গভীর ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি প্রিয় স্বদেশ।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়ার মতো এক ধ্বংসস্তুপ দেখতে চায়। সম্প্রতি বাংলাদেশকে ঘিরে তাদের তৎপরতা উদ্বেগজনক। মাত্র ক'দিন আগে চীন সফর থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টতই মায়ানমারের আরাকান প্রদেশ বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া নিয়ে মার্কিন এক সিনেটরের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন, এদের কাজ হলো শান্তিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে সংঘাত ও সংঘর্ষ বাধানো। এই অঞ্চলেও তাই করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ অন্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে। আমেরিকা শেখ হাসিনার মনোভাব জানে। প্রকাশ্যে মার্কিন প্রশাসন বিরোধী এমন বক্তব্য ভালোভাবে নেয়নি। পাল্টা একটা মেসেজ দেওয়া দরকার ছিল।
মাইনরিটি পরিচয়ে এতো নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে সরাসরি ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে একটি দেশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা নজীরবিহীন ঘটনা। তাও গণমাধ্যমের সামনে। সংখ্যালঘুরা নানা সময় বিপন্ন বোধ করলেও দেশে পরিস্থিতি এত নাজুক হয়নি যে তাদের রোজ ভিটেমাটি ছাড়া করা হচ্ছে। কেউ সাম্প্রদায়িক সংঘাতে খুন হচ্ছে। যেখানে পার্শ্ববর্তী ভারতেই গরু খাওয়া, জয় শ্রী রাম এসব ঠুনকো বিষয়ে পিটিয়ে সংখ্যালঘু মুসলমানের মারছে। সেখানে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। বুঝাই যাচ্ছে, এটা এরেঞ্জড। গভীর ষড়যন্ত্রের পূর্বাভাস। একই সঙ্গে লক্ষ্য করবার বিষয় ট্রাম্পের রিএকশন। স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ নিয়ে ঔদ্ধত্য। ট্রাম্পের দেশেই তো মানুষ চরম বর্ণবাদের শিকার। ধর্মীয় স্বাধীনতা সংকুচিত। চারজন সিনেটর পর্যন্ত সেদিন ট্রাম্পের বর্ণবাদী আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
একই সঙ্গে ভারত চীন দুই শক্তির সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক সুসম্পর্ক রক্ষা করা বেশ কঠিন। শেখ হাসিনা ব্যতিক্রম। তিনি পারছিলেন। চায়না বিনিয়োগে সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্টের বিরোধীতায় শেষ পর্যন্ত হয়নি। আরো নানা ভূ-কৌশলগত ও ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে। আছে নানা জটিল কূটনৈতিক হিসাব নিকাশ।
রাইজিং পাওয়ার চীন ভারতকে পর্যবেক্ষণে রাখতে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহারের মার্কিন খায়েশ বহু পুরনো। তারা অজুহাত খুঁজছে। ছুতো দরকার। জঙ্গি গোষ্ঠীর হুজুগ তোলে একটি দেশ তছনছ করা খুব মোক্ষম মার্কিন অস্ত্র ও কৌশল। সকল ধর্ম মত ও পথের দেশপ্রেমিক জনগণকে সাবধান হওয়া জরুরী। খুবই জরুরী।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:০৭