- তুই বিয়ে করিস না কেন রে
- ধুর বিয়ে একটা ঝামেলা!! এই দেখ, সকাল ১২ টায় উঠলাম। আজকে আবার হরতাল। এখন একা একা রিকশায় ঘুরব কিছুক্ষণ। এরপর দেখি কি করা যায়, পরিকল্পনা করেই তো প্রতিদিন যায়। আজকে না হয় একটু এলোমেলো করেই কাটুক।
- এভাবে এলোমেলো কয়দিন আর? বিয়ে কর একটা এবার।
- আমি মানুষটাই তো এলোমেলো। সাজানো জীবন আমাকে মানায় না রে। এই যে মা কত সুন্দর করে মুখের সামনে নাস্তা ধরল। নাস্তা করে এই যে এখন রেডি হচ্ছি রাস্তা মাপতে বের হব। যেখানে ইচ্ছা যাই, যা ইচ্ছা করি কোন মানা নাই, কোন বাঁধা নেই। বিয়ে করলে হত এমন বল?
- কেন? এখন মা খাওয়াচ্ছে, বিয়ের পর বউ এসে খাওয়াবে তোকে!!
- হ!! বউ আর খাওয়াবে!! বিষটা খাওয়ায় মারবে আমাকে আর কি!! সকালে উঠো না কেন? সিগারেট খাও কেন? সারাদিন ল্যাপটপে এসব কি কর? আমাকে সময় দাও না কেন? এইসব প্যানপ্যান শোনার সময় আছে নাকি আমার!! ধুর!!
- যা কি বলিস!! এমন করবে না, বিয়ে কর দেখবি তোকে অনেক আদর করবে দেখিস!!
- আণ্ডা টা করবে আমার! নিজে কামাই অল্প কয়টা টাকা এর মধ্যে নিজের খরচ চালাতেই হিমসিম খাই তার উপর বিয়ে করলে ঐটা যদি কোন কামাই না করে তাইলে ঐটারে খাওয়ানো, পরানো আর এক্সট্রা এক্সট্রা খরচ তো আছেই!! এত গাবায় না!!
- হাহাহাহা ভালই বলেছিস। তাহলে একটা ছেলে বিয়ে কর মেয়ে না করে, জামাই নিয়ে আসুক একটা তোর জন্যে?
- জামাই আসলে মনে হয় খুব আলাদা কিছু হবে?? ঐ একই তো জিনিস। আস্ত একটা আপদ। আর আদরের কথা বলিস? বউ আসুক আর জামাই আসুক ঐ আদর কয়দিন থাকে জানা আছে, যেই একটু নিজের স্বার্থে লাগবে সব আসল চেহারা বের করে দেয়। বহু দেখেছি এমন। একেকজন শুরুতে খুব প্রেম প্রেম ভাব দেখায়, আমাকে ছাড়া নাকি তাদের চলেই না! কিছুদিন যাবার পর আমি ওনাদের মর্জি মত না চললেই একেকজনের রঙ্গিন রঙ্গিন চেহারা দেখা যায়, লাল, নীল, বেগুনি আরও কত কি!! রংধনু ফেইল ঐ চেহারার কাছে, হাহাহা!
- যা ইচ্ছা কর!
- তাই করব, আমার জীবন, আমার ইচ্ছা, যেভাবে ভাল লাগে সেভাবে থাকব। আসি আজকে বাই বাই।
কথা শেষ করে আয়নায় নিজেকে আরেকবার দেখে বের হয়ে এলাম। হ্যা, লিপস্টিক ঠিকই আছে। রিকশা পাওয়া গেলে হয় এখন...
(গল্পের চরিত্র আমি)