somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল :বাংলার জয়

১৫ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন দুইশ' দিয়েছে সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় এ রায়ের পর জার্মানির হামবুর্গ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ফোনে বলেন, এটা আমাদের বিরাট বিজয়। আমরা যা যা চেয়েছি, তা সবই পেয়েছি। বঙ্গোপসাগরে এক লাখ সাত হাজার বর্গকিলোমিটার চেয়ে আমরা পেয়েছি এক লাখ এগারো হাজার বর্গকিলোমিটার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, (এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের ক্ষেত্রে) ১৩০ নটিক্যাল মাইলে যে ছেদবিন্দু ছিল, সেক্ষেত্রে দুইশ' নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত গমন সুবিধা পেয়েছি। সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে ঘিরে ২১৫ ডিগ্রি এ্যাঙ্গেলে দুইশ' নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বাংলাদেশ সমুদ্রসীমার অধিকার পেয়েছে বলে জানান তিনি। সমুদ্রসীমা নিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সালিশ নিত্তি করে এ রায় দেন জার্মানির হামবুর্গের ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দি ল অব দি সির (আইটিএলওএস) বিচারক হোসে লুই জেসাস। ট্রাইব্যুনালের দেয়া ১৫১ পৃষ্ঠার এ রায় চূড়ান্ত এবং এর বিরুদ্ধে আপিলের কোনো সুযোগ নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আদালত সমদূরত্বের ভিত্তিতে ন্যায্যতাভিত্তিক সমাধান দিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, এ মামলার নিত্তি হয়েছে দুই বছরের মধ্যে যেমনটি সমুদ্রসীমা বিরোধ বিষয়ক অন্য কোনো মামলার ক্ষেত্রে হয়নি। সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিত্তিতে ২০০৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর সমঝোতার ভিত্তিতে আইটিএলওএসে নিত্তির জন্য যায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। সমুদ্রসীমা নির্ধারণে বাংলাদেশ ন্যায্যতাভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণের পক্ষে হলেও মিয়ানমার এই ক্ষেত্রে সমদূরত্ব পদ্ধতি অনুসরণের পক্ষপাতি ছিল। সমদূরত্ব পদ্ধতি অনুসরণ করে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ হলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হত, যদিও এই বঙ্গোপসাগরের মহীসোপান গঠনে বাংলাদেশের ভূমির অবদানই বেশি। বাংলাদেশ ট্রাইব্যুনালকে অনুরোধ করে দু'দেশের মধ্যে সমুদ্রসীমা ১৯৭৪ সালের দু'দেশের ঘোষিত সমুদ্রসীমা অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেয়া হোক, যাতে ২০০৮ সালেও দু'দেশ সম্মত ছিল।
ন্যায্যতাভিত্তিক সমাধান

নিত্তি
তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের দীর্ঘদিনের সীমানা বিরোধ ২১ বনাম এক ভোটে
হয় ট্রাইব্যুনালে, বলা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। বাংলাদেশের দুইশ' নটিক্যাল মাইলের এক্সক্লুসিভ জোন এবং মহীসোপান-পরবর্তী দুইশ' নটিক্যাল মাইলের দাবিকে রায়ে বৈধতা দেয়া হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দাবি এখন স্বীকৃত এবং নিশ্চিত। ওই সীমানার মৎস্য সম্পদসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদে বাংলাদেশের তর্কাতীত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো। দীপু মনি বলেন, এর ফলে এখন বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ এগুনো যাবে।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ রায়ের মাধ্যমে তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার দীর্ঘ দিনের অমীমাংসিত সীমানা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হলো। দীর্ঘ ৩৮ বছর যাবত চলে আসা দ্বীপাক্ষিক আলোচনায় কোনো ফলপ্রসূ সমাধান না পাওয়ায় বাংলাদেশ ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের বিপক্ষে আলোচ্য আইনি কার্যক্রমের সূচনা করে। তবে এ বিজয় দু'দেশেরই মন্তব্য করে জার্মানিতে অবস্থানরত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক আইনের মধ্য দিয়ে সমাধান হলো। আইনি প্রক্রিয়ায় এ সমস্যার সমাধানে মিয়ানমারের সম্মতি এবং ট্রাইব্যুনালের রায় মেনে নেয়াকে আমি স্যালুট জানাই।
মিয়ানমারের দাবি অনুযায়ী, দেশটির সমুদ্রসীমা সরাসরি বাংলাদেশের উপকূলরেখা দিয়ে যায়। যার ফলে বাংলাদেশের সীমা কমে হয়ে যায় ১৩০ নটিক্যাল মাইল, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যা হওয়ার কথা দুইশ' নটিক্যাল মাইল। এছাড়া মিয়ানমার বলেছিল, মহীসোপান-পরবর্তী দুইশ' নটিক্যাল মাইল সীমার রায় দেয়ার এখতিয়ার ট্রাইব্যুনালের নেই। এছাড়া সেন্টমার্টিন্স দ্বীপকে ছয় নটিক্যাল মাইল আঞ্চলিক সমুদ্র দেয়ার প্রস্তাব করে মিয়ানমার। ট্রাইব্যুনাল এ সব যুক্তিই বাতিল করে। মহীসোপান-পরবর্তী দুইশ' নটিক্যাল মাইল সীমার সমাধান করে ট্রাইব্যুনালের গতকাল বুধবার দেয়া রায়টি এ ধরনের সীমা বিষয়ে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়।

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:৫০
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গল্প: অপেক্ষা (১ম পর্ব)

লিখেছেন শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৭

ফকির আবদুল হাই সাহেবের সাথে পরিচয় হয় যখন আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি তখন। খুবই আধ্যাত্মিক আর রহস্যময় মানুষ। পেশায় একজন অধ্যাপক। অধ্যাপনা ছেড়ে আধ্যাত্মিকতা করেন, ফকির নামটি তার নিজস্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেন বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৮

কেন বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার.....

হোয়াটসঅ্যাপে আমাদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক ১০ জনের একটা গ্রুপ আছে। আমরা বেশীরভাগ সময়ই সমসাময়ীক বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। গত তিনদিনের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো বিএনপির... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের মডেল মসজিদ প্রকল্প: রাজনীতি, প্রতারণা ও সমাজের প্রতিচ্ছবি

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:২৪


২০১৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার সরকার একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেয়। ইসলামপন্থীদের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে তারা ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগানোর পথ বেছে নেয়। ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনা সরকারকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মনের অসুখ

লিখেছেন দানবিক রাক্ষস, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:১৮

আমার মনে অসুখ ধরেছে
নদীর ওপারে কাশফুল ফুটেছে,
কলাহলের মাঝে একলা আমি,
নিরজন রাতে স্বপ্নের আত্মহুতি,

স্মৃতির জোয়ের আবেগী আমি,
যেথায় শুধু তুমি আর আমি!

চোখে আমার ছানি পড়েছে,
অস্পষ্ট এখন সবই লাগে,
কোমাতে এখন স্বপ্ন,
যা দেখেছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি সন্তুষ্ট না

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:০২




নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জানার জন্য বিএনপি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সংগে বৈঠক করে বলেছে ডিসেম্বর নির্বাচনের কাট অফ সময়। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না দেওয়ায় অসন্তুষ্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×