মাওলানা আহমদ সাহেব রহ.। কাসেম নানুতুভি রহ. এর সুযোগ্য সন্তান। তিনি তখন দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম।
সরকারের পক্ষ থেকে হযরত মাওলানা আহমাদ সাহেব রহ.-এর নামে মাদরাসায় এ প্রস্তাব আসে যে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আপনার জন্য এক শ একরের একটি সবুজ শ্যামল ভূখণ্ড উপহার হিসাবে পেশ করা হচ্ছে।
তখন রাষ্ট্রীয় ওই ফরমানের ওপর চিন্তা-ভাবনা করার জন্য একটি গোপন পরামর্শসভা আহ্বান করা হয়। অধমকেও সেখানে ডাকা হয়। উপহারটি গ্রহণ করা হবে কি, হবে না, এর ওপর দীর্ঘ সময় আলাপ-আলোচনা হয়। অবশেষে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, উপহারটি গ্রহণ করতে হলে মরহুম হাফেয সাহেবকে অবশ্যই মাদরাসার ইহতিমামের সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে।
কিন্তু রাষ্ট্রের যেই জমিদারির প্রস্তাবের ভেতর অধস্তন কয়েক পুরুষের সচ্ছল জীবনযাপনের নিশ্চয়তা সুপ্ত ছিল, হযরত মাওলানা আহমদ সাহেব এক ঠুকরেই তা পায়ের নিচে ফেলে দিলেন। সাইয়্যেদুনা ইমাম কাসেম নানুতবি রহ.-এর সুযোগ্য উত্তরসূরির কাছে যেই প্রত্যাশা ছিল তার শতভাগ তিনি পূরণ করলেন। যদিও রাষ্ট্রের প্রস্তাবের উত্তরে ভদ্রোচিত জবাবই দেওয়া হয়েছিল।
...
এরচেয়েও বড় বিস্ময়ের বিষয় হলো, অধম সেই পরামর্শসভায় উপস্থিত ছিলাম বলেই ব্যাপারটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। নয়তো নির্ঘাত আমি সেটি সম্পর্কে অনবহিতই থেকে যেতাম। আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের ওই ঘটনা যদি সেসব লোকের জীবনে ঘটত, যারা স্রষ্টার চেয়ে তাঁর সৃষ্টির প্রশংসা প্রাপ্তির তৃষ্ণাই বেশি বোধ করেন, তা হলে আল্লাহ মা’লূম- ব্যাপারটির প্রচারের জন্য কত রকম উপায়-উপকরণ ব্যবহার করা হতো!
কিন্তু যতটুকু আমি জানি, যেসব লোকদের সামনে সমস্যার সমাধান চেয়ে ব্যাপারটি পেশ করা হয়েছিল, সেই অল্প কজন ব্যক্তির একান্ত সীমিত মহলের বাইরে অন্য কারও কানে ওই সংবাদ পৌঁছেনি যে, প্রস্তাব পেশকারীর পক্ষ থেকে কী প্রস্তাব এসেছে আর প্রত্যাখ্যানকারীর পক্ষ থেকে কোন জিনিস প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।”
-স্মৃতির দর্পণে দারুল উলূম দেওবন্দ
মাওলানা মানাযির আহসান গিলানি রহ.
পৃষ্ঠা : ১৭৫-১৭৬
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:১৯