প্রিয় সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীরা,
আসসালামু আলাইকুম। শুভ কোয়ান্টাম বর্ষায়ন।
কোয়ান্টামের ২০ তম বছরের শুভলগ্নে আপনারা সবাই বর্ষায়নের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। শোকর আলহামদুলিল্লাহ! প্রভুকে ধন্যবাদ। ২০১১ অর্থাৎ ১৯ তম বছর ছিলো কোয়ান্টামের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ও ঘটনাবহুল বছর।
বছরের সূর্যোদয় হয়েছিলো পার্কে পার্কে সুখী জীবনের মেডিটেশন দিয়ে। তারপর সুখী জীবনের মেডিটেশনের ঢেউ লাগে লাখো লাখো ঘরে। বৈশাখের প্রভাতে বর্ষবরণও শুরু হয় মেডিটেশনে সবার কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে। জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত হয় যেকোনো মানদন্ডে পৃথিবীর সবচেয়ে বর্ণাঢ্য কোর্স। রমজানে রোজাদারদের ঘরে ঘরে ধ্বনিত হয় 'হে মানুষ শোনো' সিডির মর্মস্পর্শী দোয়ার অনুরণন। লামার কোয়ান্টামমে নির্মিত হয় নিরাময়ের বিশেষ মেডিটেশনের জন্যে আরোগ্যশালা। ডিসেম্বরে শুরু হয় তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তিদক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সুদূরপ্রসারী আইসিটি কার্যক্রম।
আজকের দেশব্যাপী কোয়ান্টাম উচ্ছ্বাসের সূচনা হয়েছিলো ১৯৯৩ সালের ১লা জানুয়ারি শিথিলায়ন ক্যাসেটের প্রকাশনার মাধ্যমে। আমরা শুরু করেছিলাম শূন্য থেকে। প্রতিকূলতার কোনো অভাব ছিলো না। কিন্তু আমরা আমাদের বিশ্বাসে অটল ছিলাম।
আমরা বিশ্বাস করতাম, একজন মানুষ ৭৫ ভাগ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন কোনো ওষুধ ছাড়াই। কারণ এ রোগগুলো হলো মনোদৈহিক। দেহের রোগ ওষুধে ভালো হতে পারে। কিন্তু মনোদৈহিক রোগ নিরাময়ে ওষুধের কোনো প্রয়োজন নেই। মনের জট খুলে গেলে এ রোগগুলো এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে। আমরা যা সত্য বলে জেনেছিলাম, তা অন্যের কাছে পৌঁছে দেয়াকে পবিত্র দায়িত্ব বলে বিশ্বাস করেছিলাম।
আমরা বলেছিলাম কোর্সে আসুন ভালো হয়ে যাবেন। কোর্সে এসে বসে বসে আলোচনা শুনতে শুনতে আর মেডিটেশন করতে করতেই মনের ভেতরে জট খুলে গেছে। বহু বছরের রোগ যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে সুস্থ দেহ আর প্রশান্ত মন নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন তারা।
আমরা বিশ্বাস করতাম অধিকাংশ সফল মানুষই বংশ পরিচয় নয়, সফল হয়েছেন মহান হয়েছেন নিজের কর্মে, নিজের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে। নিজের স্বপ্নের সাথে হাজারো মানুষের স্বপ্নকে জড়িয়ে নিয়ে। শূন্য থেকেই তারা পূর্ণতার পথে এগিয়ে গেছেন। আমরা বলেছিলাম, আপনিও আসুন আপনিও পারবেন। তারা এসেছেন, তারা পেরেছেন। সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে গেছেন অনেকেই।
আমরা বলেছিলাম, শুধু নিজে ভালো থাকলে হবে না। অন্যকে ভালো রাখার জন্যে কাজ করতে হবে। তাতে আপনি আরো বেশি ভালো থাকবেন। এক পবিত্র দায়িত্ব মনে করে আপনারা কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের মতো আন্তর্জাতিক মানের কাজ সম্পাদিত হয়েছে- ৪ লাখ মানুষ পেয়েছে নতুন প্রাণ। মাটির ব্যাংক আর হিলিংয়ে উপকৃত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। ১৯ বছরে সম্পন্ন হয়েছে কোয়ান্টাম মেথড-এর ৩৩৮টি কোর্স।
আজকে কোয়ান্টামের বাণীকে গ্রহণ করে লাখো মানুষ দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছেন অনন্য মানুষের পথে। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মতো সৃষ্টির সেবায় উৎসর্গীকৃত এই অনন্য সংগঠন এখন পরিণত হয়েছে লাখো লাখো মানুষের ভরসাস্থলে। আর এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে পরম করুণাময়ের অনুগ্রহে আর আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা আর সঙ্ঘবদ্ধ প্রচেষ্টায়।
সাফল্য আনন্দ ও শুকরিয়ার এই মুহূর্তে আপনারা আমার, আপনাদের মা-জী ও ফাউন্ডেশনের কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন। আসলে আজকের কোয়ান্টাম, আজকের ফাউন্ডেশন আপনাদের নিরলস পরিশ্রম ও ত্যাগেরই ফসল। আপনারা আবারো আমার অন্তর নিংড়ানো কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন।
পরম করুণাময়ের কাছে শুধু প্রার্থনা তিনি যেন আমাদের কাজকে সৎকর্ম হিসেবে কবুল করেন। আমাদের লাখো পরিবার যেন সবসময় তাঁর রহমতের ছায়ায় থাকে। নতুন বছরে আমাদের সবার মধ্যেই যেন নেতিবাচকতার বৃত্ত ভাঙার সাহস ও সামর্থ্য সৃষ্টি হয়।
২০ তম বছরে প্রতিটি কোর্স যেন অংশগ্রহণ, নিরাময় ও সাফল্যের ক্ষেত্রে নতুন নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে। আমরা যেন সবাই নতুন ইতিহাসের অংশ হই। আমাদের দেশ যেন সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে যায়। সারা পৃথিবীর মানুষ যেন আলোর সন্ধান পেতে শুরু করে।
স্রষ্টা আমাদের সহায় হোন।
খোদা হাফেজ।
http://quantummethod.org.bd
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:১৮