলকভাবে রীতি বিরুদ্ধ বিবাহ অনুষ্ঠান হিসেবে ছিল। এটা ওয়েলস ও জিপসীদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এই বিবাহ আইন সিদ্ধ বলে বিবেচিত হতো যখন নর দম্পতি হাত ধরাধরি করে একটা ঝাঁটার ওপর দিয়ে এক সাথে হেঁটে নতুন ঘরে স্বামী-সতী হিসেবে প্রবেশ করতো; যেখানে তারা স্বামী-সতী হিসেবে বসবাস করবে বলে সিদ্ধান নিয়েছে। প্রথম বছরের যে কোনো সময়ে এই বিয়ে ভেঙ্গে দিতে হলে তখন তারা পর্বের নিয়মের বিপরীতে আবার ঝাড়ূর হাতল অতিক্রম করে চলে যেতো। সবশেষে মাছ ধরতে অথবা অন্য কোনো ব্যবসা সংক্রান ব্যাপারে ঘরের বাইরে যাবার সময় একটা ঝাড়ূ ছুঁড়ে মারা ছিল সৌভাগ্যের প্রতীক। বলা হতো এটা তাদের সৌভাগ্য এনে দেবে।
কুসংস্কার নিয়ে আমার আরেকটি লিখাঃ
আনলাকি থার্টিন , লাকি সেভেন , শুভ নববর্ষ আর প্রচলিত কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের কুসংস্কার ও কিছু কথা
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬